টিউশন ফির নির্দেশনায় অসন্তোষ অভিভাবকদের
বেসরকারি স্কুল-কলেজে টিউশন ফির সঙ্গে অতিরিক্ত ফি আদায় না করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে এ নির্দেশনায় সন্তোষ নয় অভিভাবকরা। করোনা পরিস্থিতির কারণে আর্থিক সঙ্কটে থাকা অভিভাবকদের টিউশন ফি মওকুফের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অপ্রয়োজনীয় ফি আদায় করা যাবে না। একই সঙ্গে আর্থিক সঙ্কটে থাকা অভিভাবকদের সন্তানদের টিউশন ফির কিছুটা ছাড় দিয়ে পরিশোধ করার নির্দেশনাও দিয়েছে মাউশি।
তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না সেদিকেও খেয়াল রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তবে অধিদফতরের এমন সিদ্ধান্তে শিক্ষকরা খুশি থাকলেও টিউশন ফি মওকুফের সুনির্দিষ্ট খাত উল্লেখ না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
তাদের দাবি, এটি একটি গোঁজামিলের নির্দেশনা। সরকারের উচিত কোন কোন খাত থেকে টিউশন ফি ছাড় দেয়া হবে সেটি নির্ধারণ করে দেয়া। তাহলে এই প্রকৃতপক্ষে অভিভাবকরা উপকৃত হবে।
জানতে চাইলে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, আমরা এমন নির্দেশনা চাইনি। যারা পুরোপুরি আর্থিক সঙ্কটে আছে তাদের জন্য পুরোটাই ফ্রি টিউশন ফি করতে হবে। আর যারা মোটামুটি আর্থিক সঙ্কটে আছে তাদের জন্য হাফ টিউশন ফি করতে হবে। আর টিউশন ফির ক্ষেত্রে কোন কোন খাত থেকে বাদ দেয়া হবে সেটিও নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।
শিক্ষা অধিদফতরেরর নির্দেশনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, এটির মাধ্যমে উভয়দিক রক্ষা হবে। সবাই উপকৃত হবে।
বেসরকারি একটি কলেজের শিক্ষক ওমর ফারুক জানান, টিউশন ফি গ্রহণে কিছুটা ছাড় দিতে বলা হয়েছে। এতে অভিভাবকরাও যেমনিভাবে উপকৃত হবে তেমনিভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপকৃত হবেন।
আরেক শিক্ষক মারুফ হাসান জানান, সরকার ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দীর্ঘদিন শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না। টিউশন ফি আদায় না করলে শিক্ষকরা চলবে কি করে? সব দিক বিবেচনা করতে হবে।
বুধবার মাউশি থেকে বলা হয়েছে, পূর্বাপর বিষয়গুলো বিবেচনা করে মাউশির আওতাধীন বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ (এমপিওভুক্ত ও এমপিওবিহীন) শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি গ্রহণ করবে কিন্তু অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনো ফি গ্রহণ করবে না বা করা হলে তা ফেরত দেবে অথবা তা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করবে।
এছাড়া অন্য কোনো ফি যদি অব্যয়িত থাকে তা একইভাবে ফেরত দেবে বা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করবে। তবে যদি কোন অভিভাবক চরম আর্থিক সঙ্কটে পতিত হন, তাহলে তার সন্তানের টিউশন ফির বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনায় নেবেন।
জিয়াউল কবির দুলু বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ক্লাসের বাইরে। যেসব ফি মওকুফ করেছে এগুলোতো আমাদের সন্তানরা এমনিতে ব্যবহার করেননি। আমাদের দাবি টিউশন ফি মওকুফ ফুল ফ্রি বা হাফ ফ্রি করতে হবে।
মাউশির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক জানান, আমাদের অভিভাবকদের অসুবিধার কথা ভাবতে হবে। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলাে যেন বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে না যায় কিংবা বেতন না পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন যেন চরম সঙ্কটে পতিত না হয় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন যেন কোনো কারণে ব্যাহত না হয় সে বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যত্নশীল হতে হবে।
কোভিড-১৯ এর কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে।
এমএইচএম/জেএইচ/এমকেএইচ
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ২ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৩ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা করার নির্দেশ
- ৫ পিএইচডি-এমফিলধারী ২০৬ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিলো জমিয়াতুল মোদার্রেছীন