বিএম কলেজের ছাত্রলীগ নেত্রীকে নোটিশ
শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বরিশাল বিএম কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্স শেষ পর্বের ছাত্রী ছাত্রলীগ নেত্রী হেনা আক্তারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয়ে এক জরুরি সভা এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আবাসিক হোস্টেলে থেকে রাতের আধারে ছাত্রী নিবাস থেকে বের হওয়াসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। একই সঙ্গে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রলীগ নেত্রীকে গভীর রাতে বের হতে সাহায্য করায় বরখাস্ত করা হয়েছে ছাত্রী নিবাসের দারোয়ান আ. মালেক তালুকদারকে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী নজরুল ইসলাম এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, মাদকাসক্ত ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে নজরদারীতে রাখা হয়েছে ছাত্রী নিবাসের আরো পাঁচ নেত্রীকে।
বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রী নিবাসের আবাসিক সহকারী তত্ত্বাবধায়ক ও রাস্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম নাসির উদ্দিন জানান, বুধবার রাতে ছাত্রী নিবাসের ২নং কাকুলী ভবনের ১০০৫ নং বেডের ছাত্রী হেনা আক্তার দারোয়ানের মাধ্যমে বাহিরে চলে যায়। এমন অভিযোগ মাঝে মাঝে অনেকের বিরুদ্ধে শোনা গেছে। তবে ছাত্রলীগ নেত্রীরা কোথায় যায় সে বিষয়ে তারা কোনো উত্তর দেননি।
সহকারী তত্ত্বাবধায়ক নাসির উদ্দিন বলেন, এর প্রেক্ষিতে জরুরি সভা করে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ওই ছাত্রলীগ নেত্রীকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। তিন কার্য দিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বরখাস্ত করা হয়েছে ছাত্রী নিবাসের দারোয়ান আ. মালেক তালুকদারকে।
হেনাসহ কয়েক নেত্রীর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এমনটা শোনা গেলেও তারা এখনও কোনো প্রমাণ পাননি।
ছাত্রী নিবাস সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেত্রী হেনা আক্তার, সাদিয়া, নাঈমা, আশা, মনিরাসহ বেশ কয়েকজন নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে রাতেও অবাধে যাতয়াত করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রী ভর্তির নামে উৎকোচ নেয়া, ডায়নিংয়ে প্রভাব বিস্তার, নানা অনুষ্ঠান পরিচালনার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
বিশেষ করে হেনাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনা জেনেও ছাত্রী নিবাসের কয়েকজন সহকারী তত্ত্বাবধায়কসহ সংশ্লিষ্টরা কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় পাঁচ ছাত্রীকে নজরদারীর আওতায় আনা হয়েছে বলে কলেজের দায়িত্বশীল একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
গাঙ্গুলী ছাত্রী নিবাসের ২নং কাকুলী ভবনের সহকারি তত্ত্ববধায়ক ও ইসলামী শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ জানান, নিয়ম কানুন ভঙ্গ প্রমাণিত হওয়ার কারণেই ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এমন অভিযোগ অনেকের বিরুদ্ধেই আছে। তবে তিনি এজন্য আবাসিক তত্ত্বাবধায়ককে দায়ী করেছেন।
তবে হেনা আক্তার জানান, তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের গ্রুপিং রাজনীতির শিকার। তার চাচাত বোন হাসপাতালে ভর্তি থাকায় তিনি বুধবার রাত ২টায় ছাত্রীনিবাসে ফিরেছিলেন। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ এ ঘটনাকে পুঁজি করে তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর স ম ইমানুল হাকিম জানান, বর্তমানে তিনি কর্মস্থলে নেই। তবে নিয়মাবলী ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ছাত্রীনিবাস কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যারা বিধি বিধান না মানবে তারা ছাত্রীনিবাসে থাকার যোগ্যতা হারাবে বলেও জানান তিনি।
সাইফ আমীন/এআরএ/পিআর
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এমন চাকরি ছাড়া কিছুই ভাবতে দিচ্ছে না
- ২ পাঠ্যবইয়ে ত্রুটি, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রীর ছোট ভাইকে শোকজ
- ৩ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ৪ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৫ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা