এইচএসসি নিয়ে সিদ্ধান্ত ছাত্রদের অনুকূলে আসবে: পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক
কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে স্থগিত হওয়া এইচএসসি ও সমমানের বাকি পরীক্ষা আর না দেওয়ার দাবিতে কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের মুখে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বাকি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য যে রুটিন প্রকাশ করা হয়েছিল, তা বাতিলে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষা সচিব। শুধু রুটিন বাতিল নয়, অটোপাসের দাবি শিক্ষার্থীদের অনুকূলে আসবে বলে আশ্বস্ত করেছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাশার।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দিনভর ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে অবস্থান নেন পরীক্ষার্থীরা। তারা স্লোগানে স্লোগানে দাবি জানাতে থাকেন। দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানান বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
বিকেলে মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়া নতুন সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ রুটিন বাতিল করতে বোর্ড চেয়ারম্যানকে মৌখিক নির্দেশনা দেন। এরপরই বোর্ড প্রাঙ্গণে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নতুন রুটিন বাতিল করার কথা জানান। আর অটো পাসের যে সিদ্ধান্ত সেটি প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিতে পারেন বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাশার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য যে রুটিন প্রকাশ করা হয়েছিল, তা শিক্ষা সচিব বাতিলের মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। তার মানে রুটিন বাতিল করা হবে।
অটো পাস দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আমার এখতিয়ারে নেই। প্রধান উপদেষ্টা তোমাদের এ বিষয়টি জেনেছেন। প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, সচিব স্যাররা মিটিং করবেন। সেখান থেকে তোমাদের বিষয়টি নিয়ে ঘোষণা দিতে চান তারা। শুধু রুটিন বাতিল নয়। তোমাদের আরও যেসব দাবিগুলো আছে, সেগুলোও লিখে আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। যতদূর জেনেছি, সিদ্ধান্ত তোমাদের অনুকূলে আসবে।’
আরও পড়ুন
- এইচএসসিতে অটোপাস নয়, পরীক্ষা চান অনেক শিক্ষার্থী-অভিভাবক
- এইচএসসির নতুন রুটিনও বাতিল হতে পারে, সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার
- ২৪ থানায় এইচএসসির প্রশ্ন পুড়লেও উত্তরপত্র অক্ষত: বোর্ড চেয়ারম্যান
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দেওয়া এমন আশ্বাসে উল্লাসে ফেটে পড়েন আন্দোলনরত এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। তারা জানান, প্রায় দেড় মাস ধরে তারা আন্দোলন করছেন। তাদের অনেক সহপাঠী আন্দোলন চলাকালে আহত হয়েছেন। অনেকে জেল খেটেছেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। এজন্য তারা এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে প্রমোশন চাইছেন।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জাগো নিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয়ে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো জানিয়েছিলাম। সেখান থেকে কিছু মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেটা নিয়ে আবার আগামীকাল মঙ্গলবার সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষা সচিব, বোর্ড চেয়ারম্যানরা অংশ নিতে পারেন। সেখানেই সব কিছু চূড়ান্ত হবে।
গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর আর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।
সূচি অনুযায়ী, এখনো ১৩ দিনের মোট ৬১টি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) বিভিন্ন বিষয় থাকায় এতগুলো পরীক্ষা আটকে গেছে। যদিও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এরমধ্যে বাধ্যতামূলক বাংলা ও ইংরেজির চারটি বিষয় (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) এবং আইসিটি। ৮টি বিষয় ঐচ্ছিক (অপশনাল)।
এএএইচ/এমএএইচ/
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ২ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ৩ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা করার নির্দেশ
- ৪ পিএইচডি-এমফিলধারী ২০৬ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিলো জমিয়াতুল মোদার্রেছীন
- ৫ শিক্ষা প্রশাসনে ফের বড় রদবদল, এবার ৪৬ কর্মকর্তাকে পদায়ন