নিম্নমানের কাগজ
তিন ছাপাখানার ৮০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল করলো এনসিটিবি
নিম্নমানের কাগজ, বাঁধাইয়ে ত্রুটিসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে তিনটি ছাপাখানার ৮০ হাজারের বেশি পাঠ্যবই বাতিল করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বাতিল করা বইগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ইন্সপেকশন ও মনিটরিং টিম কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অবস্থিত ফরাজী প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্সে পাঠ্যবই ছাপার কাজ পরিদর্শেনে যায়। এসময় নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলেন তারা। পরে নিম্নমানের কাগজে ছাপা ৩০ হাজার বই বাতিল করা হয়। পুনরায় টেন্ডারের শর্ত মেনে তাদের ভালো কাগজে বই ছাপার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ইন্সপেকশন ও মনিটরিং টিমের সদস্যরা জানান, টেন্ডারেরর শর্তানুযায়ী ফরাজী প্রেস কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর মানেনি। তাছাড়া তাদের ছাপা বইয়ের কাগজের উজ্জ্বলতাও কম। এতে শিশুদের চোখের সমস্যা হতে পারে। শর্ত না মেনে বই নিম্নমানের কাগজে ছাপায় তাদের শোকজ করা হবে।
আরও পড়ুন
- পাঠ্যবই শিক্ষার্থীর হাতে দেওয়ার আগে নোট-গাইড ছাপা বন্ধ
- বই থেকে ‘ফাদার অব দ্য নেশন’ অধ্যায় বাদ, যুক্ত হচ্ছে ‘গ্রাফিতি’
- ছাপায় পিছিয়ে এনসিটিবি, শঙ্কায় ‘বই উৎসব’
এদিকে, নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছাপানোয় হাতেনাতে ধরা পড়েছে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস ও কর্ণফুলী আর্ট প্রেস। ৪ ডিসেম্বর নোয়াখালীর চৌমুহনীতে অবস্থিত এ দুটি ছাপাখানায় গিয়েও প্রাথমিকের পাঠ্যবই নিম্নমানের কাগজে ছাপার বিষয়টি হাতেনাতে ধরেছেন এনসিটিবি কর্মকর্তারা। এ কারণে দুটি ছাপাখানার ৫০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল করা হয়।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, অগ্রণী ও কর্ণফুলী প্রেস দুটির মালিক একই ব্যক্তি। কয়েকবছর ধরে তিনি এভাবে নিম্নমানের কাগজে বই ছেপেছেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও এনসিটিবির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম ও সাবেক সচিব নাজমা বেগম, পিয়ন পানি জাহাঙ্গীর, চাঁদপুর পুরানবাজার কলেজের রতন মজুমদারের সিন্ডিকেটকে ম্যানেজ করে পার পেয়ে গেছেন তারা।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তারা এনসিটিবির কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে টেন্ডারে সর্বনিম্ন দর দিয়ে বই ছাপার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। তাদের ছাপাখানার দিকে নজরদারি বাড়িয়েছে এনসিটিবি।
এনসিটিবির পরিদর্শন টিমের সদস্যরা জানান, অগ্রণী ও কর্ণফুলী ছাপাখানায় ৫০ হাজার পাঠ্যবইয়ে নানা অনিয়ম ও ত্রুটি পাওয়া গেছে। সব বইয়ের কাগজ নিম্নমানের। কিছু বইয়ের বাইন্ডিং ঠিক নেই। কাগজের বাস্টিং ফ্যাক্টর কম, বইয়ের সামনের ও পেছনের মলাট খুলে যাচ্ছে।
তাছাড়া রাজধানীর মাতুয়াইলে অবস্থিত আরও কয়েকটি ছাপাখানা পরিদর্শন করে অনিয়ম পাওয়া বই বাতিল করা হয়েছে। আর সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের ভাই আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও মুদ্রণশিল্প সমিতির বর্তমান চেয়ারম্যান রাব্বানী জব্বারের ছাপাখানা আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্ক করা হয়েছে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, এবার বইয়ের কাগজের মান ও বাঁধাই অবশ্যই ভালো করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা আছে। সেই নির্দেশনা প্রতিপালন করছে এনসিটিবি। বিগত সময়ের মতো আমরা এবার কাউকে বিশেষ সুবিধা দেবো না। যারা টেন্ডারের শর্ত মানবে না, তাদের প্রয়োজনে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
এএএইচ/ইএ
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ ভর্তি পরীক্ষায় যোগ্যপ্রার্থীর তালিকা প্রকাশ, আসনপ্রতি লড়বেন ৯০ জন
- ২ জানুয়ারিতে সব শ্রেণির নতুন বই দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে
- ৩ তিন ছাপাখানার ৮০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল করলো এনসিটিবি
- ৪ পৌনে ১০ লাখ শিক্ষার্থীর লটারির তারিখ ও স্থান জানালো মাউশি
- ৫ ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি জানুয়ারিতে, আসছে বড় পরিবর্তন