শিক্ষক হতে যে বিষয়ে আবেদন করেননি কেউ
১৯৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসায় ভোকেশনাল কোর্সের জন্য চাহিদা ছিল ১০টি ‘ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর’ পদে ২৪৭ শিক্ষকের। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ)-এ চাহিদা দেয়। সে অনুযায়ী গত ১১ জুন গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
যে ১০টি ট্রেডে ‘ইনস্ট্রাক্টর’ নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়, তার মধ্যে একটি ‘প্ল্যাম্বিং অ্যান্ড পাইপ ফিটিং’। এ ট্রেডে শূন্যপদ ৮টি। অথচ কেউই এ পদে আবেদন করেননি। প্রার্থী নির্বাচনও করতে পারেনি এনটিআরসিএ। ফলে শূন্যই রয়ে গেছে প্ল্যাম্বিং অ্যান্ড পাইপ ফিটিং পদ।
বুধবার (৯ আগস্ট) রাতে এনটিআরসিএ ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর পদে প্রার্থী নির্বাচনের ফল প্রকাশ করে। তা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন>> ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর পদে নিয়োগের ফল প্রকাশ করলো এনটিআরসিএ
শুধু প্লাম্বিং অ্যান্ড পাইপ ফিটিং নয়, ফুড প্রসেসিং ট্রেড ও আইসিটিতেও শূন্যপদের চেয়ে কম আবেদন জমা পড়েছে। ফলে এ দুই ট্রেডেও চাহিমা মোতাবেক শিক্ষক পদে প্রার্থী নির্বাচিত করা সম্ভব হয়নি। ফুড প্রসেসিংয়ে ১৯টি পদ থাকলেও আবেদন করেছেন মাত্র ১১ জন। আর আইসিটিতে ৯৭ পদের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৭৮টি।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, ১০টি ট্রেডে শূন্য ২৪৭টি পদের বিপরীতে প্রাথমিকভাবে ১৬৯ প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৩০ জন এবং নারী ৩৯ জন। ফলে এবারও ৭৮টি পদ শূন্য থাকছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, ‘একটি পদে আমরা প্রার্থী পাইনি। কিছু পদে শূন্যপদের চেয়েও আবেদন কম পড়েছে। আবার কিছু পদে বেশি আবেদনও পড়েছে। যারা নির্বাচিত হয়েছেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর তাদের নিয়োগে সুপারিশ করা হবে। আর যে পদগুলো শূন্য রয়েছে, তা পরে হয়তো গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূরণ করা হবে।’
এদিকে, ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর পদে শুধু এবারই নয়, আগের একাধিক গণবিজ্ঞপ্তিতেও প্রার্থী না পেয়ে পদ শূন্য রাখা হয়। ২০২১ সালে ৪৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ৬৬২ জন ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল এনটিআরসিএ। ওই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ফল প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায় ১৯১ পদে কোনো প্রার্থী আবেদন করেননি। ফলে পদগুলো শূন্য থেকে যায়।
আরও পড়ুন>> ট্রেড ইন্সট্রাক্টর নিয়োগের ফল প্রকাশ, ১৬৯ প্রার্থী নির্বাচিত
বারবার পদ শূন্য থাকা বা প্রার্থী না পাওয়ার পেছনে ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর পদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিও নিয়ে জটিলতা দায়ী বলে মনে করেন এ পদে চাকরিরতরা। ২০২২ সালে যারা দাখিল মাদরাসায় ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগ পেয়েছিলেন, তারা দীর্ঘদিন এমপিওভুক্ত হতে না পারে মানবেতর জীবনযাপন করেন।
প্রাপ্যতা না থাকায় তাদের এমপিওভুক্তি নিয়ে গড়িমসি করা হয়। এছাড়া বেতন-ভাতা কম এবং কারিগরি ক্ষেত্র থেকে যোগ্য প্রার্থী বের না হওয়ায় নিয়োগে বারবার পদ শূন্য থাকছে বলেও জানা গেছে।
২০২১ সালে ওয়েডিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশনে ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগ পাওয়া বজলুর রহমান বলেন, যত কাজ সে অনুযায়ী এ পদের শিক্ষকরা সম্মানি পান না। নানা রকম বঞ্চনা। এমপিওভুক্ত অন্য শিক্ষকরা যেটুকু সুযোগ-সুবিধা পান, সেগুলো আমাদের অনেক সহকর্মীরা পাচ্ছেন না। বিশেষ করে যাদের মাদরাসায় পদায়ন করা হয়, তাদের অবস্থা করুণ।
তিনি বলেন, ‘পেশাগত জীবনে আর্থিক নিরাপত্তা খুবই জরুরি। সেটা না পেলে আপনি বা আমি কেউই এ পদে চাকরির জন্য ছুটবো না। যদি আমাদের মূল্যায়ন না করা হয়, তাহলে ধীরে ধীরে আরও বেশি পদ শূন্য থাকার নজির সৃষ্টি হবে।’
এএএইচ/ইএ/এএসএম
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য হলেন আবুল কাসেম ফজলুল হক
- ২ উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে প্রকল্পে ধীরগতি, ত্রিপক্ষীয় সভা করবে ইউজিসি
- ৩ চাকরির বয়স দুই বছর না হলে মাদরাসা শিক্ষকের বদলির সুযোগ নেই
- ৪ পাঠ্যবই ছাপাতে পাল্টা পদক্ষেপ এনসিটিবির, বেঁধে দিলো সময়সীমা
- ৫ ২৫ মার্চের আগে বই ছাপা সম্ভব নয় জানিয়ে চিঠি, পরক্ষণে চাইলেন ক্ষমা