লেখায় জীবনের গল্প বলতে চান এম মিরাজ হোসেন
গত একুশে বইমেলায় ‘আপন নামা’ বইটি নিয়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হলে পাঠকমহলে কৌতূহল জেগে ওঠে বই এবং লেখক সম্পর্কে। বইটি লিখেছেন এম মিরাজ হোসেন। তিনি মূলত একজন ব্যবসায়ী। কাজের ফাঁকে লেখালেখি করেন। ‘আপন নামা’ তার দ্বিতীয় বই। ততদিনে তার বইটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান নওরোজ কিতাবিস্তানের সর্বোচ্চ বিক্রিত বই এবং বইমেলার অন্যতম সেরা বইয়ের তকমা পেয়ে গেছে। বেশ কিছু জাতীয় দৈনিক এবং টেলিভিশন চ্যানেল এ খবর প্রচার করেছে। নিতান্তই একজন অপেশাদার লেখকের জন্য এটি নিঃসন্দেহে অনেক বড় অর্জন।
তার লেখা চতুর্থ বই ‘তবু ফুল ফুটুক’ এবারের একুশে বইমেলা এবং অনলাইন বুকশপে বিক্রি হচ্ছে। পাঠকদের কৌতূহল মেটাতে তার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে অনেক তথ্য জানা গেল। এম মিরাজ হোসেন বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। শুধু ব্যবসাই নয়, তিনি বিভিন্ন দেশি এবং আন্তর্জাতিক সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ভীষণ ব্যস্ততার মাঝেও ফুসরত পেলেই বসে যান লেখালেখি করতে।
প্রথমেই লেখক এম মিরাজ হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলো সদ্য প্রকাশিত উপন্যাস ‘তবু ফুল ফুটুক’ সম্পর্কে। বইটি সম্পর্কে লেখক জানালেন, ‘প্রত্যন্ত একটি গ্রাম রসুলপুরের একটি পরিবারের সাথে ঘটতে থাকা অদ্ভুত এক গল্পকথা ‘তবু ফুল ফুটুক’। এই গল্পকথায় উঠে এসেছে ভালোবাসা ও সংসারের টানাপোড়েন। আমার চতুর্থ উপন্যাস ‘তবু ফুল ফুটুক’ সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে নির্মিত।’
আরও পড়ুন: কেমন হবে ২০২৩ সালের বইমেলা?
তার প্রতিটি বই ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার। প্রথম বই ‘হাওয়ায় ভেসে হাজার মাইল’ ছিল ভ্রমণকাহিনি। দ্বিতীয় বই ‘আপন নামা’ আত্মজীবনীমূলক। তৃতীয় বই ‘ব্যাখ্যাতীত’ ছিল রহস্যময় কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তার প্রতিটি বই নিজের জীবন থেকে লেখা। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি কখনো গল্প তৈরি করি না। প্রতিটি মানুষের জীবনেই কিছু বিচিত্র ঘটনা থাকে। আমি কেবল আমার দেখা-জানা সেসব ঘটনাগুলোকে লেখায় প্রকাশ করি। আমার লেখা সবগুলো বইই আমার জীবনের সাথে কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত। হয় সেগুলো আমার সাথে ঘটেছে, নয়তো আমি আমার খুব কাছের কারো কাছ থেকে সেটা জেনেছি।’
এম মিরাজ হোসেন পাঠকমহলে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি অর্জন করেছেন বেশ কিছু দেশি-বিদেশি পুরস্কার। সাহিত্যকর্মে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য গত বছর তিনি পশ্চিমবঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ থেকে ‘ইন্দিরা গান্ধী স্বর্ণপদক’ এবং আসামে ‘মানব বিকাশ পরিষদ স্বর্ণপদক’ লাভ করেছেন।
উপন্যাস রচনার পাশাপাশি তিনি ফেসবুকে ‘অনুগল্প’ নামে নিয়মিত ছোটগল্প লিখে থাকেন। যেগুলো পাঠকমহলে বেশ নন্দিত। অসংখ্য গুণগ্রাহী তার প্রোফাইলে নতুন গল্পের জন্য উঁকি মারেন। পাঠকমহলে তার বই, লেখার জনপ্রিয়তা এবং প্রত্যাশা দিন দিন বাড়ছে।
আরও পড়ুন: নতুন বই প্রকাশে অনীহা লেখক-প্রকাশকদের
ব্যবসার ব্যস্ততা ও সামাজিক কার্যক্রম নিয়ে কাটে তার সময়। এর মাঝেও তিনি লিখতে ভালোবাসেন। পাঠকদের ভালোবাসার প্রতি সম্মান রেখে সামনের দিনগুলোয় লেখালেখির পেছনে আরও মনোনিবেশ করতে চান। তিনি আহ্ববান জানান, বেশি বেশি বাংলা বই পড়তে।
এসইউ/এএসএম