শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে মাদরাসা শিক্ষকদের আন্দোলন স্থগিত
টানা ছয়দিন অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর আন্দোলন স্থগিত করেছেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দাবি পূরণের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
জানা গেছে, সোমবার সচিবালয়ে সমিতির দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ আশ্বাস দেন। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সমিতির সভাপতি মাওলানা হাফেজ কাজী ফয়েজুর রহমান ও মহাসচিব কাজী মোখলেছুর রহমান বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে কাজী মোখলেছুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার কাগজপত্র চেয়েছেন। আমাদের বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি। বৈঠক শেষে শিক্ষক নেতারা চলমান আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রোদ-ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে গত ১ এপ্রিল থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সরকারীকরণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচির ৮ম দিনে আজ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী।
সমিতির সভাপতি মাওলানা হাফেজ কাজী ফয়েজুর বলেন, ১৯৯৪ সালে একই পরিপত্রে রেজিস্টার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বিগত সরকারের সময়ে ধাপে ধাপে বেতন বৃদ্ধি হতে হতে ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করা হয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সরকারি একই সিলেবাসে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলোতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। প্রাথমিকের মতো ৫ম শ্রেণিতে ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিকের শিক্ষকদের মতোই সরকারি বিভিন্ন কাজে অংশ নেন মাদরাসা শিক্ষকরা। মাস শেষে প্রাথমিকের শিক্ষকরা ২২ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। কিন্তু ইবতেদায়ি শিক্ষকরা তেমন কোনো বেতন পান না। তবুও তারা প্রাথমিক শিক্ষকদের মতো তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
সরকারীকরণসহ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের দাবির মধ্যে রয়েছে- স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা নীতিমালা ২০১৮ সংশোধন করে সহজ শর্তে সরকারীকরণ করা, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতি নবায়নের সহজ আইন প্রণয়ন করা, পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত সব শিক্ষককে বহাল রাখা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার স্থায়ী রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা।
দুজন আলিম শিক্ষকের মধ্যে একজন এইচএসসি (সমমান) শিক্ষক অন্তর্ভুক্ত করা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো প্রতিটি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার অফিসসহায়ক নিয়োগ প্রদান, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদের পিটিআই ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, ইবতেদায়ি মাদরাসার আসবাবপত্রসহ ভবন নির্মাণ, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের কোডপ্রাপ্ত ৬ হাজার ৯৯৮ ও মন্ত্রণালয়ের আবেদন করা মাদরাসাগুলোকে কোড দিয়ে সরকারীকরণ করা।
এমএইচএম/এমএসএইচ/জেআইএম
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ২ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৩ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা করার নির্দেশ
- ৫ পিএইচডি-এমফিলধারী ২০৬ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিলো জমিয়াতুল মোদার্রেছীন