অফিসে উপস্থিত নেই, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর
দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) দুই কর্মচারীকে বহিষ্কার ও ১২ কর্মকর্তাকে বদলির নির্দেশ দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। বুধবার ডিপিইতে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়ায় প্রতিমন্ত্রী এমন নির্দেনো দেন।
জানা গেছে, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বুধবার সকালে ডিপিইতে আকস্মিক পরিদর্শনে যান প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মকর্তার কক্ষে গিয়ে খোঁজ-খবর নেন। এ সময় হাজিরা খাতায় অনেক কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকলেও তার নিজ আসনে পাওয়া যায়নি। অনেকে আবার কয়েক দিনের স্বাক্ষর আগেই করে অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। কেউ আবার মাঝে মাঝে অফিসে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ পান মন্ত্রী।
উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রী পরিদর্শনে আসার পর বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে হাজিরা খাতা খতিয়ে দেখেন। সেখানে অফিস সহকারী সবনম মোস্তারী ও শামসুল হকের অগ্রিম স্বাক্ষর করার প্রমাণ পান মন্ত্রী। পরে তিনি এই দুই কর্মচারীকে সাময়িক বহিষ্কারের জন্য হাজিরা খাতায় মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন।
এছাড়াও স্বাক্ষর করেও অফিস উপস্থিত না থাকায় ডিপিই মহাপরিচালকের পিএস ফিরোজ করীর, এডিজির পিএস তাপস কুমারসহ ১২ কর্মকর্তাকে বদলি করতে হাজিরা খাতায় মন্তব্য লিখে তাতে স্বাক্ষর করেন। দ্রুত এটি বাস্তবায়নে ডিজিকে নির্দেশ দেয়া হয়। তবে এ সময় ডিজি অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়।
এদিকে দুপুর ২টার পর ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অনুপস্থিত দেখতে পাওয়া যায়। তাকে শোকজ করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, অধিদফতরে পরিদর্শনে এসে বেশ কিছু অনিয়ম চোখে পড়েছে। অনেক কর্মকর্তার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর থাকার পরও অনুপস্থিত পাওয়া গেছে। কারও অগ্রিম স্বাক্ষর পাওয়া গেছে, কেউ আবার মাঝে মাঝে অফিসে এসে চলে যান বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখানে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছেন ও যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যেখানে জাতি গঠন করার একটা মূলস্তম্ভ হিসেবে পরিচিতি, সেখানে যদি এমন ঢিলেঢালাভাবে চলে তবে এর দায় আমাদের ওপর আসে। এসব কারণে আমাদের কার্যক্রম জাতির কাছে বির্তকিত হয়ে যায়। এ বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে মাঠে নেমেছেন বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে প্রতিমন্ত্রীর পরিদর্শনের পর ডিপিইর প্রায় অর্থ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বিকেল ৫টায় অফিস ছুটি হলেও রাত ৯টা পর্যন্ত ডিজিসহ প্রায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে ডিপিইর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বুধবার সকালে প্রতিমন্ত্রী অধিদফতরে পরিদর্শনে আসেন। বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে মন্ত্রী মহাদয় পরিদর্শন করেন। এ সময় অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তার নির্ধারিত সিটে পাননি। দুইজন অফিস সহকারী হাজিরা খাতায় অগ্রিম স্বাক্ষর করেছে বলে দেখতে পান। পরে তিনি দুই কর্মচারীকে বহিষ্কার ও ১২ জন কর্মকর্তাকে বদলি করতে হাজিরা খাতায় মন্তব্য ও স্বাক্ষর দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে ডিজি স্যারকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
এমএইচএম/বিএ
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য হলেন আবুল কাসেম ফজলুল হক
- ২ উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে প্রকল্পে ধীরগতি, ত্রিপক্ষীয় সভা করবে ইউজিসি
- ৩ চাকরির বয়স দুই বছর না হলে মাদরাসা শিক্ষকের বদলির সুযোগ নেই
- ৪ পাঠ্যবই ছাপাতে পাল্টা পদক্ষেপ এনসিটিবির, বেঁধে দিলো সময়সীমা
- ৫ ২৫ মার্চের আগে বই ছাপা সম্ভব নয় জানিয়ে চিঠি, পরক্ষণে চাইলেন ক্ষমা