ভিডিও EN
  1. Home/
  2. শিক্ষা

রমজানে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও কিন্ডারগার্টেন খোলা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৪৮ পিএম, ১১ মার্চ ২০২৪

রমজানে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। উচ্চ আদালতের নির্দেশে রমজানে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাসহ সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধ থাকলেও রোজার মাসে রাজধানীসহ সারাদেশের প্রায় ৪৭ হাজার কিন্ডারগার্টেন খোলাই থাকছে।

সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশের পর কিন্ডারগার্টেনগুলোর মালিকদের কয়েকটি সংগঠনের নেতা ও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।

কিন্ডারগার্টেন মালিকরা বলছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। তারা নিজস্ব খরচে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন, ভবন ভাড়াসহ সবই আয় থেকে মেটাতে হয়। এখন তারা কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ দিলে মার্চের বেতন তুলতে পারবেন না। এতে রমজান ও ঈদে শিক্ষকদের বেতন-বোনাসও দিতে পারবেন না। এজন্য তারা ২০-২২ মার্চ পর্যন্ত হলেও কিন্ডারগার্টেন খোলা রাখতে চাইছেন।

আরও পড়ুন
রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ রাখার আদেশ বহাল
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ নিয়ে যা জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘সব বন্ধ হলেও বাধ্য হয়েই আমাদের কিছুদিন কিন্ডারগার্টেন খোলা রাখতে হবে। কিন্ডারগার্টেনে সব শ্রেণির শিশুরা পড়ে। কেউ মধ্যবিত্ত, কেউ নিম্ন-মধ্যবিত্ত। সব অভিভাবক মাসের শুরুর দিকে বেতন দিতে পারেন না। অনেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী। তারা ১৫ তারিখে বেতন পান। সন্তানের স্কুলের বেতন দিতে দেরি হয়।’

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা চলতি মার্চ মাসের বেতন না তুলেই স্কুল বন্ধ দেই তাহলে রমজান ও ঈদে শিক্ষকদের না খেয়ে থাকতে হবে। কোথা থেকে তাদের বেতন-বোনাস দেবো? এজন্য আমরা কিছুদিন কিন্ডারগার্টেন খোলা রাখবো।’

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ‘কিন্ডারগার্টেনে তো সরকারি বরাদ্দ নেই। নিজস্ব খরচে আমরা চলি। আমাদের সিদ্ধান্ত আমরা নেবো। আমাদের কিছুদিন খোলা রাখতেই হবে।’

কিন্ডারগার্টেন ও সমমনা স্কুল রক্ষা জাতীয় কমিটির সাবেক প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আব্দুল অদুদ বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ আর কিন্ডারগার্টেন এক নয়। কিন্ডারগার্টেন রোজার মাসেও কিছুদিন চালাতেই হবে। তা না হলে এসব প্রতিষ্ঠান টিকবে না।’

রাজধানীর রামপুরার উলান রোডের সপ্তবর্ণ বিদ্যা নিকেতনের পরিচালক মারুখা খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার এখানে ২০০ শিক্ষার্থীর মতো রয়েছে। অভিভাবকরা কেউই ১৫ তারিখের আগে বেতন দিতে চান না। মিডল ক্লাস এবং লয়ার-মিডল ক্লাস ফ্যামিলির বাচ্চারা বেশি আমার প্রতিষ্ঠানে। তাদের তো জোর করতেও পারি না। আবার শিক্ষকদের বেতন, ভবনের ভাড়া দিতে হলে আয় তো দরকার। সবমিলিয়ে রোজার মাসে স্কুল দ্রুত বন্ধ করে দিলে শিক্ষকদের বেতন ও ঈদের বোনাস দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।’

আরও পড়ুন
রমজানে স্কুল বন্ধ রাখার দাবি অভিভাবকদের
রমজানেও খোলা থাকবে স্কুল

তিনি বলেন, ‘এখনো স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত বা নোটিশ দেইনি আমরা। সবাই যে সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা আমাকেও নিতে হবে। তবে স্কুল এখনই বন্ধ করতে হয়তো পারবো না। আরও এক সপ্তাহ খোলা রাখতে হতে পারে।’

জানা গেছে, আজ দেশের আকাশে রমজানের চাঁদ দেখা গেলে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) থেকে রোজার মাস শুরু হবে। এবার রোজার প্রথম দিকে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার।

তবে একজন আইনজীবীর করা রিটের শুনানি নিয়ে রোববার (১০ মার্চ) হাইকোর্ট রোজায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত (অর্থাৎ বন্ধ থাকবে) করে আদেশ দেন। এরপর সোমবার (১১ মার্চ) রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে (অর্থাৎ খোলা থাকবে) আপিল বিভাগে আবেদন করে। শুনানি শেষে আপিল বিভাগও হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। এতে রমজানের প্রথম দিন থেকেই সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে।

এএএইচ/এমকেআর/এমএস