বইয়ের দাম কমাতে চান প্রকাশক ও বিক্রেতারা
স্কুল-কলেজে ঘুষ দেয়া বন্ধ করে বইয়ের দাম কমাতে চান প্রকাশক ও বিক্রেতারা। পাশাপাশি কমিশন কমিয়ে এবং ক্যাশব্যাক প্রথা বন্ধ করে বইয়ে লাভ কমাতে চান তারা। এই প্রক্রিয়ায় বইয়ের দাম বর্তমান অবস্থার চেয়ে ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। এতে ৪০০ টাকার একটি বই ৩২০ টাকায় পাবেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।
বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) বার্ষিক সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বর্তমানে বিক্রেতারা বইয়ের দামের ১৫ শতাংশ কমিশন পান। বছর শেষে ক্যাশব্যাক হিসেবে পান ১৫ শতাংশ। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি এবং শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতিগুলোকে উপহার-উপঢৌকন হিসেবে আরও ১০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয় বইপ্রতি। এসব বন্ধ করলে সবমিলে বইয়ের দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমবে।
বাপুস সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটনসহ একাধিক প্রকাশক নেতা বইয়ের দাম কমানোর এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ওই সভা শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আরিফ হোসেন ছোটন। অন্যান্যের মধ্যে সমিতির সহ-সভাপতি কায়সার-ই আলম প্রধান, শ্যামল পাল, শরীফ উল আলম, মির্জা আলী আশরাফ কাসেম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। সভায় এছাড়াও নির্ধারিত মূল্যেই কমিশন ছাড়া বই বিক্রি, নকল বই রোধে সমিতির কার্যকর ভূমিকা পালনসহ আরও বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তগুলো সমিতি নীতিমালা আকারে প্রকাশ করবে।
সাধারণ সভায় দুজন সহ-সভাপতি বলেন, স্কুলে যে উপহার-উপঢৌকন দেয়া হয় সেটা প্রকারান্তরে ঘুষ। আমরা ঘুষ দিয়ে বই পাঠ্য করব না। তখন সমবেত বিক্রেতারা সমস্বরে বলেন, আপনারা (প্রকাশক) ঐক্যবদ্ধ থাকলে এই অনৈতিকতা চর্চা বন্ধ হবে।
দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘শিক্ষিত জাতি গঠনে প্রকাশনা শিল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী, ভারতের পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্সের চেয়ারম্যান লেখক ও শিশুসাহিত্যিক কামরুল হাসান শায়ক।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সরকার একটি শিক্ষা আইন তৈরি করছে। এটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু এতে সহায়ক পাঠ্যবই নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে জ্ঞান ও সৃজনশীলতা বাধাগ্রস্ত হবে। বইয়ের জগতে বিশাল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। গল্প-উপন্যাস-কবিতা বই মুদ্রণ পৃষ্ঠপোষকতা হারাবে। পাঠ্যবই মুদ্রণও বিঘ্নিত হবে। আইনে বই সম্পর্কে যৌক্তিক বিধি তৈরির দাবি করেন প্রকাশকরা।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বইয়ের বিকাশ এবং এ ক্ষেত্রে যেকোনো প্রতিবন্ধকতা দূর করতে তার পক্ষ থেকে সবরকম সহায়তা থাকবে। তিনি নভেম্বরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজনের ঘোষণা দেন।
এমএইচএম/বিএ