ভিডিও EN
  1. Home/
  2. শিক্ষা

কী ছিল আলোচিত ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনে?

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:২৬ পিএম, ০৭ জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল রাজধানী। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও কয়েকদিন ধরে ছড়িয়ে পড়েছে এ আন্দোলন। দিন যতই গড়াচ্ছে, আন্দোলনও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি—২০১৮ সালের কোটা বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহাল করা হোক। একই সঙ্গে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতেও কোটা বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন তারা।

জানা গেছে, ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশে সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন হলে মন্ত্রিসভা ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

২০১৯ সালের ৩০ জুলাই সরকার জানায়, সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা বহাল নেই। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে (১৪তম থেকে ২০তম পর্যন্ত) কোটা বহাল রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে সাধারণ প্রার্থীর মেধাতালিকা থেকে তা পূরণ করতে হবে।

২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কোটার বিষয়ে আগের জারি করা পরিপত্র স্পষ্ট করার পাশাপাশি মন্ত্রিসভার বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সরকারি চাকরিতে অষ্টম বা তার ওপরের পদেও সরাসরি নিয়োগে কোটা বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন হয়।

এদিকে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের দাবিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের পক্ষে অহিদুল ইসলাম তুষার উচ্চ আদালতে ২০২১ সালে রিট মামলা করেন। এ মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৫ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা ২০১৮ সালের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন।

ওইদিন থেকেই ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামেন। তারা ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করে দেওয়া পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি জানান।

কী ছিল কোটি বাতিলে ২০১৮ সালের পরিপত্রে?

২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব ফয়েজ আহম্মদের সই করা প্রজ্ঞাপনে কোটা বাতিল করা হয়। এতে বলা হয়, সরকার সকল সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত/আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ তারিখের স্মারকে উল্লেখিত কোটা পদ্ধতি সংশোধন করিল।

সংশোধনের ক্ষেত্রে ‘ক’ অংশে বলা হয়, নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং দশম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হইবে।

‘খ’ অংশে বলা হয়, নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং ১০-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হইলো।

বিষয়টি নিয়ে পরে জটিলতা দেখা দিলে ২০১৯ সালের ৩০ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্টিকরণ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। উপসচিব দীপংকর বিশ্বাস এতে সই করেন।

প্রজ্ঞাপনের দুটি অংশের মধ্যে ‘ক’ অংশে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখার ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর তারিখের স্মারক অনুযায়ী প্রথম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হইবে এবং উক্ত পদসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হইলো মর্মে পরিপত্র জারি করায় কোটা পদ্ধতি বিদ্যমান নেই।

‘খ’ অংশে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ৫ এপ্রিল ২০১৮ তারিখের জারিকৃত স্মারকের (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ কোটার (মুক্তিযোদ্ধা, নারী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, এতিম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা সদস্য) কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হইলে অপূর্ণ পদসমূহ জেলার প্রাপ্যতা অনুযায়ী স্ব-স্ব জেলার সাধারণ প্রার্থীদের মধ্য হইতে মেধাতালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করিতে হইবে।

এএএইচ/এমকেআর/জিকেএস