ভিডিও EN
  1. Home/
  2. শিক্ষা

ছেলের ফল জালিয়াতি

চট্টগ্রাম বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ ওএসডি, হচ্ছে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:২২ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজের ছেলের ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। একই সঙ্গে জালিয়াতিতে জড়িত থাকার দায়ে নারায়ণ চন্দ্র নাথসহ জালিয়াতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব শতরুপা তালুকদারের সই করা পৃথক পৃথক চারটি আদেশ জারি করা হয়।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠানো এক চিঠিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অঞ্চল (চট্টগ্রাম) পরিচালক নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে নক্ষত্র দেব নাথের ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতি তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ে নারায়ণ চন্দ্র নাথ এবং এই জালিয়াতিতে তার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

একই তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়, ‘উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তার ছেলে নক্ষত্র দেব নাথের ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতির বিষয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযুক্তের স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, কর্মস্থল, চাকরিতে যোগদানের তারিখ, বেতন স্কেল, আহরিত বেতন-ভাতা ও ই-মেইল ঠিকানা উল্লেখপূর্বক সুনির্দিষ্টভাবে খসড়া অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণীসহ আলাদা ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন (পিডিএস) আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে পাঠাতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

২০০ নম্বরের পরীক্ষায় দেওয়া হয় ২১৮
২০২১ সালের এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। সেখানে দেখা গেছে, কয়েকজন শিক্ষার্থী ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় নির্ধারিত নম্বরের চেয়েও বেশি নম্বর পেয়েছে। এছাড়া দুপুরে ফল প্রকাশের পর পর ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বর ফর্দ সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ পাল্টে যায়।

ওই বছর চট্টগ্রাম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হওয়া এক শিক্ষার্থীর নম্বর ফর্দে দেখা গেছে, পদার্থবিজ্ঞানে মোট ২০০ নম্বরের মধ্যে তার প্রাপ্ত নম্বর লেখা রয়েছে ২১৮! একই ঘটনা ঘটেছে ওই শিক্ষার্থীর উচ্চতর গণিতের বিষয়েও। আরও একাধিক শিক্ষার্থীর নম্বর ফর্দে এমন অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশের ক্ষেত্রে এমন নম্বর পাল্টে যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এসব ঘটনায় ২০২২ সালের ১ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব আলমগীর হুছাইনের সই করা চিঠিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে দায়ী করা হয়।

পরে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফলে ওই সময়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলের ফলাফল নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে অংশ নেয় তার ছেলে নক্ষত্র দেব নাথ। পরে অভিযোগ ওঠে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে জিপিএ-৫ পাইয়ে দিয়েছেন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। এ ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে বিষয়টি তদন্ত করা হয়। তদন্তে নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা মেলে।

এএজেড/কেএসআর/জেআইএম