বইয়ের জোগান অনুযায়ী বিক্রি কম: শফিক রিয়ান
শফিক রিয়ান একাধারে ফিচার লেখক, কবি ও ঔপন্যাসিক। তার পৈতৃক নিবাস কিশোরগঞ্জ হলেও জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকাতেই। ১৯৯৯ সালের ১ মার্চের বৃষ্টিস্নাত রাতে পিতা-মাতার কোল আলোকিত করে মিরপুরে তার জন্ম। সেদিন বজ্রপাতের আওয়াজে ঢাকা পড়েছিল তার কান্নার স্বর। প্রকৃতির সেই অলিখিত নিয়মই যেন তাকে পরিণত করেছে সদা হাস্যোজ্জ্বল এক মানুষে। শফিক রিয়ানের লেখাপড়ার সূচনা সেনাপল্লী হাই-স্কুল থেকে। এরপর বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ ঢাকা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অধ্যায়নরত।
তার প্রকাশিত বইসমূহ—উপন্যাস: আজ রাতে চাঁদ উঠবে না (২০২১), মেঘ বিষাদের দিন (২০২২)। কাব্যগ্রন্থ: বিধ্বস্ত নক্ষত্র (২০২২), নিষিদ্ধ করে দাও সূর্যাস্ত (২০২৩)। সম্প্রতি বইমেলা ও বই প্রকাশ সম্পর্কে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কবি ও কথাশিল্পী সালাহ উদ্দিন মাহমুদ—
জাগো নিউজ: আগামী বইমেলায় আপনার কয়টি বই প্রকাশিত হচ্ছে?
শফিক রিয়ান: আসন্ন অমর একুশে বইমেলায় আমার একটি উপন্যাস প্রকাশ হতে যাচ্ছে। উপন্যাসটি নাম ‘বিষাদের ছায়া’। এটি প্রকাশ করবে দুয়ার প্রকাশনী। ইতোমধ্যে প্রকাশনীর সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি বইমেলার প্রথমদিন থেকেই পাঠক বইটি হাতে পাবেন।
আরও পড়ুন: বই প্রকাশ কি কমে যাবে?
জাগো নিউজ: বাংলা একাডেমি আয়োজিত আগামী বইমেলা কেমন দেখতে চান?
শফিক রিয়ান: প্রতি বছরই বইমেলার আয়োজন নিয়ে প্রত্যাশা থাকে। বিশেষ করে স্টল বিন্যাস নিয়ে। যদিও বিগত মেলায় বইমেলার স্টল বিন্যাস চমকপ্রদ ছিল। এবারও সে প্রত্যাশা থাকবে। এছাড়া পাঠককে বইমেলায় টানতে বাংলা একাডেমির জোরালো প্রচার-প্রচারণা থাকতে হবে। যারা লেখকশ্রেণির; তারা বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারেন যে অনেক মানুষই বইমেলা শুরু ও শেষ দিন কবে, তা নিয়ে কনফিউশনে পড়ে যান।
জাগো নিউজ: আপনার দেখা বিগত বইমেলায় কোনো অসঙ্গতি চোখে পড়েছে?
শফিক রিয়ান: বিগত বইমেলায় তেমন কোনো অসঙ্গতি চোখে পড়েনি। তবে একটি বিষয় নিয়ে কথা না বললেই নয়—মেলা প্রাঙ্গণে বড় বড় খাবারের দোকান দেখে মাঝে মাঝে মনে হয়েছে এটি খাবারের মেলা। খাবারের দোকান থাকুক, তা পরিমিত। আর সেসব খাবারের যা দাম, তা আর বললাম না।
জাগো নিউজ: বইমেলায় বইয়ের বিক্রি বাড়ছে নাকি কমছে?
শফিক রিয়ান: পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিলে বই বিক্রি কমছে বলেই মনে হয়। এর কারণ, আয়োজিত বইমেলা ওই অর্থে পাঠককে টানতে পারে না। পাঠকরা নির্দিষ্ট সংখ্যক লেখকের বই কেনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেন। যার ফলে স্যোশাল মিডিয়ায় সরব নয় এমন লেখকের বই কিনতে আগ্রহ দেখায় না। ফলশ্রুতিতে বইয়ের জোগান অনুযায়ী বিক্রি কম হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর কথাসাহিত্য: আত্মজীবনী থেকে নয়াচীন
জাগো নিউজ: বইয়ের প্রচারণাকে কোন দৃষ্টিতে দেখেন?
শফিক রিয়ান: বইয়ের প্রচারণাকে আমি ইতিবাচকভাবেই দেখি। প্রকাশক যখন বই বের করেন, তখন তা নিয়ে কথা বলা নৈতিক দায়িত্ব হয়ে যায় লেখকের। লেখক হিসেবে যদি তা প্রচার না করি, তবে তা নিজের ব্যর্থতারই বহিঃপ্রকাশ। কেননা বইয়ের যত প্রচার হবে; বই তত বিক্রি হবে। পাঠক লেখককে তত চিনবেন। তাই বই নিয়ে প্রচারণার কোনো বিকল্প নেই।
জাগো নিউজ: বইমেলার পাঠকের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?
শফিক রিয়ান: সময়টা স্যোশাল মিডিয়ার দখলে। অধিকাংশ মানুষই বইপড়ার প্রতি অনাগ্রহী। অনেকে বইমেলায় গেলেও বই না কিনে ছবি তুলে চলে আসেন। আর সে ছবি ফেসবুকে ছাড়েন। তাই পাঠকদের প্রতি পরামর্শ থাকবে, ছবি তোলা হোক, আড্ডা হোক, সেইসাথে কমপক্ষে একটি বই যেন কিনে বাড়ি ফেরা হয়।
এসইউ/জেআইএম