প্রাথমিকে বিস্কুট বিতরণ বন্ধ, ক্লাসে কমছে উপস্থিতি
করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে সরকার। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সব পর্যায়ে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তবে করোনা আতঙ্কে প্রাথমিকে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি এখনো কম। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে প্রাথমিকে উপস্থিতি বাড়ানোর চেষ্টা করছেন শিক্ষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের চেয়ে গ্রামের দিকে প্রাথমিকে উপস্থিতি কম। বিশেষ করে দারিদ্রপীড়িত এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আরও কমেছে। একদিকে করোনা আতঙ্ক, অন্যদিকে বিস্কুট বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসতে অনীহা দেখাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে উপস্থিতি বাড়াতে বিস্কুট বিতরণ কার্যক্রম শুরু করার তাগিদ দিচ্ছেন শিক্ষকরা।
তবে ‘দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় বিস্কুট বিতরণে ‘স্কুল ফিডিং প্রকল্প’-এর মেয়াদ বাড়লেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ কমায় গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সব স্কুল-কলেজে ক্লাসরুমে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। শুরুতে দেশের ৮টি বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার ৮০ শতাংশের বেশি হলেও বর্তমানে ঢাকা বিভাগ ছাড়া অন্য বিভাগে উপস্থিতির হার কমছে।
দারিদ্রপীড়িত কয়েকটি জেলার শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা আতঙ্কের পাশাপাশি বিস্কুট বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসছে না। তাদের স্কুলে আনতে শিক্ষকরা নানাভাবে চেষ্টা করলেও তাতে তেমন লাভ হচ্ছে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিস্কুট বিতরণ কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানান তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শর্তসাপেক্ষে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাস প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে গত ১৭ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় পরিকল্পনা কমিশন। এর এক সপ্তাহ পর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে (ডিপিই) জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই চিঠি পেয়ে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অথচ এখন পর্যন্ত অর্থ ছাড়ের কোনো অগ্রগতি নেই।
অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক সোহেল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘নতুন করে ছয় মাস প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ালেও সেই চিঠি মন্ত্রণালয় থেকে দুই মাস পর তারা পেয়েছেন। এ প্রকল্পের তহবিলে ৪৭০ কোটি টাকা থাকলেও ছয় মাসের জন্য ৩০১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এডিপিতে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় বিস্কুট ক্রয় ও বিতরণ কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘অর্থ ছাড়ের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকে চিঠি দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করতে বলা হবে।’
তবে ঠিক কবে থেকে বিস্কুট বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হবে, তা কেউ জানেন না বলে জানান অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক সোহেল আহমেদ।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সাল থেকে দেশের দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি শুরু হয়। প্রকল্পের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ১০৪টি উপজেলায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন ৭৫ গ্রামের এক প্যাকেট বিস্কুট বিতরণ করার কথা।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘এডিপিতে বরাদ্দ ছিল না। বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে কার্যক্রম শুরু হবে।’
এমএইচএম/এএএইচ/এমএস
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ২ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৩ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা করার নির্দেশ
- ৫ পিএইচডি-এমফিলধারী ২০৬ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিলো জমিয়াতুল মোদার্রেছীন