মাদরাসা শিক্ষকদের যোগদানে জটিলতা কাটছে
চাকরিতে যোগদানে বিএড ডিগ্রি থাকা বাঞ্ছনীয় -নীতিমালায় এমন শর্ত থাকায় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশপ্রাপ্ত মাদরাসার কৃষি বিষয়ের শিক্ষকরা বিপাকে পড়েছিলেন। সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও তারা যোগদান করতে পারছিলেন না। তবে এ শর্তকে সাময়িকভাবে শিথিল করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে মাদরাসা শিক্ষকদের কর্মক্ষেত্রে যোগদানে জটিলতা কাটছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি শিক্ষা ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘যেহেতু নীতিমালায় একটি শর্তের কারণে মাদরাসার কৃষি বিষয়ের সহকারী শিক্ষকরা নিয়োগে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন, এ কারণে আমরা সেই শর্তকে আপাতত শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে আপাতত শর্তটি শিথিল করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখন মন্ত্রী চাইলে আমরা যত দ্রুত সম্ভব জিও জারি করব।’
২৩ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) যোগদানের শেষ দিন -এ সময়ের মধ্যে জিও জারি করা সম্ভব কি-না জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘যোগদানের সময় আরও এক মাস বাড়িয়ে দেয়ার জন্য আমরা এনটিআরসিএকে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এখন মন্ত্রী অনুমোদন দিলে জিও জারি করা হবে। তবে এই শিথিলতা কতদিন থাকবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’
তবে ৩ বছরের জন্য এ শর্ত শিথিল করে ওই সময়ের মধ্যে বিএড করার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে নির্দেশনা দেয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন সচিব।
এদিকে এনটিআরসিএ সূত্রে জানা গেছে, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিও নীতিমালায় মাদরাসার কৃষি বিষয়ের শিক্ষকদের বিএড ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ কারণে এনটিআরসিএ-এর সুপারিশপ্রাপ্ত হলেও দুই শতাধিক শিক্ষক যোগদান করতে পারছেন না। অথচ অন্য কোনো বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএড ডিগ্রিতে বাধ্যবাধকতা নেই।
জানা গেছে, এনটিআরসিএ থেকে বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে লিখিতভাবে জানানো হয়। এরপর কৃষি বিষয়ের শিক্ষকদের বিএড ডিগ্রি শিথিলতার জন্য শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির কাছে প্রস্তাব পাঠায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
এনটিআরসিএ’র কর্মকর্তারা জানান, মাদরাসার কৃষি বিষয়ের শিক্ষকদের যোগদানের সময় বাড়ানোর জন্য মৌখিকভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, কিন্তু এখনও তারা চিঠি পাননি। তবে মন্ত্রণালয় থেকে সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব করলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিবন্ধন সনদধারীদের কাছ থেকে গত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন চাওয়া হয়। সারাদেশে ৩৯ হাজার ৫৩৫টি পদের বিপরীতে ২৫ লাখ ৭৯ হাজার ১৯৬টি আবেদন জমা পড়ে। গত ২৪ জানুয়ারি মেধাক্রম অনুযায়ী ১৫ হাজার ১৫৭টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩৯ হাজার ৩১৭ জন শিক্ষককে নিয়োগের সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। এর দু’দিন পর থেকে যোগদান কার্যক্রম শুরু হয়, যা আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
এদিকে সারাদেশে ৩৯ হাজার ৫৩৫টি শূন্য পদের বিপরীতে প্রায় ২৭ লাখ আবেদন আসলেও সেখানে ৩৪ হাজার ৫৩৫ জনকে নিয়োগের জন্য মনোনীত করা হয়। নিয়োগ জটিলতার কারণে প্রায় ৬ হাজার পদ শূন্য রয়ে গেছে।
এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, প্রার্থীরা একাধিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেও পছন্দের প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছে, আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রার্থীরা আবেদন করলেও মহিলা কোটায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় অন্য প্রতিষ্ঠানে তাকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, এসব পদ পূরণে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন করে আবেদন চাওয়া হবে। পরে আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে মেধাক্রম অনুসারে তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এইচএস/আরএস/পিআর
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ ইউজিসি ঘেরাও করে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- ২ গুচ্ছ ভর্তি বহাল রাখতে ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে জরুরি নির্দেশনা
- ৩ শনিবারও বন্ধ থাকবে স্কুল, সাপ্তাহিক ছুটি দুদিনই বহাল
- ৪ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৫ সালে ছুটি ৭৬ দিন, তালিকা প্রকাশ
- ৫ সরকারি-বেসরকারি স্কুলে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা জুনে, বার্ষিক নভেম্বরে