মেলায় আসছে প্রিয়তীর বই ‘কণ্টক শয্যা’
এবারের বইমেলায় আসছে পাইলট, মডেল মাকসুদা আখতার প্রিয়তীর তৃতীয় বই ‘কণ্টক শয্যা’। আমাদের জীবন স্বল্প সময়ের এবং নির্দিষ্ট। সবাই যার যার নিজস্ব ব্যক্তিত্বের স্বতন্ত্রতা নিয়ে কোনো না কোনো উদ্দেশ্য থাকে বা লক্ষ্যে থাকে। সেই উদ্দেশ্যের আকার, ঘনত্ব শুধু ব্যক্তি বিশেষে তারতম্য ঘটে। ছোট-বড় হয়। জীবনের চলতিপথে আমরা নানা-মানুষের সাক্ষাৎ পাই, কেউ ক্ষণস্থায়ী, কেউ দীর্ঘস্থায়ী। কেউ আশীর্বাদ হয়ে আসে, কেউ আঘাত-ক্ষত নিয়ে আসে।
সেই সব আঘাতে আমরা থেমে গেলেও, জীবনের গতি থেকে পিছিয়ে পড়লেও জীবন কিন্তু থেমে থাকে না, এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু তারপরও কিছু কিছু মানুষের আগমনে আমরা আমাদের গন্ত্যবের নকশা পর্যন্ত বদলিয়ে ফেলি, জীবনকে অর্থহীন ভাবতে শুরু করি, অজান্তেই নিজেকে নিজের কাছে মূল্যহীন বিশ্বাস করাতে উঠে-পড়ে লেগে পড়ি।
বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ থেকে শুধু গুটিকয়েকজন মানুষের আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রিত হতে দিই, জান্তে-অজান্তে। কারণ আমরা নিজেদের ভালোবাসতে ভুলে যাই, অবমূল্যায়ন করতে করতে আপন সুপ্ত শক্তিকে চিনতে পারি না মাত্র অল্প কিছু মানুষের জন্য। অথচ আমাদের জীবনের মূল্য এর ওই অল্প কিছু মানুষের চেয়ে হাজারগুণ বেশি। আমরা সবাই কিছু না কিছু প্রতিভা নিয়ে জন্মেছি, আমাদেরই অনেক কিছু আছে এই পৃথিবী ও সমাজকে উপহার দেয়ার। শুধু দরকার জীবন পরিবর্তনে আপন শক্তিকে চেনা এবং তা প্রয়োগ করার। এসবই নিয়েই ‘কণ্টক শয্যা’।
বইটি সম্পর্কে লেখক প্রিয়তী বলেন, ‘কন্টক শয্যা’ লেখা শুরু করেছি এবং শেষ করেছি ২০২০- এ যখন আমরা করোনাকালীন ঘরবন্দি, সাথে আমার সন্তানরাও ঘরবন্দি। এই সময়টা বাচ্চারাসহ সব অভিভাবকের জন্যই চ্যালেঞ্জিং ছিল, আমারও ব্যতিক্রম নয়। আশ্চর্যজনকভাবে, মাথার ওপর ছাদ, টেবিলের ওপর খাবারের বন্দোবস্ত করে ও ঘরের সব কাজ সামলে আমি যখনই লিখতে বসেছি, আমার সন্তানরা সেই পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে।
মাঝে এমন ক’দিন গেছে যে গল্পের মধ্যে আমি এমন ভাবে ডুবে ছিলাম যে, বাচ্চাদের জন্য রান্নাও করিনি। কিন্তু বাচ্চারা কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি, শুধু পাউরুটি টোস্ট করে খেয়ে থেকেছে। আমার ১০ বছরের ছেলে ডিম ভাজি করা শিখে ফেলেছে, সে নিজেও খেয়েছে, নিজের ছোট বোনকে খাবার তৈরি করে দিয়েছে। শতবার না করা সত্ত্বেও আমার ৯ বছরের ছোট্ট রাজকুমারী আমার জন্য চা, কফি বানিয়ে নিয়ে এসে খবর নিয়েছে আমার আরও কিছু লাগবে কিনা, যা কল্পনাতীত।
আমি এই বইটি লিখতে পেরেছি ও শেষ করতে পেরেছি শুধু আমার দুই সন্তানের সহযোগিতায়, তাদের ত্যাগে, তাদের ধৈর্য ও তাদের বোঝার ক্ষমতায় এবং তাদের ভালোবাসায়। তা না হলে এক সিঙ্গেল মায়ের প্রতিদিনের কর্তব্য থেকে বিরতি নিয়ে ঘরবন্দি থাকা অবস্থায় কোনো ভাবেই লেখা সম্ভব ছিল না। ‘কন্টক শয্যা’ সৃষ্টিতে আমি আমার সন্তানদের কাছে কৃতজ্ঞ।
এর আগে প্রকাশিত ‘প্রিয়তীর আয়না’ এবং ‘ছোবল’ বই দুটির মতো ‘কণ্টক শয্যা’ও পাঠকের সংগ্রহকে সমৃদ্ধ করবে-এমনটিই প্রত্যাশিত।
কবি প্রকাশনীর বইটির দাম ২০০ টাকা। কমিশনে ১৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে প্রি-অর্ডারে।
এইচআর/এমএস