সরকারি কলেজ শিক্ষকদের দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি চলছে
অষ্টম পে-স্কেলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবিতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি চলছে। একই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দফতরে কর্মরত বিসিএস শিক্ষা ক্যাডাররাও কর্মবিরতি পালন করছেন। ফলে অচল হয়ে পড়েছে দেশের সব সরকারি কলেজ। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ডাকে মঙ্গলবার থেকে চলমান এই তিন দিনের কর্মবিরতি বৃহস্পতিবার শেষ হবে। এরপরও দাবি পূরণ না হলে তারা লাগাতার কর্মবিরতিতে যাবেন।
সব সরকারি কলেজে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। দেশের কোন কলেজেই একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও পরীক্ষা হয়নি। রাজধানীর ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, তিতুমীর কলেজ, বাঙলা কলেজ ঘুরে শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। দেশের ৩১০টি সরকারি কলেজেও একই অবস্থা। এতে কলেজ পর্যায়ে অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানে ভয়াবহ সেশন জটের আশংকা করছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অবিলম্বে শিক্ষকদের দাবি আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত সরকারের।
শিক্ষক নেতাদের অভিযোগ, শিক্ষা ক্যাডারের পদসমূহ ২য় ও ১ম গ্রেডে উন্নীতকরণের বিষয়টি অষ্টম পে-স্কেলে নেই। এর আগে শিক্ষা ক্যাডারের ৫ম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকরা পদোন্নতি পেয়ে ৪র্থ গ্রেডের অধ্যাপক হতেন। সেখান থেকে ৫০ শতাংশ অধ্যাপকরা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে ৩য় গ্রেডে উন্নীত হতে পারতেন। কিন্তু নতুন বেতন কাঠামোয় উচিত ছিল এই বৈষম্য নিরসন করে শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের মধ্য থেকে গ্রেড-১ নিশ্চিত করা। তা না করে উল্টো সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় অধ্যাপকদের ৪র্থ গ্রেড হতেই ‘অসম্মানজনকভাবে’ অবসরে যেতে হবে। অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোয় এসব পদমর্যাদা ও বেতনক্রম অবনমনের প্রতিবাদে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছেন তারা।
দাবি পূরণে সরকারকে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও দাবি আদায় না হওয়ায় ৪ ও ৫ জানুয়ারি পরীক্ষা বর্জনসহ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন সরকারি কলেজ শিক্ষকরা। এরপরে ১১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। দাবি আদায়ে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ৪ ধাপের তিন দিনব্যাপী পূর্ণদিবস কর্মবিরতি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নাসরিন বেগম জাগো নিউজকে বলেন, সপ্তম পে-স্কেলে অধ্যাপকদের ৫০ শতাংশ গ্রেড-৪ থেকে গ্রেড-৩-এ যেতে পারতেন। কিন্তু সিলেকশন গ্রেড বন্ধ করে দেয়ায় এ পথ বন্ধ হয়েছে। সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বন্ধ করায় প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপকরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কেননা অনেক বিষয়েই নিয়মিত পদোন্নতি নেই। এসব শিক্ষক পদমর্যাদা না পেলেও সিলেকশন গ্রেড-টাইম স্কেল পেয়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিপূরণ করতে পারতেন। কিন্তু অষ্টম পে-স্কেলে এসব রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এভাবে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন।
প্রসঙ্গত, তিন দিনের কর্মবিরতির পর দাবি আদায় না হলে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করবেন। এরপরও দাবি পূরণ না হলে ১৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন। ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
এনএম/এআরএস/পিআর
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ সরকারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, অবরোধ স্থগিত
- ২ বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব কি না, যাচাইয়ে সাতদিনের মধ্যে কমিটি
- ৩ বৈঠক করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তিতুমীরের ১৪ শিক্ষার্থী
- ৪ ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ: তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের দুঃখপ্রকাশ
- ৫ গুচ্ছ ভর্তি জটিল-বৈষম্যমূলক, থাকতে চায় না খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ও