কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীর
>> ১ নভেম্বর জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরু
>> পরীক্ষার ২৫ মিনিট আগে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন নির্বাচন
>> এবার ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩ পরীক্ষার্থী অংশ নেবে
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘সব ধরনের কোচিং সেন্টার অবৈধ। তাই জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা চলাকালে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হবে। কেউ যদি পরীক্ষা চলাকালে কোচিং সেন্টার খোলা রাখে তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সোমবার জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার প্রস্তুতি-সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের গরিব শিক্ষার্থীরা যারা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে না তাদের কথা চিন্তা করে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা চালু করা হয়। এ সার্টিফিকেট নিয়ে অনেকে বিভিন্ন স্থানে চাকরির সুযোগ পাচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আগ্রহী করে তুলতে ২০১০ সালে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরু হয়। এবার জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় মোট ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩ জন অংশ নেবে। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৬৮ হাজার ৮২০ জন। এবার মোট ২ লাখ ১ হাজার ৫১৩ জন বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে আগেই একাধিক প্রশ্ন সেট পাঠানো হবে, তবে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন নির্বাচন করে প্রশ্নপত্রের খাম খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষা কেন্দ্রে আগেই সব সেট প্রশ্ন পাঠানো হবে। তবে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে প্রতি জেলায় কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন নির্বাচন করা হবে। এতে আর প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় আশঙ্কা থাকবে না। সব ধরনের প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেয়া হবে।’
নাহিদ বলেন, ‘কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের আশঙ্কা থাকে। তাই এ সময় সব প্রকার কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে চার স্তরের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’ সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে শিক্ষক-অভিভাবকসহ সবার সহযোগিতা চান শিক্ষামন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) মোল্লা জালাল, ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হকসহ বিভিন্ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এবার ২৯ হাজার ৬৭৭টি বিদ্যালয়ের ২০ লাখ ৯০ হাজার ২৭৭ শিক্ষার্থী জেএসসিতে এবং ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৫৪৩ শিক্ষার্থী জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। সারাদেশে মোট ২ হাজার ৯০৩টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮৩৪টি। সে হিসাবে এবার ৬৯টি কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়াও এবার দেশের বাইরে ৯টি কেন্দ্রে ৫৭৮ শিক্ষার্থী জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। গত বছরের তুলনায় এবার জেএসসিতে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৬ জন এবং জেডিসি পরীক্ষায় ২৪ হাজার ৪৪৭ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে।
এ ছাড়া জেএসসি পরীক্ষায় অনিয়মিত ২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৫৩ জন এবং জেডিসি পরীক্ষায় ৩৪ হাজার ২৫১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। এদের মধ্যে এক, দুই বা তিন বিষয়ে ২ লাখ ৩০ হজার ৭৮৫ জন জেএসসিতে এবং এক থেকে তিন বিষয়ে জেডিসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য ৩০ হাজার ৫৪৮ শিক্ষার্থী রয়েছে।
আগামী ১ নভেম্বর বাংলা ও বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৫ নভেম্বর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হবে এ পরীক্ষা।
এমএইচএম/এনডিএস/এমএস