নবম-দশম শ্রেণিতে থাকছে না বিভাগ বিভাজন
অষ্টম থেকে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই শিক্ষার্থীদের একটি বিভাগ পছন্দ করতে হতো। অর্থাৎ বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের যেকোনো একটিতে যেতে হতো। তবে নতুন প্রণীত জাতীয় শিক্ষাক্রমে এ বিভাজন থাকছে না। নবম ও দশম শ্রেণিতে সব শিক্ষার্থীই একই বিষয় পড়বে।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘নবম ও দশমে শিক্ষার্থী সবাই একই বিষয়ে পড়াশোনা করবে। এ পর্যায়ের কোনো শিক্ষার্থী বিশেষ কোনো বিষয়ে পারদর্শী থাকলে, তাকে সে বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। তবে উচ্চমাধ্যমিক অর্থাৎ এইচএসসি থেকে শিক্ষার্থীদের আগের মতো বিভাগ বিভাজন করতে হবে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত রূপরেখা উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
পরে সচিবালয়ের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রূপরেখা নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডা. দীপু মনি।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে আগামী বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ১০০টি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন এ শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হবে। ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। আর ২০২৫ সালে পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে। এতে শিক্ষাক্রম অনুযায়ী নবম শ্রেণি থেকে গ্রুপের বিভাজন আর থাকবে না। শিখন সময় কতটা হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি ধারাবাহিক মূল্যায়নেও গুরুত্ব দিয়েছি। দিনের একটি সময় শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের মতো করে সময় কাটাতে পারে, সেজন্য দিনের একটি সময় তাদের সুযোগ করে দেওয়া হবে।’
দীপু মনি জানান, আগামী বছর থেকে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাইলটিং শুরু হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ১০০টি প্রতিষ্ঠানে পাইলটিং হবে। তার মধ্যে কারিগরি ও মাদরাসাকে যুক্ত করা হবে। আর ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শুরু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণি এবং ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম শুরু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে পুরো শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘দশম শ্রেণির কারিকুলাম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা হবে। আগে নবম-দশম মিলে পাবলিক পরীক্ষা হতো। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দু’টি পরীক্ষা নিয়ে সেই দুই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল দেওয়া হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে নতুন কারিকুলাম পাইলটিং করে পরবর্তী বছর থেকে আমরা তা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে আমাদের প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করতে হচ্ছে। নতুন করে গত বছর আমরা কাজ শেষ করে সেটি বাস্তবায়নের দিকে যেতে পারতাম। যেহেতু আমরা সেই সময়টুকু পাইনি, সে কারণে ২০২২ সালে পাইলটিংয়ে যাচ্ছি, ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে। চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে শিখনজ্ঞানের ওপর ৬০ শতাংশ মূল্যায়ন ও ধারবাহিকভাবে ৪০ শতাংশ মূল্যায়ন (বছর শেষে সাময়িক পরীক্ষার মাধ্যমে) করা হবে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা, ধর্মশিক্ষা, শিল্পকলা এগুলো শতকরা শিখন ফলের ওপর মূল্যায়ন করা হবে। ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে শিখনজ্ঞানের ওপর শতকরা ৬০ ভাগ ও ধারাবাহিক সামষ্টিক মূল্যায়নের ৪০ ভাগ নম্বর দেওয়া হবে। এছাড়াও জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা ও শিল্পকলা শতভাগ শিখন মূল্যায়ন করা হবে।’
এমএইচএম/এএএইচ
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ২ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৩ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা করার নির্দেশ
- ৫ পিএইচডি-এমফিলধারী ২০৬ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিলো জমিয়াতুল মোদার্রেছীন