ব্যাটারি-চালিত ইচ্ছা থেকে চারটি কবিতা
কবি জাহিদ সোহাগ বরাবরই ব্যতিক্রম চিন্তার মানুষ। তার সেই ব্যতিক্রমি চিন্তার ছাপ পড়ে কবিতায়ও। ‘অসুখের শিরোনাম’র পর এবার ‘ব্যাটারি-চালিত ইচ্ছা’র আত্মপ্রকাশ। চলমান সৃষ্টির বর্তমান উপস্থিতি এই কাব্যগ্রন্থ। এবারের বইমেলায় হাজির হচ্ছে ‘ব্যাটারি-চালিত ইচ্ছা’। বইটি থেকে চারটি কবিতা পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো-
বীজ
হাওয়া আসে ঘরে। ভেতরে একটি ঊনমানুষ। আমাদের দেখা
শেষ তারাটি, খুব ক্ষীণ, ক্ষীণতর হতে হতে, মিলিয়ে যাবে।
কত বিচিত্র জীবন। দোয়াত উল্টে গেলো।
এখন ঘর। শূন্য ঘর। শূন্য ঘর থেকে, ওই তারাটি দ্যাখো।
হাওয়া আসে ঘরে। ওপারে আকাশ, কলকব্জা খুলে খুলে পড়ছে।
বর্বর গতির ভেতর, ঘুরতে ঘুরতে, ওহ্ কী দুঃসহ, তাকে অচৈতন্য করে,
পৌঁছে দেয় ধূলিঝড়ের শৃঙ্খলায়
যেন
মানুষের চেতনা, তার ভেতরে, একে একে, পুঁতে গেছে,
ঊর্ধ্বমুখী, শূন্যের বীজ।
****
ভবিষ্যতের আগে
এর নিদান কোথাও নেই
চোখে মাত্র কটি পাতা রগড়ে
সবুজ হয়েছি শুধু—
আমাকে চিরহরিৎ ভেবে ছুঁড়ে দিও না
পাখিদের বংশপরম্পরা
পুষ্প-পতঙ্গের ডানা
নইলে
বালু দিয়ে ভরে দিতাম
দৃশ্য-যন্ত্রণার ভয়ে
****
অন্যদিন
আমার হাড়ের মধ্যে, দ্যাখো, রোদ এলো
এখনই উড়াল দেবে ফের—
তার পাখনায় লাগুক বাতাস—এই আমি চাই;
সে-ও ওই নীল থেকে নিয়ে নিক খড়কুটো;
তাকে বলো, পক্ষিণীকে পাহারা দিক এ বেলা; যদি
তার ডিম ফেটে আসে ঘরভর্তি কিচিরমিচির।
অনেক তো হলো মেঘের ভেতর হারিয়ে ফেলা প্রেমিকার জন্য;
তোমার হাড়ের শিশি খুলে এইবার
ওই পক্ষিণীর হলুদ গ্রীবায় জল দাও।
****
শাড়ি
তক্কে তক্কে আছি
শাড়ি তার কোথায় দেয় রোদ্দুরে
দিলেই হাওয়া
কে টেনে নেয় ফুসলিয়ে!
বাকি আছে ওই একখানাই
ওটাও যদি বা হাত করি
চাইতে এলেই ছেনে দেবো
বুক জুড়ে নীল ওইটুকুই
যদি না সে দেয় ধরা
একা একাই ভাঁজ খুলে
শুঁকে নেবো নীল ওইটুকুই
এসইউ/আরআইপি