বিশেষ মূল্যায়নে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত যাবে শিক্ষার্থীরা
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা তুলে দিতে কাজ শুরু হয়েছে। এই পদ্ধতি চালু হলে বিশেষ মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে পদোন্নতি দেয়া হবে। আগামী বছর থেকে এটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
রোববার দুপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সমাপনী এবং ইবতেদায়ি পাস শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে প্রাথমিক পর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। শিক্ষাবিদসহ বিশেষ ব্যক্তিদের পরামর্শের ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দিলেও একটি বিশেষ মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে পদোন্নতি দেয়া হবে। নতুন সিলেবাস তৈরিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এনসিটিবি একটি খসড়া তৈরি করেছে। পরবর্তীতে কর্মশালার আয়োজন করে সবার পরামর্শের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হবে।
ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমাতে বিভিন্ন মহল থেকে পঞ্চম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা তুলে দেয়ার দাবি রয়েছে। সেখানে কীসের ভিত্তিতে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা তুলে দেয়া হচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমাতে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চতুর্থ শ্রেণি এবং সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা আগের মতো আয়োজন করা হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে লিখিত বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৫ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে সাড়ে ৮২ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এর আলোকে এবারও সাড়ে ৮২ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে মেধা কোটায় (ট্যালেন্টপুল) বৃত্তি পাবে ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী। সাধারণ কোটায় বৃত্তি পাবে সাড়ে ৪৯ হাজার। মেধা কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্তরা ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ কোটায় ২২৫ টাকা করে বৃত্তির অর্থ পাবে।
তিনি বলেন, ঝরেপড়া রোধ, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি ও সুষম মেধা বিকাশের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে উপজেলাভিত্তিক বৃত্তি দেয়া হয়। ফলে সব শিক্ষার্থী বৃত্তি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে ও শিক্ষার মান বৃদ্ধি পায়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ফলে পিইসিতে পাস করে ৯৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ইবতেদায়িতে এ হার ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। দুই পরীক্ষা মিলিয়ে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষায় মোট ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। গত ১৮ থেকে ২৬ নভেম্বর দেশজুড়ে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এমএইচএম/এমএমজেড/জেআইএম