শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সন্তানদের মাদরাসায় দিচ্ছেন অভিভাবকরা
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে খোলা রয়েছে হাফিজি ও কওমি মাদরাসা।
সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশু শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার গতির ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে ঝালকাঠিতে অভিভাবকরা ঝুঁকছেন মাদরাসার দিকে। কারণ তারা আশঙ্কা করছেন, এ অবসর সময়ে পড়াশুনার চাপ না থাকায় শিশুরা পথভ্রষ্ট হয়ে যেতে পারে।
অভিভাবকরা জানান, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সাধারণ স্কুল-মাদরাসা বন্ধ। ছাত্র-ছাত্রীদের অটো পাসের মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। যারা উপরের ক্লাসের ছাত্র তারা নিজেদের মতো করে পড়াশুনা করছে। কিন্তু যারা শিশু তারা স্কুলে বা মাদরাসায় না গেলে পড়াশুনা করতে চায় না। তাই কেউ সন্তানকে হাফিজি মাদরাসায়, আবার কেউ কওমি মাদরাসায় ভর্তি করছেন।
অভিভাবক মাসুম বিল্লাহ লিটন বলেন, ‘২০১৯ সালে নুরানি শিক্ষা নিয়ে তৃতীয় শ্রেণির পড়াশুনা শেষ করেছে ছেলে নাইম। ২০২০ সালে স্থানীয় একটি মাদরাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি করেছিলাম। করোনার কারণে মাদরাসা বন্ধ রয়েছে। বাসায়ও ঠিক মতো পড়তে চাচ্ছে না। তাই এ বছর হাফিজি মাদরাসায় ভর্তি করে দিয়েছি। যাতে শিক্ষাগ্রহণের ধারাবাহিকতা থাকে।
ঝালকাঠি জেলায় হাফিজি মাদরাসা কতটি রয়েছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে এক মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা শহিদুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠি শহরে বেসরকারি হাফিজি মাদরাসা রয়েছে ১৮টি। এসব মাদরাসায় স্বাভাবিকের চেয়ে এ বছর কুরআন মুখস্থকরণ শিক্ষা নিতে শিক্ষার্থীদের আগমনের সংখ্যা বেশি।
ঝালকাঠি জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, এ জেলায় কওমি মাদরাসা রয়েছে ২৬টি। সবচেয়ে বেশি রয়েছে রাজাপুর উপজেলায়। আর কম রয়েছে নলছিটি উপজেলায়। সদর উপজেলায় ৫টি, নলছিটি উপজেলায় ২টি, কাঁঠালিয়া উপজেলায় ৪টি এবং রাজাপুর উপজেলায় ১৫টি।
ঝালকাঠি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মো. ফোরকান হোসেন জানান, সরকারি কোনো অনুদান ছাড়াই দানের উপর ভিত্তি করে মাদরাসাগুলো পরিচালিত হয়। এতে আরবিসহ উর্দু ও ফার্সি ভাষায় কুরআনের তাফসীর, হাদিস, ফিকাহ পড়ানো হয়। অনেক মাদরাসায় নূরানি বিভাগও রয়েছে। কওমি মাদরাসার অনেকগুলোর মধ্যে আবার হাফিজি সংযুক্ত রয়েছে।
বর্তমানে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশু শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের মাদরাসায় পাড়ানোর দিকে আগ্রহী হচ্ছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
আতিকুর রহমান/জেডএইচ