বইমেলায় বিক্রির শীর্ষে যেসব বই
বইমেলায় নবীন ও তরুণ লেখকদের বই কয়েক বছর ধরে বিক্রির শীর্ষে থাকছে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে এ বছর বই বিক্রির ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘আমার দেখা নয়াচীন’ শীর্ষে রয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বইটি বিক্রির অনন্য রেকর্ড স্থাপন করেছে। ১৯৫৪ সালে লেখা বঙ্গবন্ধুর ‘আমার দেখা নয়াচীন’ মেলায় আসতে না আসতেই ব্যাপক বিক্রি শুরু হয়।
মেলার প্রথম দিন থেকেই পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বইটি। ফলে বিক্রিও হয় বেশ। মেলার প্রথম ১০ দিনে প্রায় ২০ হাজার কপি বিক্রি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ১১ ফেব্রুয়ারি কিছু কপি নিয়ে আসা হয়। তবে মেলার গেট খোলার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সব বই বিক্রি হয়ে যায়। এখন আবার বইটি পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম ধাপে ২০ হাজার ও দ্বিতীয় ধাপে ৩০ হাজার কপি ছাপালেও প্রতিদিন সন্ধ্যার আগেই নির্ধারিত সংখ্যা শেষ হয়ে যায়।
মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তাকে উৎসর্গ করে এবারের বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। বইমেলায় প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর ‘আমার দেখা নয়াচীন’ ঘিরে পাঠকের বিপুল আগ্রহ দেখা গেছে। মোট ৫০ হাজার কপি বই ছাপানো হলেও পাঠকের তুলনায় তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় এটা নিয়ে একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া বাংলা একাডেমি পরিকল্পিত বঙ্গবন্ধু বিষয়ক শত গ্রন্থের অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ১৮টি নতুন গ্রন্থ প্রকাশ করেছে। বর্তমানে ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণ পাওয়া যাচ্ছে।
তরুণ লেখদের মধ্যে বরাবরের মতো বিক্রির শীর্ষে রয়েছে সাদাত হোসাইনের লেখা ‘অর্ধবৃত্ত’। এটি প্রকাশ করেছে অন্যধারা। অন্যধারার বিক্রয়কর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এরই মধ্যে ‘অর্ধবৃত্ত’র পঞ্চম মুদ্রণ শেষের দিকে। এছাড়াও মেলা ঘুরে দেখা গেছে, অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত সাদাত হোসাইনের ‘মেঘেদের দিন’ ও ‘মরণোত্তম’ ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি তার বিগত মেলায় প্রকাশিত বইগুলোও ভালো বিক্রি হচ্ছে।
বই বিক্রি নিয়ে জানতে চাইলে সাদাত হোসাইন বলেন, ‘পাঠকের অভুতপূর্ব সাড়ায় আমি অভিভূত। যতদিন মেলায় গিয়েছি, পাঠকের উপস্থিতি আমাকে মুগ্ধ করেছে। তবে বিক্রির পরিমাণ প্রকাশক বা বিক্রয়কর্মীরা ভালো বলতে পারবেন। আমার নতুন চারটি বইসহ অন্যান্য বছরের বইগুলো ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’
অন্যদিকে কবি, গীতিকার ও অভিনেতা মারজুক রাসেলের কবিতার বইও ভালো বিক্রি হচ্ছে। দীর্ঘ ১৫ বছর পর বই নিয়ে এসেছেন তিনি। বইয়ের নাম ‘দেহবণ্টনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর’। বায়ান্ন প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হওয়া বইটি ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে বইটি। মারজুকের ভক্তরা উৎসাহ নিয়ে বই কিনতে আসছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন প্রিয় কবির অটোগ্রাফের জন্য। বিক্রয়কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বইটির দশম মুদ্রণের বিক্রি চলছে।
এসইউ/পিআর