সাক্ষরতার আওতায় শুধু অক্ষরজ্ঞান দিলেই হবে না
দেশে নিরক্ষরতা নিরসনে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। পাশাপাশি অন্যান্য দেশের মতো সাক্ষরতা কার্যক্রমে বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবে। নতুবা দেশের ৩ কোটি ২৫ লাখ নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষরতার মধ্যে আনা সম্ভব হবে না। সাক্ষরতার আওতায় শুধু অক্ষরজ্ঞান দিলেই হবে না। তাদের জীবনমুখী শিক্ষা দিতে হবে। দক্ষ করে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষ ব্যুরোতে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০১৮ উপলক্ষ্যে আয়োজিত গোলটেবিল অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এমন মতামত ব্যক্ত করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাক্ষরতা কার্যক্রম একটি অস্থায়ী কার্যক্রম, এ কার্যক্রমে সফলতা অর্জনে সরকারি-বেসরকরি ও দাতা সংস্থার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। শুধু সরকারের একার পক্ষে এ কার্যক্রম সফল হওয়া সম্ভব নয়। বিভিন্ন এনজিওসহ বেসরকরি প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
তারা বলেন, সাক্ষরতা বলতে শুধু সাক্ষর বা অক্ষর জ্ঞান শেখানোকে বোঝায় না, ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নিরক্ষর মানুষকে লেখাপড়া ও নানামুখী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলাকে বোঝায়। কিন্ত বাস্তবে তা দেখা যায় না। এ সংক্রান্ত সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে যে গতিতে সাক্ষরতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, তা যথেষ্ট নয়। সরকারি-বেসরকারিভাবে এ কর্মকাণ্ড আরও প্রসার করতে হবে।
ইউনেসকোর ঢাকা অফিসের ইনচার্য মিস সুন লি বলেন, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে লিঙ্গ বৈষম্য একটি বড় সমস্যা। এ অঞ্চলে নিরক্ষরতার হার অনেক বেশি। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে স্ব-স্ব দেশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে সাক্ষরতা হার ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ। এটি অর্জন করতে অনেক প্রচেষ্টা ও শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়েছে। তবে এখনো ২২ শতাংশ মানুষ নিরক্ষরতার মধ্যে রয়েছে। এদের সাক্ষরতার আওতায় আনতে হলে বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা ও সকল অংশীজনের অংশগ্রহণ জরুরি।
গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিরক্ষতার নিরসনে যে প্রকল্পগুলো চালু করা হয় তা যেন কাঙ্ক্ষিত ফল পায়। এ জন্য সঠিক পরিকল্পন ও সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, সাক্ষরতার আওতায় শুধু অক্ষরজ্ঞান দিলেই হবে না, তাদের জীবনমুখী শিক্ষা দিতে হবে। যে জ্ঞান দিয়ে সেই ব্যক্তি দক্ষকর্মীতে রূপান্তরিত হতে পারে। দেশে সোয়া ৩ কোটি নিরক্ষর বলা হলেও সেটি আসলে সঠিক তথ্য বলা যাবে না। কারণ এ বিষয়ে এখনো কোনো সঠিক তথ্য নেই।
বিশেষ অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আসিফ উজ জামান বলেন, নিরক্ষরতাদূরীকরণ সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়, এ কার্যক্রমে সকল অংশীজনকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশে অর্থের কোনো সংকট নেই, যদি আমরা সঠিক চাহিদা নিরূপণ করতে পারি, তবে সরকার এ খাতে বিনিয়োগ করবে।
তিনি বলেন, নিরক্ষরতা দূরীকরণে দেশের পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কোনো গবেষণা হচ্ছে না। এ কারণে সঠিক তথ্য উঠে আসছে না। এ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম বাড়ানো দরকার।
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, সরকারি-বেসরকরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, এনজিও কর্মী প্রমুখ।
এমএইচএম/জেডএ/পিআর
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ ইউজিসি ঘেরাও করে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- ২ গুচ্ছ ভর্তি বহাল রাখতে ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে জরুরি নির্দেশনা
- ৩ শনিবারও বন্ধ থাকবে স্কুল, সাপ্তাহিক ছুটি দুদিনই বহাল
- ৪ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৫ সালে ছুটি ৭৬ দিন, তালিকা প্রকাশ
- ৫ সরকারি-বেসরকারি স্কুলে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা জুনে, বার্ষিক নভেম্বরে