শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন সেই তিন শিক্ষার্থী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির আশ্বাসে আমরণ অনশন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ঢাকা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে সমস্যা সমাধানে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসের কথা তাদের জানান ঢাকা কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর নেহাল আহমেদ। এ সময় অনশনে থাকা ৩ শিক্ষার্থীকে জুস খাইয়ে দেন তিনি।
উপাধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি সন্ধ্যায় একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা ক্লাবে ছিলাম ওখানে শিক্ষামন্ত্রীও ছিলেন। আমি চলমান সমস্যার কথা শিক্ষামন্ত্রীকে বললে তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে আমাকে আশ্বস্থ করেন।’
এর আগে সকাল ১১টায় অবস্থান কর্মসূচির পশাপাশি ৫ দফা দাবি নিয়ে নীলক্ষেতে আমরণ অনশনে বসেন ওই তিন শিক্ষার্থী। পরে তারা বিকেলে স্থান পরিবর্তন করে ঢাকা কলেজের সামনে বসে অনশন করেন।
তারা হলেন- ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের আবু নোমান রুমি, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের সাকিব ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাইফুল ইসলাম।
সেশন জট, ক্রুটিপূর্ণ ফলাফল, ফলাফল প্রকাশের বিলম্ব ও স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবনসহ নানা সমস্যা সমাধানের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন তারা।
নীলক্ষেতে ঢাবির অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে এ ঘোষণা দেন ঢাকা কলেজের ওই তিন শিক্ষার্থী। ৫ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন বলেও জানান তারা।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে সেশন জট, ক্রুটিপূর্ণ ফলাফল, ফলাফল প্রকাশের বিলম্ব ও স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবনসহ নানা সমস্যা সমাধানের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো
পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ত্রুটি মুক্ত ফলাফল প্রকাশসহ একটি বর্ষের সব বিভাগের ফলাফল একত্রে প্রকাশ করতে হবে। তারা উল্লেখ করেন- ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ২০১৬ সালের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল ২০১৮ সালে প্রকাশিত হলেও সব বর্ষে পাস থাকা সত্ত্বেও এখনো অনেকের সিজিপিএ আসেনি। তাই দ্রুত সিজিপিএ সমন্বয় করতে হবে। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ২০১৭ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের লিখিত পরীক্ষা ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই শেষ হলেও এখনো সব বিভাগের ফলাফল প্রকাশিত হয়নি।
ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স সব বর্ষের ফলাফল গণহারে অকৃতকার্য হওয়ার কারণ প্রকাশসহ খাতার পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন- যেমন ইডেনের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের ৩০০ জন শিক্ষার্থী প্রথমবর্ষে শুধু বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে ফেল করার পুনরায় সবার খাতা নিরীক্ষণের আবেদন করেন। পরবর্তীতে প্রকাশিত ফলাফলে ৩/৪ জন ছাড়া সবাই পাস করে।
সাত কলেজ পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন চাই। তাদের মতে, স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন না থাকায় সাত কলেজের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে। যেমন, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ২০১৬ সালের মাস্টার্স এবং ডিগ্রি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ২০১৭ সালের পরীক্ষা ২০১৯ সালে এসেও এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি।
প্রতিমাসে প্রত্যেকটা বিভাগে প্রতি কলেজে দুইদিন করে মোট ১৪ দিন ঢাবির শিক্ষকদের ক্লাস নিতে হবে। তাদের মতে- এটা যদি ঢাবির পক্ষে সম্ভব না হয়, তাহলে সাত কলেজের প্রশ্ন প্রণয়ন এবং খাতা মূল্যায়নের দায়িত্ব অবশ্যই সাত কলেজের শিক্ষকদের দিতে হবে এবং সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশসহ ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করা।
এমইউ/এনডিএস/এমএস
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ বুয়েটে প্রাক-নির্বাচনীতে যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ, নির্বাচিত ২৪২০৫
- ২ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছে ভর্তি পরীক্ষা, বদলে যাচ্ছে পদ্ধতিও
- ৩ এনসিটিবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাপ্তাহিকসহ সব ছুটি বাতিল
- ৪ ‘শিক্ষা ক্যাডার’ বাতিলের পরিকল্পনা থেকে সরে না এলে কঠোর কর্মসূচি
- ৫ পেছনের শিক্ষাক্রমে ফেরার লড়াই প্রাথমিক-মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের