নতুন বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ৮৫ দিন
নতুন বছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য শিক্ষাপঞ্জি (একাডেমিক ক্যালেন্ডার) প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের জন্য ৮৫ দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়। রোববার (২৫ নভেম্বর) এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। শিক্ষাপঞ্জিতে ক্লাস-পরীক্ষা ও ফল প্রকাশের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে দেখা গেছে, বিভিন্ন পর্বে ৮২ দিন এবং প্রধান শিক্ষকের সংরক্ষিত তিন দিনসহ মোট ৮৫ দিন ছুটি রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ে সংবর্ধনা বা পরিদর্শন উপলক্ষে ক্লাস বন্ধ না করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করাতে নিষেধ করা হয়েছে।
একাডেমিক ক্যালেন্ডারে বলা হয়েছে, শিক্ষাবর্ষ হবে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর। প্রথম কর্মদিবস অর্থাৎ ১ জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তক দিবস হিসেবে উদযাপিত হবে।
আগামী বছরের ২২ জুন থেকে ৪ জুলাই (১২ দিন) অর্ধ-বার্ষিক/প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা এবং ২০ জুলাই ফল প্রকাশ, নির্বাচনী পরীক্ষা ১৪ অক্টোবর থেকে ২৯ অক্টোবর (১২ দিন) এবং ফলাফল প্রকাশ ৭ নভেম্বর। আর বার্ষিক পরীক্ষা ২৭ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর (১২ দিন) গ্রহণ করে ৩০ ডিসেম্বর ফল প্রকাশের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
একাডেমিক ক্যালেন্ডারে বলা হয়েছে, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে পরীক্ষার সময়সূচি মোতাবেক অর্ধ-বার্ষিক, নির্বাচনী ও বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করবে। বার্ষিক পরীক্ষার উত্তরপত্র অন্তত এক বছর সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতি পরীক্ষার সময়কাল ১৪ দিনের বেশি হবে না।
নিজ নিজ বিদ্যালয় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র (পাবলিক পরীক্ষা ছাড়া) নিজেরাই প্রণয়ন করবে। কোনো অবস্থাতেই বাইরে থেকে প্রশ্নপত্র কিনে পরীক্ষা নেয়া যাবে না।
পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা যাবে না। তবে কোনো বিশেষ কারণে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পূর্বানুমতি নিতে হবে।
উল্লেখযোগ্য ছুটির মধ্যে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ, রমজান, বুদ্ধ পূর্ণিমা, জুমাতুল বিদা, শব-ই-বরাত ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৬ মে থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ৩৪ দিন।
আগামী বছর ঈদুল আযহা, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ৮ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট ১০ দিন; দুর্গাপূজা, প্রবারণা পূর্ণিমা ও লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে ৪ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর ৮ দিন এবং শীতকালীন অবকাশ, বিজয় দিবস, যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন বা বড়দিন উপলক্ষে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর ১৩ দিন।
দিনপঞ্জিতে আরও বলা হয়েছে, সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ছাড়া বছরে মোট ছুটি ৮৫ দিন। সরকার যে সব দিনকে সাধারণ ছুটি (পাবলিক হলিডে) এবং নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি বলে ঘোষণা করা হবে সে সব দিন ওই ৮৫ দিনের অন্তর্ভুক্ত হবে।
কোনো সরকারি কর্মকর্তার পরিদর্শন উপলক্ষে বিদ্যালয় ছুটি দেয়া যাবে না এবং সংবর্ধনা/পরিদর্শন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ করা যাবে না। সংবর্ধিত/পরিদর্শনকারী ব্যক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করানো যাবে না। ছুটিকালীন অনুষ্ঠেয় ভর্তি/অন্য পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যালয় খোলা রাখতে হবে।
উপবৃত্তি, ভর্তিপরীক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা/জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা ইত্যাদি প্রয়োজনে বিদ্যালয় খোলা রাখতে হবে। জেএসসি/এসএসসি পরীক্ষার সময় পরীক্ষাকেন্দ্র ছাড়া অন্য বিদ্যালয়গুলো যথারীতি শ্রেণি কার্যক্রম চালু থাকবে।
প্রত্যেক বিদ্যালয় দৈনিক পাঠ বিবরণী নামে ডায়েরি ছাপাতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের মেধ্য তা বিলি করতে হবে। এ ডায়েরি ছাত্র/ছাত্রী পরিচিতি, অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ, ছাত্র-ছাত্রীদের আচরণবিধি, শিক্ষকদের নাম ও শিক্ষাগত যোগ্যতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার জরুরি নির্দেশনাবলী, ছুটির তালিকা এবং ক্লাসরুটিন (এতে প্রতিদিন অভিভাবকের স্বাক্ষর নিতে হবে) অস্তর্ভুক্ত থাকবে।
জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস যথা: ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৭ মার্চ, ২৬ মার্চ, ১৫ আগস্ট ও ১৬ ডিসেম্বর ক্লাস বন্ধ থাকবে। তবে সংশ্লিষ্ট দিবসের বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিদ্যালয়ে দিবসটি উদযাপন করতে হবে।
প্রতিটি বিদ্যালয়ে সরকার ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ দিবস ও শিক্ষা সপ্তাহ পালন করতে হবে।
এমএইচএম/এনডিএস/জেআইএম