উপদেষ্টা-এনসিটিবির ওপর আস্থা নেই, পাঠ্যবই কিনছে চড়া দামে

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জারিফ হাসান সাদি। এবার মাত্র দুটি বই পেয়েছে স্কুল থেকে। এজন্য বইয়ের পিডিএফ কপি প্রিন্ট করতে বলেছেন শিক্ষকরা। কিন্তু কয়েকটি বইয়ের প্রথম দু-তিন অধ্যায় করে প্রিন্ট দিতেই প্রায় তিন হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়।
জারিফের মা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘সেজন্য বাজার থেকে বই কেনার চেষ্টা করি। এক সেট বই সাড়ে ছয় হাজার টাকা চাওয়ায় তা কিনিনি। তবে আমার পরিচিত অনেকে কিনেছেন।’
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
সাবিনার মতো অনেক অভিভাবক বাধ্য হয়ে খোলাবাজার থেকে চড়া দামে বিনামূল্যের পাঠ্যবই কিনছেন। রাজধানীর নীলক্ষেতে সপ্তম শ্রেণির এক সেট নতুন বই পাঁচ হাজার ও নবম-দশমের বই ছয় হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ কোটির বেশি বিনামূল্যের পাঠ্যবই প্রয়োজন। কিন্তু ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ছাপা হয়েছে মাত্র সাড়ে ১৬ কোটি বই। শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেছে ১৩ কোটি। এখনো ২৭ কোটির বেশি বই পাওয়া থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
পাঠ্যবই ছাপা-বিতরণ নিয়ে এমন হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতিতে শিক্ষা উপদেষ্টার ‘ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব বই দেওয়ার’ প্রতিশ্রুতি পূরণ নিয়েও সংশয়ে খোদ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষাবর্ষের প্রায় একমাস পার হতে চললেও পাঠ্যবই না পেয়ে হতাশ শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। শিক্ষা উপদেষ্টা ও এনসিটিবির আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না তারা। বাধ্য হয়ে খোলাবাজার থেকে চড়া দামে পাঠ্যবই কিনছেন। এ সুযোগে গড়ে উঠেছে অসাধু চক্র। যারা পাঠ্যবই ছাপিয়ে খোলাবাজারে বিক্রির রমরমা বাণিজ্যে মেতেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিনামূল্যে বিতরণের বই চড়া দামে বিক্রি করছে চক্রটি।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, তারা গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো আগে ছাপানোর চেষ্টা করছেন। দিনে ৫০ লাখ বই ছাপা হলে ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব বই শিক্ষার্থীদের দেওয়া সম্ভব। সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন তারা।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে চলতি শিক্ষাবর্ষে ৪০ কোটির বেশি বিনামূল্যের পাঠ্যবই প্রয়োজন। কিন্তু ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ছাপা হয়েছে মাত্র সাড়ে ১৬ কোটি বই। শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেছে ১৩ কোটি। এখনো ২৭ কোটির বেশি বই পাওয়া থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।
তবে বোর্ড কর্মকর্তাদের ছক কষে দেখানো হিসাবের সঙ্গে একমত নন ছাপাখানার মালিকরা। তারা বলছেন, দিনে সর্বসাকুল্যে ২০ লাখের কিছু বেশি বই ছাপা সম্ভব। তারপরও আর্টকাটের (মলাট তৈরির কাগজ) সংকট দেখা দিয়েছে। চীন থেকে এনসিটিবি যে আর্টকাট এনে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে, তা আসতে ফেব্রুয়ারি মাস পার হবে। ফলে সব বই ছাপা শেষ করতে মার্চ মাস লেগে যাবে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন:
- নতুন বই না পেয়ে পুরাতনেই ঝুঁকছে শিক্ষার্থীরা
- পিডিএফে অনাগ্রহী, নতুন বইয়ের অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা
- বই না পেয়ে স্কুলবিমুখ শিক্ষার্থীরা
- বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বাজারে বিক্রি, দুই ট্রাক বইসহ আটক ২
প্রাথমিকের ৬৭ শতাংশ বই ছাপা শেষ
চলতি শিক্ষাবর্ষে সারাদেশে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ৯ কোটির কিছু বেশি বই প্রয়োজন। এর মধ্যে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬ কোটি ২০ লাখ বই ছাপা শেষ হয়েছে। সেগুলোর প্রায় সব শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ, প্রায় ৬৭ শতাংশ প্রাথমিকের বই ছাপা ও বিতরণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ দেখভাল করে এনসিটিবির উৎপাদন শাখা। উৎপাদন নিয়ন্ত্রক আবু নাসের টুকু জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রাথমিকের বই নিয়ে খুব বেশি ঝামেলা নেই। আমরা কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছি। চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণির ২৮ লটের বই পুনরায় টেন্ডার করায় কিছুটা দেরি হয়েছে। আমাদের এ কাজ (চতুর্থ-পঞ্চমের বই) যারা পেয়েছেন, তারা আবার অগ্রাধিকার দিয়ে দশম শ্রেণির বই ছাপাচ্ছেন। সেজন্য কিছুটা দেরি হচ্ছে। শিগগির চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণির বইগুলো পৌঁছে দেওয়া হবে।’
মাধ্যমিকের বই নিয়ে টেনশন, ছাপা হয়েছে মাত্র ১০ কোটি
ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বই নিয়ে বেশি বিপাকে এনসিটিবি। মাধ্যমিক পর্যায়ে (ইবতেদায়িসহ) এবার বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৩১ কোটি। এর মধ্যে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ছাপা হয়েছে ১০ কোটি ২৬ লাখ। হিসাব অনুযায়ী, তিন ভাগের মাত্র এক ভাগ বই ছাপা হয়েছে। তার মধ্যে আবার শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেছে মাত্র সাড়ে ৬ কোটি বই।
এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা তিন ভাগের এক ভাগ বই দিতে পেরেছি। বাকি বইগুলো ফেব্রুয়ারির মধ্যে দিতে পারবো বলে আশা করছি। বাকিটা সময়ই বলে দেবে।’
বিজ্ঞাপন
পিডিএফ প্রিন্টে খরচ বেশি, বই কিনতে বাজারে শিক্ষার্থীরা
চলতি বছর বই ছাপার কাজ কিছুটা দেরিতে শুরু হয়। ফলে বই উৎসব করা সম্ভব হয়নি। শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের শুরুতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বইও তুলে দিতে পারেনি সরকার। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করা হয়। এনসিটিবির ওয়েবসাইটে সব বইয়ের পিডিএফ কপি দেওয়া হয়।
বই না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক পিডিএফ কপি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করছেন। তবে তাতে খরচ পড়ছে অনেক বেশি। ১২০ পৃষ্ঠার একটি বই প্রিন্ট করতে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ পড়ছে। সেটাও আবার স্পষ্ট না। ফলে বাজারে বিভিন্ন বইয়ের দোকান ঘুরে গোপনে বই কিনছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
‘কেউ এক-দুই অধ্যায় প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে আসছে। কেউ আবার পুরোনো বই জোগাড় করেছে। নতুন বইয়ের সঙ্গে পুরোনো বইয়ের মিল নেই। আমরা সাধ্যমতো শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে খুব একটা কাজ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। দ্রুত বই দরকার।’ -শিক্ষক
অভিভাবক সাবিনা ইয়াসমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষকরা পিডিএফ কপি প্রিন্ট করে স্কুলে নিয়ে যেতে চাপ দিচ্ছেন। কয়েকটি বইয়ের প্রথম দু-তিন অধ্যায় করে প্রিন্ট দিতে প্রায় তিন হাজার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
- পাঠ্যবই দ্রুত ছাপানোর তাগিদ শিক্ষা উপদেষ্টার
- পাঠ্যবই ছাপাতে পাল্টা পদক্ষেপ এনসিটিবির, বেঁধে দিলো সময়সীমা
- ১৫ বছর পর এবার হচ্ছে না ‘বই উৎসব’
- তিন ছাপাখানার ৮০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল করলো এনসিটিবি
নীলক্ষেতে মিলছে পাঠ্যবই, দাম চড়া
উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাইমা। বাবার সঙ্গে বুধবার নীলক্ষেতে আসে বই কিনতে। জানুয়ারি মাস পার হতে চললেও একটি বইও নেই এ ছাত্রীর হাতে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বাবা সিদ্দিকুর রহমানও। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘জানুয়ারি মাস তো শেষ। একটা বইও তো মেয়ে পেলো না। ও বিজ্ঞান নেবে। বললো বাবা রসায়ন ও হায়ার ম্যাথ (উচ্চতর গণিত) বইটা তো দরকার। ওগুলো কঠিন।’
দুটি বই কিনতে এসে বেশি দাম শুনে মেয়েকে নিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরছেন সিদ্দিকুর রহমান। তার ভাষ্য, ‘দুইটা বই ১ হাজার ২০০ টাকা চাচ্ছে। আমি ৬০০ বলেছি। ওরা তো বিক্রি করছে গোপনে। না নিলে দুর্ব্যবহারও করছে। বই কিনতে এসে চরম বিব্রত হচ্ছি। সরকার তো এসব দেখবে না।’
আজিমপুরের অগ্রণী বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রাইসা আক্তার ও সিদরাতুল মুনতাহা। দুই বান্ধবী মিলে গণিত ও ইংরেজি বই কেনার জন্য ঘুরছে। তবে বই পায়নি তারা। রাইসা বলে, ‘স্কুল থেকে পিডিএফ প্রিন্ট করে নিয়ে যেতে বলছে। আমরা ভাবলাম প্রিন্ট করে নিলে তো দুদিন পর ছিঁড়ে যাবে। তারচেয়ে ওই টাকা দিয়ে বই কিনি। কিন্তু এসে বই পাচ্ছি না। একজন দিতে চাইলেন, কিন্তু দাম বেশি চাইছে।’
নীলক্ষেতের সিয়াম বুকশপের বিক্রয়কর্মী পলাশ হোসেন বলেন, ‘বই কেনার কাস্টমার অনেক। ঠেলে ফেলা যাচ্ছে না। কিন্তু বই বিক্রি তো নিষেধ। আমরা পুরোনো বই অর্থাৎ, ২০২২ সালের বই সংগ্রহ করে বিক্রি করছি। কিন্তু বইয়ে পরিবর্তন আসায় অনেকে পুরোনো বই কিনতে চাইছে না।’
নতুন বই বিক্রি করছেন কি না, এমন প্রশ্নে পলাশ হোসেন বলেন, ‘আমি করছি না। অনেকে বিভিন্নভাবে নিয়ে আসছে প্রেস থেকে। আমি ঝামেলার কাজে নেই। সেজন্য ওসবে যাইনি।’
তবে ক্রেতা সেজে কয়েকটি দোকানে গিয়ে বই চাইলে আগে দর-দাম ঠিক করে নেওয়ার প্রস্তাব দেন বিক্রেতারা। তাতে সপ্তম শ্রেণির এক সেট নতুন বই পাঁচ হাজার টাকা এবং নবম-দশমের বই ছয় হাজার টাকা চান তারা। টাকা পরিশোধ করলে কিছুটা দূরে গিয়ে বই দিয়ে আসবে বলেও জানান একজন বিক্রেতা। তবে তার নাম-পরিচয় জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
- ছাপায় পিছিয়ে এনসিটিবি, শঙ্কায় ‘বই উৎসব’
- পাঠ্যবইয়ে ফিরছেন জিয়া-খালেদা, থাকছেন শেখ মুজিব-হাসিনাও
- স্কুলে যাচ্ছে ৬ কোটি পাঠ্যবই, অনলাইনে মিলবে সব
- ১ জানুয়ারি পাঠ্যবই পাবে যেসব ক্লাসের শিক্ষার্থীরা
পাঠ্যবই নেই, ছন্নছাড়া ক্লাস
পাঠ্যবই না পাওয়ায় কীভাবে ক্লাস চলছে—এমন প্রশ্নে বিরক্তি ঝরে পড়লো ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের এক শিক্ষকের কণ্ঠে। নাম প্রকাশ না করে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বই না থাকলে ক্লাস নেওয়া যায় নাকি? শিক্ষার্থীরা আসে? ক্লাসের অবস্থা ছন্নছাড়া, পড়াশোনা তো লাটে উঠেছে।’
একই স্কুলের শিক্ষক আল নাহিয়ান নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, ‘কেউ এক-দুই অধ্যায় প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে আসছে। কেউ আবার পুরোনো বই জোগাড় করেছে। নতুন বইয়ের সঙ্গে পুরোনো বইয়ের মিল নেই। আমরা সাধ্যমতো শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে খুব একটা কাজ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। দ্রুত বই দরকার।’
রাজধানীর মিরপুর থানায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫৩টি। মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি।
মিরপুর থানা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল কাদের ফকির জানান, এখনো নবম শ্রেণির একটি বইও আসেনি। দশম শ্রেণির বিভাগভিত্তিক কিছু বই এসেছে। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির তিনটি করে বই পাওয়া গেছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহেই বই আসছে। নতুন বই আসামাত্রই উপজেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদের হাতে বই দেওয়া হচ্ছে না, তাদের কাছে পিডিএফ প্রিন্ট করে দেওয়া হচ্ছে।’
যে ওয়েব মেশিনে বাংলাদেশে বই ছাপা হয়, তার দিনে সক্ষমতা ৩০-৩৫ লাখ। কাগজ সরবরাহের সমস্যা মাথায় রেখে সর্বসাকুল্যে ২০ লাখ করে বই ছাপা সম্ভব। সেই হিসাব কষলে বাকি ২৪ কোটি বই ছাপতে আরও সাড়ে তিন থেকে চারমাস লাগতে পারে।-ছাপাখানার মালিক
সিলেট, রাজশাহী, ঝিনাইদহের কয়েকটি উপজেলায় খোঁজ নিয়েও একই তথ্য পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন:
- বছরের প্রথমদিন পাঠ্যবই দিতে না পারার ‘ব্যর্থতা’ ঢাকতে কৌশল!
- পাচারের সময় ট্রাকভর্তি নতুন বই জব্দ
- পাঠ্যবইয়ে আ’লীগ ‘সবচেয়ে বড় দল’, বিএনপির জন্ম ‘সামরিক শাসনামলে’
- পাঠ্যবইয়ে স্বমহিমায় জাতীয় বীরেরা, খুশি শিক্ষক-অভিভাবক
দিনে ৫০ লাখ বই ছাপার লক্ষ্য, অসম্ভব বলছেন প্রেস মালিকরা
প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের এখনো প্রায় ২৪ কোটি বই ছাপার বাকি। ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থাৎ, আগামী ৩৫ দিনে বই ছাপা শেষ করতে হলে দিনে প্রায় ৭০ লাখ কপি বই ছাপা ও বাঁধাই করা প্রয়োজন। তবে এনসিটিবি ৫০ লাখ করে বই ছাপানোর লক্ষ্য ঠিক করেছে। সেটাও সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ছাপাখানার মালিকরা।
ছাপাখানা মালিকদের তথ্যমতে, যে ওয়েব মেশিনে বাংলাদেশে বই ছাপা হয়, দিনে তার সক্ষমতা ৩০-৩৫ লাখ। কাগজ সরবরাহের সমস্যা মাথায় রেখে সর্বসাকুল্যে ২০ লাখ করে বই ছাপা সম্ভব। সেই হিসাব কষলে বাকি ২৪ কোটি বই ছাপতে আরও সাড়ে তিন থেকে চারমাস লাগতে পারে।
বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির বর্তমান কমিটির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন ‘এখন আর্টকাটের প্রকট সংকট। এনসিটিবি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, তারা চীন থেকে আর্টকাট এনে দেবেন। তারা যে প্রক্রিয়ায় আর্টকাট আনছেন, তাতে সেটা দেশে পৌঁছাতে ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হয়ে যাবে। বই ছাপাবো কীভাবো?’
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি অনুকূল এবং কাগজের সরবরাহ ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি-মার্চ—এ দুই মাস কাজ করে সব বই ছাপানো সম্ভব হতে পারে। সরকার যতই চাপ দিক বাস্তবতা হলো—সব বই পৌঁছাতে এপ্রিল পর্যন্তই সময় লাগবে।’
জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বই না পেয়ে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, এটা তো সত্য। আমরাও কাজ করে যাচ্ছি। প্রেস মালিকরা তো ঝামেলা করছেন। তাদের দিয়ে আমরা কাজ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের যে উদ্যোগ তাতে আশা করছি, ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব বই দিতে পারবো।’
এএএইচ/এসএনআর/এমএমএআর/এমএস
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ শিক্ষার্থীদের আট দাবি নিয়ে যা জানালো মন্ত্রণালয়
- ২ রূপগঞ্জে ১০০ একর জমিতে নতুন ক্যাম্পাস, ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন
- ৩ আন্দোলনে ছাত্রলীগের সমর্থন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলো শিক্ষার্থীরা
- ৪ এবার কাফনের কাপড় বেঁধে গণমিছিল করবেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা
- ৫ বৈঠকের নামে প্রতারণার প্রতিবাদে কারিগরি শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল