মেলায় আজ নতুন বই ১১৭টি
অমর একুশে বইমেলার ২৬তম দিনে নতুন বই এসেছে ১১৭টি। এরমধ্যে কবিতার বই এসেছে সবচেয়ে বেশি (৫৩টি)। আর গল্প এসেছে ১৩ টি এবং উপন্যাস এসেছে ১৪টি।
এদিন বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে ছিল ‘বিজয় সরকার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহিদা খাতুন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মো. শাহিনুর রহমান, স্বরোচিষ সরকার এবং আকরাম শাহীদ চুন্নু। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী।
প্রাবন্ধিক বলেন, কবিয়াল বিজয় সরকার শৈশব-কৈশোর থেকেই সংস্কৃতি অনুরাগী ছিলেন। গ্রাম-গঞ্জের পথে-মাঠে-ঘাটে আনমনে গান গেয়ে বেড়াতেন তিনি। বিজয় সরকার কবিগানের নিজস্ব একটি কাঠামো সৃষ্টি করেন, আবার কবিয়াল হয়েও বাংলা গান ও কবিতার ভুবনে স্বতন্ত্র জায়গা তৈরি করেছেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ধর্ম ও বিভিন্ন জাতির মধ্যে সমন্বয়, সম্প্রীতি, সহাবস্থান, সহমর্মিতা বিজয় সরকারের গানে উচ্চারিত হয়েছে। ভিন্ন ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা, সহানুভূতিশীল হওয়া, সম্মান প্রদর্শন করা, সর্বোপরি সব ধর্মের মর্মবাণী উপলব্ধি করা- সংগীতের মাধ্যমে এসব তিনি মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। এজন্য তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধের একজন উচ্চমানের সংগীতশিল্পী।
প্রাবন্ধিক বলেন, কালজয়ী প্রতিভা বিজয় সরকারের রচনাবলি সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও তার গানের সুরের স্বরলিপি করতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যত প্রজন্ম এই মহান শিল্পীর জীবনকথা জানতে পারে এবং তার সৃষ্ট সংগীতসম্ভার নিয়ে নানামাত্রিক গবেষণা করতে পারে।
আলোচকবৃন্দ বলেন, অনন্য প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন কবিয়াল বিজয় সরকার। কবিগানকে তিনি শিল্পের উচ্চতায় উন্নীত করেছেন। বিজয় সরকার ছিলেন মানবতাবোধের স্বভাব কবি। তিনি সকল কিছুর মাঝে পরমত্মার ভিতর সন্ধান করতেন। পরমাত্মার সন্ধান করতে গিয়ে সমাজ, পরিবার থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন পড়েন তবু তার পরমের সন্ধান শেষ হয়নি।
তারা বলেন, তার অমর সৃষ্টি বিজয়গীতির মধ্যে তিনি বাংলার লোকসমাজের মানুষের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, বিজয় সরকারের কবিগান সাহিত্য গুণমানসম্পন্ন। তার গান সার্বজনীন। একদিকে মরমী নম্রধারা, অন্যদিকে দ্রোহের আগুন জ্বলমান। জাত-ধর্মের বালাইহীন উদার জমিনে সকল ধর্মের সুসমন্বয় করতে চেয়েছিলেন বিজয় সরকার। হাছন-লালনের ধারায় বিজয় সরকার বাংলা গানের ভুবনে এক অনন্য নক্ষত্রের নাম।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল স্বপন গুহের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘রূপান্তর’-এর পরিবেশনা।
এএসএস/এমবিআর/এমএস