ভিডিও EN
  1. Home/
  2. শিক্ষা

ভিকারুননিসা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিতর্কিত আদেশ বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:০৫ পিএম, ০৭ জুলাই ২০১৯

বিতর্কের মুখে এবার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ স্থগিত করে জারি করা আদেশ সংশোধন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন আদেশে অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল থাকলেও গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিবসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে জারি করা রহস্যজনক আদেশের পুরো অংশই বাদ দেয়া হয়েছে।

রোববার (৭ জুলাই) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের দেয়া আদেশে বলা হয়েছে, ‘প্রক্রিয়া যথাযথ না হওয়ায় নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করা হলো। বিধিমালা অনুসরণ করে অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য নিয়োগ কার্যক্রম পুনরায় আরম্ভের জন্য অনুরোধ করা হলো।’

নতুন আদেশে রাখা হয়নি কোনো নিষেধাজ্ঞা। অথচ নিয়োগ নিয়ে নামি এ প্রতিষ্ঠানে চলা বিতর্কের মধ্যেই বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়েছিল, ‘এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য ইতোপূর্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের নিয়োগ কমিটির সদস্যদের ভবিষ্যতে এ প্রতিষ্ঠানের মতো অন্য কোনো স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার অনুরোধ করা হলো।’

ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানটির সেই সময়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার, সদস্য আতাউর রহমান ও ডা. মজিবুর রহামান। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক শাহেদুল খবীর চৌধুরী এবং ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌস আরা।

আদেশ সংশোধন সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, মূলত প্রতিষ্ঠানটিতে সক্রিয় একটি বিশেষ সিন্ডিকেটের যোগসাজশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা আগের আদেশটি জারি করেছিলেন। ফায়দা হাসিল করতে সরকারি ও বেসরকারি কয়েকজনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন সেই কর্মকর্তারা, যা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা বিধিমালা, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ নিয়োগ বিধিমালাসহ সব ধরনের বিধির বাইরে। এমন আদেশ জারির পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের বিষয়ে এভাবে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়া যায় কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমনকি মন্ত্রণালয়ের এমন আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ারও ঘোষণা দেন গভর্নিং বডির সাবেক সদস্যরা।

এ অবস্থায় রোববার বিষয়টি নজরে আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের। তিনি দ্রুত আগের আদেশ থেকে নিষেধাজ্ঞার অংশ তুলে দিয়ে আদেশ জারি করতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘আমরা আগের আদেশের ওই অংশটি বাদ দিচ্ছি। ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি। বোর্ড এখন যে আদেশ দেবে সেটাই চূড়ান্ত হবে।’

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা আদেশ ওয়েবসাইটে দিয়েছি। সেখানে কারো বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা নেই। তাছাড়া আগের গভর্নিং বডির সেই সদস্যরা তো এখন আর সেখানে নেই।’ তাহলে আগের আদেশ কেন দেয়া হয়েছিল? এমন প্রশ্নে বোর্ড চেয়ারম্যান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এমন কাণ্ড, গভর্নিং বডির সেই সাবেক সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার বলেন, এখানে নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। বিধি অনুসারেই হয়েছে। আসলে নিয়োগ নিয়ে সক্রিয় একটি জামায়াতি সিন্ডিকেট অর্থের বিনিময়ে বিতর্কিত আদেশ জারি করিয়েছে। জামায়াতি এ চক্রটি চেয়েছে তাদের একজন নিয়োগ হোক। কিন্তু তিনি লিখিত পরীক্ষায় এক নম্বর পেয়েছিল বলে তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়। তারা চায় না প্রতিষ্ঠানটি ভালোভাবে চলুক।

উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটিতে এখন কার্যকর আছে অ্যাডহক কমিটি। ফলে তারাও বিধিমালা অনুসারে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে পারবে না। অথচ প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৯ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে।

এমএইচএম/এএইচ/এমএস

আরও পড়ুন