চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি
মামলার গ্যাঁড়াকলে ৬৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ
# আবেদনের সুযোগবঞ্চিত ইনডেক্সধারী শিক্ষক
# নিয়োগ স্থগিত রাখতে আদালতে চার মামলা
# চলতি মাসের শেষে ফল প্রকাশ করতে চায় এনটিআরসিএ
সারাদেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬৮ হাজার ৩৯০ জন শিক্ষক নিয়োগে গত বছর চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষাধিক আবেদন জমা হলেও ফল প্রকাশ করা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করায় আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করেছেন তারা। এতে ফল প্রকাশ নিয়ে গ্যাঁড়াকলে এনটিআরসিএ।
এনটিআরসিএ থেকে জানা যায়, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সংস্থাটি। এর মাধ্যমে এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ৩১ হাজার ৫০৮ জন এবং মাদরাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি স্কুল-কলেজে ৩৬ হাজার ৮৮২ জনসহ মোট ৬৮ হাজার ৩৯০ জন নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে আবেদন শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে। এতে এনটিআরসিএর নিবন্ধিত এক লাখ এক হাজারের বেশি প্রার্থী আবেদন করেন।
আরও পড়ুন>> ৬৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসিএর গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
এরই মধ্যে ইনডেক্সধারী কয়েকজন শিক্ষক আদালতে চারটি মামলা করেন। এখন মামলা মোকাবিলার পাশাপাশি ফলাফল তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এনটিআরসিএ। মামলা জটিলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হলে চলতি মাসের শেষের দিকে মেধাতালিকা অনুযায়ী নিয়োগ পাওয়া প্রার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. এনামুল কাদের খান জাগো নিউজকে বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন জমা পড়েছে এক লাখ এক হাজারের বেশি। যেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। চলতি মাসের শেষে দিকে ফলাফল প্রকাশ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এনটিআরসিএ সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে এ পর্যন্ত আদালতে চারটি মামলা দায়ের করেছেন নিয়োগপ্রত্যাশীরা। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইনডেক্সধারী (এমপিওভুক্ত) শিক্ষকদের আবেদন করার সুযোগ এমপিওভুক্ত নীতিমালায় দেওয়া হলেও এনটিআরসিএ সেটি বাতিল করে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করে। এর পরেই আদালতে মামলাগুলো দায়ের করেন চাকরিরত শিক্ষকরা। নীতিমালায় থাকার পরও কেন তাদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি, এটি জানতে আদালত থেকে রুল জারি করা হয়। রুলের জবাব দিতে এনটিআরসিএকে চার সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন>> ৬৮ হাজার পদে লক্ষাধিক আবেদন, এ মাসেই ফল প্রকাশ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিটকারী একজন প্রার্থী জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি শিক্ষকদের বদলি হওয়ার সুযোগ থাকলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রথম থেকে তৃতীয় নিয়োগচক্রে ইনডেক্সধারীদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হলেও চতুর্থ নিয়োগ চক্রে সেটি এনটিআরসিএ বাতিল করেছে। সে কারণে এবার কমে গেছে আবেদনের সংখ্যা।
তিনি বলেন, অনেকে বাড়ি-পরিবার ছেড়ে দীর্ঘদিন ধরে ভিন্ন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি সুবিধা না থাকায় এর মাধ্যমে পছন্দের প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ থাকে। সেটি স্থগিত করায় অনেকে সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ কারণে চারটি ভাগে আদালতে চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত থেকে এ বিষয়ে কারণ জানতে রুল জারি করলেও এখনো তার জবাব দেয়নি এনটিআরসিএ।
তাদের দাবি, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে যদি ইনডেক্সধারীদের সুযোগ দেওয়া না হয় তাহলে ফলাফল প্রকাশের পর যেসব শিক্ষক পদ শূন্য থাকবে সেগুলোতে বিশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হোক। যেখানে ইনডেক্সধারীদের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান একাধিক শিক্ষক।
এনটিআরসিএ সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, শিক্ষকদের মামলাজনিত কারণে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ফলাফল পিছিয়ে যেতে পারে। যদিও এ ফলাফল চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ফলাফল তৈরি করে রাখা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে সেটি প্রকাশ করবে এনটিআরসি।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত থেকে একটি রুল জারি করা হয়েছে। তার জবাব দ্রুততম সময়ে দেওয়া হবে। সারাদেশে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক শূন্য থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত সেখানে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না হলে অনেক শিক্ষার্থীর রেজাল্ট খারাপ হতে পারে। শিক্ষক শূন্য থাকায় প্রতিষ্ঠান অচল হয়ে পড়ছে তুলে ধরে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রাখতে এনটিআরসিএ থেকে আদালতে অনুরোধ জানানো হবে। এ অনুরোধ গ্রহণ করা হলে আগামী মাসের শেষ সপ্তাহে মেধা তালিকা অনুযায়ী আবেদনকারীদের মধ্যে নিয়োগ পাওয়া প্রার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে।
এমএইচএম/এএসএ/এমকেআর/এমএস
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য হলেন আবুল কাসেম ফজলুল হক
- ২ উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে প্রকল্পে ধীরগতি, ত্রিপক্ষীয় সভা করবে ইউজিসি
- ৩ চাকরির বয়স দুই বছর না হলে মাদরাসা শিক্ষকের বদলির সুযোগ নেই
- ৪ পাঠ্যবই ছাপাতে পাল্টা পদক্ষেপ এনসিটিবির, বেঁধে দিলো সময়সীমা
- ৫ ২৫ মার্চের আগে বই ছাপা সম্ভব নয় জানিয়ে চিঠি, পরক্ষণে চাইলেন ক্ষমা