ফেল করাও গুরুত্বপূর্ণ : স্যার রিচার্ড জে রবার্টস
যুক্তরাষ্ট্রের নোবেল বিজয়ী বিশিষ্ট বিজ্ঞানী স্যার রিচার্ড জে. রবার্টস বলেছেন, জীবনে ফেল করাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফেল করলেই সফলতা অনেক কাছে চলে আসে। আমার ফেলের অর্জন নোবেল বিজয়ী হতে সহায়তা করেছে।
বুধবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২তম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্যার রিচার্ড জে. রবার্টস বলেন, আমাদের জীবনের লক্ষ্যমাত্রা পরিবার থেকে ঠিক করে দেয়া হয়। তাই নিজেদের ইচ্ছা বা স্বপ্ন চাপা পরে যায়, সেটিকে আর বিকাশিত করা সম্ভব হয় না। তার দ্বারা নতুন কিছু উদ্ভাবন বা আবিষ্কার হওয়া সম্ভব হয় না। এক ধরনের হতাশা নিয়েই জীবন পার করে দেন। তাই সকল শিশু ও তরুণের অন্তরে লুকিয়ে থাকা স্বপ্নকে জাগাতে হবে। তবেই বাংলাদেশে অনেক নোবেল বিজয়ী তৈরি হবে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই নোবেল বিজয়ী বলেন, ‘আমার পদার্থ বিজ্ঞানের উপর আগ্রহ ছিল। এ বিষয়ে আমি অনেক পড়ালেখা করেছি। বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেরিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করেছি। এর সমধান করতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হয়েও আমি হতাশ হইনি। অবশেষে আমি তাতে সফল হয়েছি। এর অর্জন হিসেবে নোবেল বিজয়ী হতেও সহায়তা করেছে।’
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে রিচার্ড রবার্টস বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরলেও এদেশে রাজনৈতিক কিছু সমস্যা রয়েছে। সেসব কাটিয়ে শিশু ও তরুণদের এগিয়ে নিলে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীরা অনেক মেধাবী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে কাজ করে দেখেছি তারা অনেক মেধাবী, অনেক বড় বড় সমস্যাও তারা সমাধান করতে পারে। তাই আগামী প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা দেয়া সম্ভব হলে তারা বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান শক্তি তারুণদের নিয়ে, তারাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জাতির পিতার অবদান পড়াতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেশকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আবার অনেকে আইন অমান্য করে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ব্যবসার জন্য চলতে পারে না, সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে।
এ সময় জঙ্গি ও মাদকমুক্ত থাকতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের (২২তম) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মোট ৩ হাজার ৪৮৬ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীর হাতে সনদ তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে মেধাবী কৃতী শিক্ষার্থী হিসেবে দুই জনকে চ্যান্সেলর এবং নয় জনকে ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সদস্যবৃন্দ, উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম, উপ-উপচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক গিয়াস ইউ আহসান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএম/এমএমজেড/এমকেএইচ