ভিডিও EN
  1. Home/
  2. একুশে বইমেলা

ভালো মানুষ হওয়াটাই জরুরি

প্রকাশিত: ০৬:০৮ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

যারা নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়েন, তাদের কছে খুব পরিচিত একটি নাম সোহেল নওরোজ। সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের পাতায় তার নাম থাকবেই। কী গল্প, কী প্রবন্ধ- সোহেল নওরোজ সবক্ষেত্রেই বিস্তার করতে শুরু করেছেন বেশ ঠান্ডা মাথায়। লেখালেখিটাকে নেশার পর্যায়ে নিয়ে গেলেও ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে সচেতন এই মেধাবী লেখক। বর্তমানে সমবায় কর্মকর্তা (বিসিএস) হিসেবে কর্মরত আছেন বিভাগীয় কার্যালয়, খুলনায়। তারও আগে একবছর বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারি পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এবং তারও আগে এক বছর বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বয়স ত্রিশের কোঠা পার না হতেই এতখানি যার অভিজ্ঞতা তিনি লেখালেখিতেই বুঁদ হয়ে থাকতে ভালোবাসেন। তবে অবশ্যই তা কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বপালনের পাশাপাশি। এবারের একুশে বইমেলায় এসেছে তার প্রথম বই `মেঘবালকের চিঠি`। লেখালেখি, প্রথম বই নিয়ে জাগোনিউজের মুখোমুখি হয়েছেন এই প্রতিশ্রুতিশীল লেখক। লিখেছেন হাবীবাহ্ নাসরীন-

যেভাবে বেড়ে ওঠা
বইয়ের গন্ধ শুঁকে শুঁকেই বেড়ে উঠেছেন সোহেল নওরোজ। বড়মামা বাংলাসাহিত্যের ছাত্র ছিলেন। আর তার ঘরে ছিলো রাজ্যের বই। সেই বইয়ের ভীরেই খেই হারিয়েছিলেন সোহেল। সেই শৈশবে কিছু না বুঝেই পড়ে ফেলেছিলেন কপালকুন্ডলা, ন হন্যতে`র মতো বই! লেখালেখির শুরুটা হয়েছিল চিঠি লিখতে গিয়ে। না। কোনো বালিকার কাছে প্রেমপত্র নয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বড়মামার কাছে চিঠি লিখতে গিয়েই লেখালেখির শুরু তার। প্রথম লেখা ছাপা হয়েছিল ইরানি দূতাবাস থেকে প্রকাশিত `কিশোর নিউজ লেটার` নামক একটি ম্যাগাজিনে। পৃথিবীর অধিকাংশ লেখকের মতো তার প্রথম লেখাটিও ছিল একটি কবিতা। গ্রাম এবং প্রকৃতিকে নিয়ে লেখা সেই কবিতার নাম ভুলে গেছেন সোহেল নওরোজ নিজেই!

কী করে জড়িয়ে গেলেন
মূলত লেখালেখিকে গুরুত্বসহকারে নেন সম্মান দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন সময়ে। নিজ ক্যাম্পাস বাকৃবিতে যে ক`টি পত্রিকা যেতো, সেসব পত্রিকায় লেখা পাঠাতে শুরু করলেন। দেশ, অর্থনীতি, সমাজের নানা অসংগতি নিয়ে ছোট ছোট কলাম লিখছিলেন বেশ। তারপর একদিন তার মনে হলো, গল্পও তো লিখতে পারি! যেই ভাবা সেই কাজ। লিখে ফেললেন গল্প। কিন্তু প্রকাশ করবেন কোথায় তা নিয়ে একটু দ্বিধায় ভুগছিলেন। এরপর অনেকটা পুরস্কারের লোভেই একটি জাতীয় দৈনিক আয়োজিত প্রতিযোতায় পাঠিয়ে দিলেন নিজের লেখা প্রথম গল্পটি। নিরাশ হতে হয়নি সোহেল নওরোজকে, প্রথমবারই সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল তার লেখা গল্পটি। পুরস্কারের লোভ এখনও তার আছে বৈকি, প্রায়ই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়  সেরা গল্পকারের পুরস্কার পেতে দেখা যায় তাকে!

প্রথম বই
এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে সোহেল নওরোজের প্রথম বই `মেঘবালকের চিঠি`। বইটিতে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন সময়ে লেখা পনেরোটি গল্প। বইপ্রকাশের ইচ্ছাটা কী করে এলো? সোহেলের মুখ থেকেই শোনা যাক, `আসলে সব লেখকরেই সুপ্ত একটা ইচ্ছা থাকে বই প্রকাশ করার। সেই ইচ্ছা থেকেই এবং নিজের লেখাগুলোকে সংরক্ষিত রাখতেই বইয়ের প্রকাশ। পাঠকের হাতে নিজের প্রিয় লেখাগুলোকে মলাটবন্দি করে তুলে দেয়ার একটা প্রচেষ্টাও বলা যায়।`

ভবিষ্যৎ ভাবনা
লেখার বিষয় হিসেবে বরাবরই দেশ, প্রকৃতি, কৃষি, নদী, খেলাধুলা, যাপিত জীবনকেই প্রাধান্য দিয়েছেন সোহেল নওরোজ। গল্প, উপন্যাস লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন গবেষণাধর্মী কাজ করার ইচ্ছা আছে তার। লেখালেখি, কর্মজীবন, ব্যক্তিজীবন- সবক্ষেত্রেই সততাকে পুঁজি করে বেঁচে থাকতে চান তিনি। ভালো লেখক হওয়ার চেয়ে ভালো মানুষ হয়ে বাঁচাটাই যে জরুরি!

এইচএন/এমএস