মানুষ হবো আগে থেকে পাঁচটি ছড়া
পলিয়ার ওয়াহিদের ছড়ার বই ‘মানুষ হবো আগে’ প্রকাশ হচ্ছে আসছে বইমেলায়। বইটি থেকে পাঁচটি ছড়া পাঠকের কাছে তুলে ধরা হলো-
প্রজাপতি
প্রজাপতি প্রজাপতি রঙিন ডানা মেলে
খেলার সাথী রেখে তুমি কোথায় চলে গেলে?
কত্তো করে তোমায় বলি দাও না দুটো ডানা
তোমার মতো উড়তে বুঝি আমার আছে মানা
ফুলের বনে উড়ে উড়ে কাটে তোমার বেলা
সাথী ছাড়া কেমনে বলো জমবে মজার খেলা?
বলতে পারো কোথায় পেলে এমন রূপের বাহার?
প্রজাপতি হেসে বলে— এই ধরণী যাহার।
****
বৃষ্টি মেয়ে মিষ্টি মেয়ে
বৃষ্টি মেয়ে মিষ্টি মেয়ে তোমার বাড়ি কোথায়?
মেঘের বাড়ি আকাশ ছাড়ি যখন আছি যেথায়।
বর্ষা মেয়ে ফর্সা মেয়ে সৃষ্টি তোমার কোথায়?
বাতাস গাড়ী ব্যথা ভারি কাঁদি যখন যেথায়।
বাদল মেয়ে কাজল মেয়ে আসবে আমার সাথে?
কেন জানি অভিমানী কাঁদো যে দিন রাতে।
ঢলক মেয়ে ধবল মেয়ে আসলে তুমি কাছে
মন আকাশে ভুবন হাসে সবুজ ঘাসে গাছে।
সবার মুখে হাসি ফুঁকে আসলে যখন আজ
ময়ূর নাচে পিরান বাঁচে তুমিই সেরা নাজ।
ব্যাঙের ডাকে আকাশ পাকে সৃষ্টি হলো গান
শোকর করি হৃদয় ভরি মহান বিধির দান।
****
ঈদের ছড়া
এক
চাঁদ উঠেছে চাঁদ
সুখ থেকে আজ
কেউ যাবে না বাদ।
দুই
ঈদ এসেছে ঈদ
হারিয়ে যাবে আজ
সকল চোখের নিদ।
তিন
কারো ঘরে কোরমা পোলাও
কারো ঘরে ফিন্নি
কারো দ্যাখো— ঘরবাড়ি নাই
চাল ডাল ও গিন্নি!
****
সুন্দরবন
এই কবিতা ছড়া হলেও আমি তো ভাই কবি
ঘুম আসে না চোখে আমার সুন্দরবনের ছবি।
সে আমাকে ঘুমের ঘোরে ডেকে বলে শোন্!
আমার ভেতর বাঘের বাসা কয়টা আছে গোন্!
গোলপাতারই শরীর আমার সুন্দরীটা মাথা
তোদের কাছে হয়ে আছি মস্ত একটা ছাতা।
পেটে আমার মাছের বাসা চোখে ঝরায় মধু
বাংলাদেশের কাছে আমি সবুজ একটা বধূ।
****
মধুর নদী
একটি নদীর কথা আমি ভাবি সারাক্ষণ
সকাল বিকাল তারই সাথে জমতো আলাপন।
যখন তখন যেতাম ছুটে সেই নদীটার পাড়
সেই নদীটার কাছে এখন হয় না যাওয়া আর।
প্রিয় নদী বুকের মাঝে তুলছে নতুন ঢেউ
নদীর মতো আমার আপন আর ছিলো না কেউ।
আমার মতো নদী পাগল ছিলো আরেক খোকা
মহাকবি মধুসূদন দুরন্ত একরোখা।
খুঁজে ফিরি মধুর চোখে প্রিয় নদীর জল
প্রিয় কবির স্মৃতিগুলো বুকেতে খলবল
অক্ষর দিয়ে শব্দ গাঁথি বানাই সরস কাব্য
আয়রে আমার মধুসূদন— হায়রে কপোতাক্ষ!
এসইউ/পিআর