১৫ আগস্ট নিয়ে প্রথম বই ‘মুজিবের রক্ত লাল’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাযজ্ঞ নিয়ে লেখা প্রথম বই হচ্ছে ‘মুজিবের রক্ত লাল’। ‘চরমপত্র’ খ্যাত সাংবাদিক এম আর আখতার মুকুলের লেখা একটি অসামান্য বই। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় লন্ডন থেকে ১৯৭৬ সালে। এম আর আখতার মুকুল তখন জীবন-জীবিকার তাগিদে যুক্তরাজ্যে থাকতেন।
কীভাবে, কোন কোন দেশের সহায়তায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এ পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে; সেসব অজানা ঘটনার সাবলীল বর্ণনা আছে বইটিতে। বইটির ভেতরে এমন সব তথ্যের সমাবেশ ঘটিয়েছেন ১৯৭৬ সালে, যা সত্যিই বিস্ময়কর। তিনি অনন্য ঐতিহাসিক প্রামাণ্য বই ‘মুজিবের রক্ত লাল’ উপহার দিয়েছেন আমাদের।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর এম আর আখতার মুকুলের লেখা বইটিই তথ্যসমৃদ্ধ প্রথম বই। ফলে তিনিই পথিকৃৎ হয়ে রইলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশ-বিদেশে বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়াও ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। সে দুঃসময়ে তিনি দুঃসাহসিক কাজটি করেছেন। ‘মুজিবের রক্ত লাল’ প্রকাশ করে খুনি ও ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে দিয়েছেন।
এম আর আখতার মুকুল প্রথম প্রকাশের ভূমিকায় লিখেছিলেন, ‘বাংলাদেশের বাঙালি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস এবং একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্যকে বিনষ্ট করার জন্য বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহলের সমর্থনে এক সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের ফল হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন
‘মুজিবের রক্ত লাল’ প্রথম প্রকাশের দীর্ঘ ১৩ বছর পর ১৯৮৯ সালে ঢাকা থেকে পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত আকারে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করা হয়। এতে বহু গবেষণালব্ধ তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় কারা কোন ধরনের ভূমিকা পালন করেছে, তারও প্রামাণ্য তথ্যাদি সংযোজন করা হয়।
২০০৪ সালে এই লেখকের মৃত্যুর পর ২০১৪ সালে অনন্যা প্রকাশ বইটি আবার প্রকাশ করে। বইটি তিনশ পৃষ্ঠারও বেশি। সবশেষে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের ছবি যুক্ত করা হয়েছে। এর প্রতিটি পৃষ্ঠায় তিনি প্রচুর তথ্যের সমাবেশ ঘটিয়েছেন। বইয়ের প্রতিটি অধ্যায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ১৫ আগস্টের অজানা ইতিহাস জানতে বইটি পড়া খুবই জরুরি।
তথ্যসূত্র:
১. মুজিবের রক্ত লাল: ১৫ আগস্টের পর প্রথম বই, মনি হায়দার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, যুগান্তর
২. মুজিবের রক্ত লাল, এম আর আখতার মুকুল, ১৯৭৬, লন্ডন
৩. মুজিবের রক্ত লাল, এম আর আখতার মুকুল, ২০১৪, অনন্যা প্রকাশ, ঢাকা
এসইউ/এএসএম