পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধন: বিশেষজ্ঞ-তদন্ত কমিটিতে থাকছেন যারা
পাঠ্যবইয়ের ভুল-ক্রাটি ও দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে আলাদা দুটি কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রথমটি কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ কমিটি ও দ্বিতীয়টি তদন্ত কমিটি। দুটি কমিটিই সাত সদস্যবিশিষ্ট। বিশেষজ্ঞ কমিটির মেয়াদ ৩০ কর্মদিবস ও তদন্ত কমিটির ২১ কর্মদিবস। এ সময়ের মধ্যে তারা তদন্তকাজ শেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
আগামীকাল মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট মাধ্যমে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, বিষেশজ্ঞ কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল হালিমকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যবিশিষ্ট করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক মো. আজিজ উদ্দিন সদস্য সচিব করা হয়েছে।
>> পাঠ্যবইয়ের ভুল স্বীকার করে এনসিটিবির সংশোধনী
সদস্য হিসেবে রয়েছেন- শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওয়াহেদুজ্জামান চাঁন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) লুৎফর রহমান, কারিগরি মাদরাসা বিভাগের একজন উপ-সচিব, ইসলামি ফাউন্ডেশনের একজন পরিচালক ও মতিঝিল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল নাহার শাহীন রয়েছেন।
জানা গেছে, এ কমিটি পাঠ্যবইয়ে ভুলক্রটি, বির্তক সবকিছু পর্যালোচনা করবে। এ বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটর্ফম তৈরি করা হবে। দেশ-বিদেশ থেকে যে কেউ ভুল-অসংঙ্গতি পাঠাতে পারবেন। সেগুলো এ কমিটির সদস্যরা যাচাই করবেন। পাশাপাাশি অভিযোগ ওঠা পাঠ্যবইগুলো নতুনভাবে রিভিউ করা হবে। যেসব ভুলক্রটি চিহ্নিত করা হবে সেগুলো সংশোধন করতে পরামর্শমূলক একটি প্রতিবেদন পরবর্তী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
>> দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতায় পাঠ্যবইয়ে ভুল
অন্য তদন্ত কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তারকে আহ্বায়ক করে উপ-সচিব মিজানুর রহমানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে।
এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে যুগ্ম সচিব মোল্লা মিজানুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন পরিচালক, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের একজন উপ-সচিব, মাউশির পরিচালক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম খান, বিএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আব্দুল মান্নান মিয়াকে রাখা হয়েছে।
আগামীকাল মঙ্গলবার কমিটির তালিকা প্রকাশ করে একটি বিজ্ঞপ্তি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হবে। এরপর থেকে উভয় কমিটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সোমবার রাতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ দুই কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন।
>> পাঠ্যবইয়ে ভুল: অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা
সংশ্লিষ্টরা জানান, তদন্ত কমিটি মূলত পাঠ্যবইয়ে যেসব ভুলক্রটি ধরা পড়ছে তা কীভাবে হয়েছে, কারা এর সঙ্গে দায়ী সেসব ব্যক্তিদের খুজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে শস্তির সুপারিশ করবে। এ কমিটিকে ২১ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হবে। আজ সোমবার কমিটির রূপরেখা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশ করার কথা থাকলেও শিক্ষামন্ত্রীর অনুমোদন না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। সোমবার রাতে কমিটি রূপরেখা কিছুটা পরিবর্তন করে শিক্ষামন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পাঠ্যবইয়ের ভুলক্রটি চিহ্নিত ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে আলাদা দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হবে। এরপর থেকে কমিটির সদস্যরা কাজ শুরু করবেন।
>> পাঠ্যবইয়ে ‘ভুল’: দায় স্বীকার করে জাফর ইকবাল-হাসিনা খানের বিবৃতি
গত ২৪ জানুয়ারি রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে ভুল-ভ্রান্তি, তথ্য বিকৃতি ও ধর্মীয় উসকানি সংশোধনসহ জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে উচ্চপর্যায়ের দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
একটি কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত থাকবেন বলে জানান তিনি। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে ভুল-ভ্রান্তি সংশোধন সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
এমএইচএম/এমকেআর/এএসএম
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য হলেন আবুল কাসেম ফজলুল হক
- ২ উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে প্রকল্পে ধীরগতি, ত্রিপক্ষীয় সভা করবে ইউজিসি
- ৩ চাকরির বয়স দুই বছর না হলে মাদরাসা শিক্ষকের বদলির সুযোগ নেই
- ৪ পাঠ্যবই ছাপাতে পাল্টা পদক্ষেপ এনসিটিবির, বেঁধে দিলো সময়সীমা
- ৫ ২৫ মার্চের আগে বই ছাপা সম্ভব নয় জানিয়ে চিঠি, পরক্ষণে চাইলেন ক্ষমা