সিন্ডিকেট সভা হয় না অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে
আইনে বলা থাকলেও গত দুই বছর ধরে সিন্ডিকেট সভা করে না অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট গঠনও করা হয়নি।
এ ধরনের অনিয়মের ব্যাখ্যা চেয়ে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
সেইসঙ্গে আগামী ২৯ জানুয়ারি সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে ডেকেছে কমিশন। ওইদিন কমিশনে বিষয়টি নিয়ে সভা হবে। সভায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যদের বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে হবে। ইউজিসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১৭ ধারা অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট গঠন এবং ১৮ ধারায় সিন্ডিকেটের দায়িত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া কমিশন প্রণীত ‘সিন্ডিকেট পরিচালনা নীতিমালা’ অনুযায়ী সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করার কথা বলা আছে। কিন্তু অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভা নিয়মিত করছে না। সরকার ও কমিশন থেকে মনোনীত সদস্যদের আমন্ত্রণও জানানো হচ্ছে না, যা সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থী কাজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে বলা হয়েছে, প্রত্যেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সিন্ডকেট করতে হবে। সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হবেন সিন্ডিকেটের সভাপতি, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, উপাচার্য মনোনীত একাডেমি কাউন্সিলের ডিন বা বিভাগীয় প্রধান, একজন শিক্ষাবিদ বা শিক্ষানুরাগী, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ মনোনীত তিনজন, ইউজিসির মনোনীত একজন প্রতিনিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হবেন সিন্ডিকেটের সদস্য। এ সিন্ডিকেটের মনোনীত সদস্যরা পরবর্তী দুই বছর মেয়াদে দায়িত্বে বহাল থাকবেন।
সিন্ডিকেটের কার্যাবলি হিসেবে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী কর্তৃপক্ষ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যাবলি, প্রশাসনিক কার্যাবলি, সাধারণ ব্যবস্থাপনা তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা, অর্থ কমিটি প্রণীত বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা ও বাজেট পর্যালোচনা, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অনুমোদনের জন্য সুপারিশ চূড়ান্তকরণ, আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ সৃষ্টি, সৃষ্ট পদের দায়িত্ব-কর্তব্য, চাকরির শর্তাবলি ও বেতন নির্ধারণ, শিক্ষার্থীর ফি নির্ধারণ, নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) কাছে পাঠানো এবং একাডেমি কাউন্সিলের সুপারিশক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও ফলাফল অনুমোদন করবে সিন্ডিকেট।
সিন্ডিকেটের দায়িত্ব হিসেবে রয়েছে , প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষার সনদপত্র ও সনদপত্রের নিরাপত্তা প্রতীকের তদারকি, ও হেফাজত, শৃঙ্খলা নিশ্চিত, শৃঙ্খলাবিরোধী আচরণের প্রতিকার ও শাস্তির জন্য শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশ বা প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত প্রদান, যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত অীভযোগের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশ বা প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত, একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ বিবেচনা ও সিদ্ধান্ত প্রদান, শিক্ষার্থী নিবন্ধনসহ বিভিন্ন দায়িত্ব।
ইউজিসি থেকে জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারি ইউজিসির পরিচালক (প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ) ফখরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে সিন্ডিকেট পরিচালনা নীতিমালা অনুযায়ী নিয়মিত সরকার ও কমিশন মনোনীত সদস্যদের যথানিয়মে আমন্ত্রণপূর্বক সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করার কথা বলা হয়।
এ ছাড়া আগামী ২৯ জানুয়ারি সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে সভা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তাও জানানো হয় চিঠিতে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, আইনে বলা থাকলেও গত দুই বছর ধরে অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সভা করা হচ্ছে না। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনও সিন্ডিকেট গঠন করা হয়নি।
তিনি বলেন, এসব বিষয় আমলে নিয়ে আমরা সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যদের চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া তাদের নিয়ে আগামী ২৯ জানুয়ারি ইউজিসিতে সভা করা হবে। সেখানে এসব অনিয়মের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। পাশাপাশি নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা করার নির্দেশ দেয়া হবে।
এমএইচএম/জেডএ/পিআর
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ২ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৩ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা করার নির্দেশ
- ৫ পিএইচডি-এমফিলধারী ২০৬ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিলো জমিয়াতুল মোদার্রেছীন