ভিডিও EN
  1. Home/
  2. শিক্ষা

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই খোলা কোচিং সেন্টার

মুরাদ হুসাইন | প্রকাশিত: ০৮:৩১ এএম, ০৫ ডিসেম্বর ২০২১

গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস রোধে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২৫ নভেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখবে সরকার। তবে সে নির্দেশ আমলে না নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোলা রয়েছে কোচিং সেন্টার। কোনো কোনো কোচিং সেন্টার বাইরে বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে, আবার কোনো কোনোটি রাখঢাক না করে প্রকাশ্যেই কার্যক্রম চালাচ্ছে।

খোলা রাখার কারণ হিসেবে কোচিং সেন্টার সংশ্লিষ্ট প্রায় সবাই বলছেন, তারা নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালাচ্ছেন, ক্লাস পরীক্ষা নিচ্ছেন না। অন্যদিকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

রাজধানীর গ্রিন রোডে সরেজমিনে দেখা গেছে, ফার্মগেটের কনকর্ড টাওয়ারের চতুর্থ তলায় থাকা সানরাইজ কোচিং সেন্টার খোলা রয়েছে। সেখানে নিয়মিত কার্যক্রম চলছে।

jagonews24

কোচিং সেন্টারের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিষ্ঠানের মালিক কোচিং খোলা রাখতে বলেছেন। আমাদের কিছু করার নেই। পরীক্ষার সময় কখনো এটি বন্ধ রাখা হয়নি।

তবে সানরাইজের মালিক ইঞ্জিনিয়ার মির্জা নুর আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইলে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।

১৩১/বি গ্রিন রোডের জাহানারা গার্ডেন ভবনে গিয়ে দেখা যায় ‘ইউনিএইড’ কোচিং সেন্টার খোলা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি কোচিং শুরু করতে তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করাচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে।

জানতে চাইলে কোচিং সেন্টারটির ম্যানেজার আরিফ জাগো নিউজকে বলেন, করোনায় দীর্ঘদিন আমাদের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এইচএসসি পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির কোচিং ক্লাস শুরু হবে। এ কারণে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে অফিস খোলা রাখা হচ্ছে।

jagonews24

গ্রিন রোর্ডের ১১২ নম্বর ভবনের শাজেদা ম্যানশনের তৃতীয় তলায় খোলা রয়েছে আইকন নামে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং সেন্টার।

প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার নূর ইসলাম বলেন, কিছু দিন পরই আমাদের মৌসুম শুরু হচ্ছে। এ কারণে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে অফিস খোলা।

কোচিং বন্ধ রাখতে সরকারি নির্দেশনা জেনেও তারা ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান নূর ইসলাম।

একই ভবনে রয়েছে প্যারাগন কোচিং সেন্টার। তারাও এক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির জন্য শিক্ষার্থী ভর্তি করছেন। এ কোচিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদ জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে আমরা ক্লাস বন্ধ রেখে শুধু ভর্তি ও অফিসের কাজ করছি।

সেখান থেকে একটু সামনে এগিয়েই ইউসিসি কোচিং সেন্টার। বাহিরে বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে ভেতরে খোলা রেখে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির জন্য শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে সেন্টারটিতে। দ্বিতীয় তলায় চারটি ডেস্কে ভর্তি কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে।

এ নিয়ে ইউসিসির মালিক ও অ্যাসোসিয়েন অব স্যাডো এডুকেশনের সভাপতি কামাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার পর থেকে ব্যাচভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির ক্লাস শুরু হবে। এখন অফিস খোলা রেখে শুধু শিক্ষার্থী ভর্তি ও তথ্য দেওয়া হচ্ছে।

jagonews24

তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষার কোচিং সেন্টার থেকে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়নি। তারপরও পাবলিক পরীক্ষার আগে সরকারিভাবে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। করোনায় প্রায় দুই বছর আমাদের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ ছিল। কোচিং বন্ধ রাখলেও আমাদের ভবন ভাড়া, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করতে হচ্ছে। বন্ধ থাকলে আমাদের চরমভাবে আর্থিক সংকটে পড়তে হচ্ছে। এ কারণে অনেক কোচিং বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বন্ধ রাখলে আমাদেরও প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে। তারপরও সরকারি নির্দেশনা মেনে ক্লাস বন্ধ রেখে শুধু শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে।

এছাড়া গ্রিন রোডের ল্যাঙ্গুয়েজ কোচিং সেন্টার একুশ, মাহফুজ স্যার ক্লাব, নিউ ইরা ট্রেনিং সেন্টার, মেডিকেল ভর্তি কোচিং রেটিনা, উন্মেষ, একাডেমিক ও ভর্তি কোচিং উদ্ভাসসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ব্যক্তিগত কোচিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, পাবলিক পরীক্ষা চলাকালে কোচিং সেন্টার বিষয়ে জিরো টলারেন্স ভূমিকা পালন করা হচ্ছে। যারা সরকারি বন্ধের নির্দেশনা অমান্য করে প্রতিষ্ঠান খোলা রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিদিন অভিযান চালিয়ে তাদের আটক ও কোচিং বন্ধ করে দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পাবলিক পরীক্ষা চলাকালে কোচিং সেন্টারের জন্য দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সমন্বয় করে কাজ করছে। যারা নির্দেশনা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএইচএম/এমএইচআর/এইচএ/এমএস