ভিডিও EN
  1. Home/
  2. শিক্ষা

টিটিসি নিয়ে মাউশির আদেশে চিন্তার ভাঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৪৯ পিএম, ১৯ মে ২০১৯

লাল তালিকার বাইরের সরকারি ও বেসরকারি অন্য সব টির্চাস ট্রেনিং (টিটি) কলেজ থেকে অর্জিত সনদধারীদের বিএড স্কেল প্রদান না করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর)। গত ১০ মে এ আদেশ জারির পর বৈধ টিটি কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে হতাশা, দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি।

লাল তালিকাভুক্ত ২৩টি বেসরকারি টিটি কলেজের তালিকা সংযুক্ত করে মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-২) দুর্গা রানী শিকদার স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে- এসব টিটি কলেজ থেকে অর্জিত শিক্ষকদের বিএড স্কেল প্রদানের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মাউশিকে নির্দেশনা দিয়েছে। বিষয়টি মাউশির সকল আঞ্চলিক উপ-পরিচালক, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের অবহিত করা হয়। কিন্তু এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে ২৩টি টিটি কলেজের বাইরে অন্য টিটি কলেজ থেকে অর্জিত সনদের বিপরীতে বিএড স্কেল প্রদান করা হচ্ছে। এতে বড় অংকের সরকারি আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এমতাবস্থায় ২৩টি টিটি কলেজের বাইরে অন্য কোনো টিটি কলেজ থেকে অর্জিত সনদের বিপরীতে বিএড স্কেল প্রদান না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। ইতোমধ্যে প্রদান করা হলে তার তথ্যাদি মাউশিতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্গা রানী শিকদার বলেন, আদালতের নির্দেশনার আলোকে ২৩টি কলেজের সনদ গ্রহণের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। চিঠিতে বিস্তারিত বলা হয়েছে। অন্য কলেজের সনদ কেন গ্রহণ করা হবে না জানতে চাইলে তিনি মাউশির পরিচালকের (মাধ্যমিক) সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

মাউশির এই নির্দেশনা জারির খবরে সারা দেশের সরকারি ১৪টি ও বেসরকারি ১০৪টি টিটি কলেজে বর্তমানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে ফরম পূরণ চলমান থাকায় অনেক বেসরকারি টিটি কলেজের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। নিরুপায় হয়ে রোববার বেসরকারি টিটি কলেজের শিক্ষক সমিতির নেতারা মাউশির ডিজির সঙ্গে দেখা করে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৯২ সাল থেকে ১৪টি সরকারি টিটি কলেজ ও ১০৪টি বেসরকারি টিটি কলেজ বিএড প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০০৮ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষণের মান নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে ৩৭টি বেসরকারি টিটি কলেজ লাল তালিকাভুক্ত করে। লাল তালিকার বাইরে থাকা টিটি কলেজগুলোও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত। এসব প্রতিষ্ঠান দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক গড়ে তুলতে বিএড প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। হঠাৎ করে লাল তালিকার বাইরে থাকা টিটি কলেজের সনদ গ্রহণ না করার আদেশ জারি করায় লাখো শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বিস্মিত হয়েছেন। মাউশির আদেশের কারণে বন্ধের হুমকিতে পড়েছে কলেজগুলো; যা সরকারের ‘শিক্ষা সম্প্রসারণ নীতির’ সহায়ক নয়।

জানতে চাইলে, বেসরকারি টিটি কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, মাউশির নির্দেশনার কারণে ছাত্ররা টাকা ফেরত চাচ্ছে। তারা ফরম পূরণ করতে চায় না। বিভিন্ন কলেজে বিক্ষোভ করেছে। তারা মনে করছে মাউশির তালিকায় কলেজের নাম না থাকায় তাদের সনদ গ্রহণযোগ্য হবে না। এখানে পড়াশোনা করে কী হবে? মাউশির তালিকায় ভালো কলেজগুলো এখন হুমকি মুখে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমিপওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সরকারি টিটি কলেজ থেকে বিএড ডিগ্রি অর্জন বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। যারা ননএমপিও ও শিক্ষক হয়নি তারা আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বিএড ডিগ্রি নিচ্ছে। সরকার থেকে বেসরকারি পাঁচটি টিটি কলেজ নির্বাচন করেছে সেগুলোরও নাম নেই।

মাউশি সূত্র জানায়, বেসরকারি টিটিসির কার্যক্রম তদারকির দায়িত্ব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুসরণ না করা, প্রশিক্ষণ না দিয়ে অর্থের বিনিময়ে সনদ প্রদান, অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকা এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অদক্ষতার অভিযোগে ৩৮টি বেসরকারি টিটি কলেজকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা। অনেকে যোগ্যতা না থাকলেও আদালতের দ্বারস্থ হয়ে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। আদালতের নির্দেশে লাল তালিকাভুক্ত ২৩টি কলেজ থেকে অর্জিত সনদ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।

জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, ২০১৭ সালে ৩৮টি বেসরকারি টিটিসিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। পরে ২৪টি প্রতিষ্ঠান আদালতে রিট করে তাদের পক্ষে রায় পায়। রিটের বাইরের ১৪টি টিটিসির বিষয়ে আগের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। তাদের কালো তালিকাভুক্তির মধ্যে রাখা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিএড-এমএড ডিগ্রি গ্রহণযোগ্যা হবে না।

তিনি বলেন, সম্প্রতি মাউশি থেকে জারি করা নির্দেশনায় কিছুটা ভুল রয়েছে। এটি সংশোধন করে নতুন করে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হবে। মূলত ১৪টি প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য হবে না। এ বিষয়টি স্পষ্ট করা করা হবে।

এমএইচএম/এনএফ/এমএস

আরও পড়ুন