ভিডিও EN
  1. Home/
  2. শিক্ষা

করোনায় শিশুদের লেখাপড়ায় ডিজিটাল-বৈষম্যের প্রভাব: ইউনিসেফ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:২০ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২৩

করোনায় শিশুদের লেখাপড়ার ওপর ডিজিটাল-বৈষম্যের ভয়াবহ প্রভাব রয়েছে। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজনেরও কম (১৮ দশমিক ৭ শতাংশ) দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেয়। মহামারির কারণে বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে সময় ধরে স্কুল বন্ধ ছিল, সেই সব দেশের একটি হলো বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) প্রকাশিত ‘‘ন্যাশনাল সার্ভে অন চিলড্রেন’স এডুকেশন ইন বাংলাদেশ ২০২১’’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনে শিশুদের লেখাপড়ার ওপর স্কুল বন্ধ থাকার প্রভাবের এ চিত্র উঠে এসেছে। জরিপটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফ।

জরিপে দেখা যায়, কোভিড-১৯ এর সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ের শিশুরা, যাদের ইন্টারনেট ও টেলিভিশন ব্যবহারের সুযোগ সীমিত এবং যাদের বাড়িতে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মতো সহায়ক ডিভাইসের অভাব রয়েছে। তাছাড়া শহর এলাকার শিশুদের (২৮ দশমিক ৭ শতাংশ) তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় কমসংখ্যক শিশু (১৫ দশমিক ৯ শতাংশ) দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশ নেয়।

বড়ধরনের ভৌগোলিক বৈষম্যের বিষয়টিও জরিপে উঠে এসেছে— যেখানে দেখা গেছে, দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার হার সবচেয়ে বেশি ছিল খুলনা ও ঢাকায় (যথাক্রমে ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ ও ২৩ দশমিক ১ শতাংশ) এবং সবচেয়ে কম ছিল ময়মনসিংহে (৫ দশমিক ৭ শতাংশ)।

সবচেয়ে কম বয়সী শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশগ্রহণের হার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের (নিম্ন মাধ্যমিকে ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ও উচ্চমাধ্যমিকে ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ) তুলনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের ক্ষেত্রে (১৩ দশমিক ১ শতাংশ) ছিল কম।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘শিশুদের ওপর মহামারির প্রভাব দেশজুড়ে এখনো একই রকম। শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও বেশি মাত্রায় অভিঘাত সহনশীল করতে ডিজিটাল-বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে।’

উদ্ভাবনী প্রতিকারমূলক শিক্ষাসহ পড়াশোনার ক্ষতি দূর করতে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারকে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।

জরিপের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, জরিপটি কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন দীর্ঘস্থায়ী স্কুল বন্ধের কারণে শিশুদের স্কুলে উপস্থিতি, স্কুলের বাইরে থাকা, ঝরেপড়া ও শেখার ক্ষতিসহ শিক্ষার অনান্য ফলাফলের ওপর প্রভাব বুঝতে সাহায্য করবে। এছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবে।

জরিপে বাল্যবিয়ে সম্পর্কিত মহামারি-পরবর্তী প্রাথমিক উপাত্তও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জরিপটি এক্ষেত্রে নিম্নমুখী প্রবণতা নির্দেশ করে, যা সতর্কতার সঙ্গে আশাবাদী হওয়ার কারণ। শিশুদের পরিস্থিতির ওপর দেশের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য জরিপ ২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস) অনুসারে, ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে। ২০২৪ সালে হতে যাওয়া পরবর্তী এমআইসিএস নিশ্চিত করবে যে, ‘ন্যাশনাল সার্ভে অন চিলড্রেন’স এডুকেশন ইন বাংলাদেশ ২০২১’ জরিপে নির্দেশিত শিশুবিয়ের ইতিবাচক নিম্নগামী প্রবণতা টিকে আছে কিনা।

আইএইচআর/এমএএইচ/জিকেএস