বইয়ের গন্ধে ম ম বাংলাবাজার!
নতুন বইয়ের গন্ধ যে কখনও কখনও মাদকতা ছড়ায়, এখন তারই প্রমাণ মিলছে পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে। ঢাকা জজকোর্ট পার হয়ে বাহাদুর শাহ পার্কের দক্ষিণ পাশে গেলেই বইয়ের গন্ধ মিলছে। আর বাংলাবাজারের অলিগলি থেকে ভেসে আসা এমন গন্ধই বলে দিচ্ছে অমর একুশে বইমেলার খবর।
শুক্রবারেই মেলার পর্দা উঠছে। মেলা ঘিরে মহাব্যস্ততা এখন নানা পাড়ায়। বিশেষ করে বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা সাজানোর ধুম পড়েছে। তবে মেলাকে ঘিরে বইয়ের আঁধার বাংলাবাজারে যেন দম ফেলার সময় নেই কারই। প্রকাশনায়, প্রেসে, বাঁধাইখানায় সমান তালে চলছে নতুন বইয়ের কাজ।
যেসব বইয়ের পাণ্ডুলিপিতে আগে হাত পড়েছে সেগুলো এখন বাঁধাই হয়ে প্রকাশনায় আসছে। আর যেসব পাণ্ডুলিপি খানিক দেরিতে, সেসব বইয়ের প্রুফ দেখা চলছে অথবা প্রেসে রয়েছে। বাঁধাই করা বই আসছে ভ্যানে, ঠ্যালা গাড়িতে অথবা টুকরিতে করে। চরম ব্যস্ততা বই বহনের সঙ্গে জড়িত এসব শ্রমিকদের মাঝে। শ্রমিকদের অনেকেই মৌসুমীও বটে। বিশেষত, বইমেলা ঘিরেই শ্রমিকদের অনেকে বাংলাবাজারে শ্রম দিতে আসেন।
ডিসেম্বরের শেষদিকে বাংলাবাজারে শ্রম দিতে এসেছেন মাদারীপুরের শিবচর থেকে রহিম মোল্লা। বলেন, প্রায় এক দশক হয় বাংলাবাজারে বই বহন করে আসছি। আগে গোটা বছরই থাকতাম। এখন তিন মাসের জন্য আসি। ফেব্রুয়ারি শেষ হলেই বাড়ি যাব। মূলত এই সময়ে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করার সুযোগ থাকে। আমরা এখানে চুক্তিভিত্তিক বই বহন করে থাকি।
বাংলাবাজারে সময় প্রির্ন্টাসের কর্মচারী বলেন, মেলা উপলক্ষে অধিকাংশ বইয়ের কাজ আমাদের প্রিন্ট হয়ে গেছে। এখন বাঁধাই হচ্ছে। ব্যস্ততা আরও দুই সপ্তাহ থাকবে। আর বাংলাবাজারে ব্যস্ততা থাকবে বইমেলার পুরো সময় ধরেই।
অনন্যা প্রকাশনীর প্রকাশক মনিরুল হক বলেন, মেলা ঘিরেই সাধারণত এখন বই প্রকাশ হয়ে আসছে। অন্য সময়েও বই প্রকাশ হয় বটে। তবে বাংলাবাজারে বই প্রকাশের আনন্দ মেলে জানুয়ারি, ফ্রেব্রুয়ারিই। আর এই সময়ে নতুন বইয়ের গন্ধই আলাদা।
এএসএস/এমআরএম/এমকেএইচ