প্রথম বই প্রকাশ: অতুলনীয় ও অনন্য অনুভূতি
গোলাম রববানী
আলহামদুলিল্লাহ। অনুভূতিটা ঠিক এমন, দীর্ঘদিন পর কোনো মায়ের সন্তান মায়ের কাছে ফিরে পাবার মতো। প্রথম বই: অনুভূতিটা অতুলনীয় ও অনন্য। বইয়ের কবিতাগুলোও প্রেমের এবং ভালোবাসার। ভাবনাটা ঠিক বিচিত্র রকমের। ঘোরের মধ্যে থেকেই লেখা। নির্ঘুম রাতে কবিতাগুলোর জন্ম। যার সাক্ষী আমার সাবেক সহকর্মী তৌহিদ আহমেদ চৌধুরী। বইটি প্রকাশে মনের মধ্যে অন্যরকম তোলপাড় চলছে। বুকটা অনুরণিত এবং শিহরিত হচ্ছে। কতটা যে ভালো লাগার, আনন্দের এবং উৎকণ্ঠার বোঝানো মুশকিল। প্রথম বই প্রকাশ বলে কথা; উত্তেজনা বা রোমাঞ্চকর হওয়াটা বোধহয় অস্বাভাবিক কিছু নয়। বুনন প্রকাশক ও সম্পাদক খালেদ উদদীন ভাই ফোন করে জানালেন বইটি হাতে পেয়ে তিনি দারুণভাবে উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত। তিনি বললেন, ‘বইটি দারুণ হয়েছে’।
তবে আনন্দের বিষয় বইটিতে ভূমিকা লিখেছেন আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ও ভালোবাসার প্রাণপ্রিয় কবি, লেখক, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক রাজকুমার শেখ এবং কবি, লেখক ও সম্পাদক হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাদের প্রতি আমার আজন্ম কৃতজ্ঞতা। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় চিত্রশিল্পী নির্ঝর নৈঃশব্দ্য। তার প্রতিও আমি চিরকৃতজ্ঞ।
বইতে ১০০টি কবিতা রয়েছে। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি শুরু করেছিলাম কবিতাগুলো লেখা। যে কবিতাগুলো এক টানেই লিখে শেষ করে ফেলেছিলাম একই বছরে। বলতে পারেন বইয়ের কবিতাগুলো আমার ৬-৭ মাসের ফসল। ‘মেঘনার মেয়ে’ আমার সিরিজ কবিতা। কবিতাগুলো বাস্তবতার: যেন কাউকে সামনে বসিয়ে তাকে দেখে দেখেই লেখা। কখনো তার অনুপস্থিতিতে লেখা। বাস্তবতার চিত্রটাই বেশি, তবে কল্পনার মাত্রাও কম নয়। প্রতিটি কবিতাই ভালোবাসার। জমপেশ স্বাদের ও মিশ্র অনুভূতির ফসল।
বইটি পড়ে যদি পাঠকের ভালো লাগে, সেখানেই আমার সার্থকতা। সেই অপেক্ষায়। কাব্যগ্রন্থটি সিলেটের বুনন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ‘মেঘনার মেয়ে’ কাব্যগ্রন্থে প্রকাশ পেয়েছে ভালোবাসার গভীর অনুভূতির কথা, আবেগ, কাছে পাওয়া-না পাওয়ার কথা, দুর্দান্ত এক আকর্ষণের কথা, অস্থিরতার কথা, বেদনা ও যাতনার কথা, ভয়-সংশয়ের কথা, অধীর আকুলতা ও ব্যাকুলতার কথা, একবুক যন্ত্রণার কথা, প্রেমে পড়লে কতটা ক্ষ্যাপাটে ও পাগলাটে হওয়া যায় তার কথা, সম্মান ও মর্যাদার কথা, আরও অনেক কিছু। পাঠক কবিতাগুলো পাঠ করে নিশ্চয়ই মুগ্ধ হতে পারবেন এমনটাই আমি আশাবাদী।
‘মেঘনার মেয়ে’ আমার প্রথম কবিতার বই। বইটির মূল্য ৩০০ টাকা। যা অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৫ উপলক্ষেই প্রকাশিত হয়েছে। বইটি এখনো হাতে পাইনি। হাতে পেলে, ছুঁতে পারলে অন্যরকম রোমান্স ও অনুভূতি হবে। অনুভূতিটা হয়তো পৃথিবীর কোনো ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। অতি সাধারণ একজন শিক্ষক আমি। কৃষক ও ক্ষুদ্রব্যবসায়ীর সন্তান হিসেবে একটি বই বের করতে পারাটা আমার কাছে খুবই আনন্দের; প্রাপ্তিরও বটে। এটি ঈদের সমান অথবা কোনো দম্পতির বিয়ের বহুবছর পর সন্তান জন্ম দেওয়ার মতো আনন্দের।
আমার আব্বা ও মায়ের অনুপ্রেরণা এবং পাঠকদের ভালোবাসায় বই প্রকাশের তাড়না থেকে বই প্রকাশ। পাঠকদের ভালোবাসা পেলে এমনকি লেখার মাধ্যমে যদি তাদের হৃদয় ছুঁতে পারি, তবে অনেক দূরে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাটা আরও বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করি। প্রায়ই শুনি কবিতার পাঠক কম কিন্তু সেটা আমার মনে হয় না। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীব্যাপী কবিতার পাঠক এখনো তুঙ্গে। কবিতা চিরন্তন, কবিতা সত্য, কবিতা সার্বজনীন। বিশ্বাস করুন আর না করুন, কবিতাকে ভালোবাসে না এমন লোক পৃথিবীতে পাওয়া দুষ্কর। কবিতাকে সর্বস্তরের মানুষ ভালোবাসে।
‘মেঘনার মেয়ে’ কাব্যটি প্রকাশে অনেকের ভালোবাসা আমাকে ঋণী করেছে। সাংঘাতিকভাবেই ঋণী করেছে। তবে এ ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি বুনন প্রকাশনের মালিক কবি, লেখক, শিক্ষক, সম্পাদক ও প্রকাশক খালেদ উদদীন ভাইয়ের প্রতি। এই দুর্মূল্যের বাজারে যিনি একজন তরুণ লেখকের বই প্রকাশ করে ভালোবাসায় ও ঋণে আবদ্ধ করেছেন। তার প্রতি আমার অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
ভালোবাসা শক্তি, ভালোবাসা মুক্তি। ভালোবাসা আমার সম্পদ। ‘মেঘনার মেয়ে’ কাব্যগ্রন্থটিও ভালোবাসার ফসল। জয় হোক কবিতার, বিনষ্ট হোক সমস্ত নৈরাজ্য ও অন্যায়। বইটি প্রকাশনী, বইমেলার স্টল এবং রকমারি ডটকমে পাওয়া যাবে। আর কোথায় পাওয়া যাবে পরবর্তীতে জানানো হবে।
এসইউ/এএসএম