উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তিতে ঢাকা বোর্ডে ভুয়া আবেদনের স্তূপ
ভুঁইফোড় কিছু কলেজ শিক্ষার্থী না পাওয়ার আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের তথ্য উপাত্ত চুরি করে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করছে। তথ্য চুরি যাওয়া ওই শিক্ষার্থীরা পরে পছন্দের কলেজে ভর্তির আবেদন করতে গিয়ে পড়ছে বিড়ম্বনায়। ফলে বাধ্য হয়ে অভিযোগ নিয়ে ছুটছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে।
সূত্র জানায়, একাদশে ভর্তির আবেদনে নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাচ্ছে ভর্তি-ইচ্ছুরা। সার্ভার সমস্যা, ফিরতি এসএমএস না পাওয়াসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গত ১৩ মে থেকে শুরু হয়েছে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন কার্যক্রম। দেশের ১০ বোর্ডের অধিনে গত সাতদিনে প্রায় সাড়ে ৯ লাখ আবেদন জমা হয়েছে। এর মাধ্যে অনলাইনে সাড়ে সাত লাখের বেশি এবং এসএমএসের মাধ্যমে প্রায় আড়াই লাখ আবেদন জমা পড়েছে।
এসব আবেদনের মধ্যে প্রায় পাঁচ শতাধিক ভুয়া বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বিভিন্ন ভুঁইফোড় কলেজ শিক্ষার্থী না পাওয়ার আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের তথ্য চুরি করে তাদের অজান্তে আবেদন সম্পন্ন করেছে। আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর পরদিন থেকেই এমন অভিযোগ আসছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে। ফলে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ভুক্তভোগীরা ঢাকা বোর্ডের কলেজ শাখায় এসে লিখিত অভিযোগ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভুয়া আবেদনের পেছনে বেশ কিছু ভুঁইফোড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা দায়ী। এসব কলেজে শিক্ষার্থীরা সাধারণত পড়তে অনাগ্রহী হওয়ায় সদ্য পাস করা শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেই আবেদন করছে। এছাড়াও অনেক স্কুল সম্প্রতি কলেজের অনুমোদন পেয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী না পাওয়ার আশঙ্কায় তাদের স্কুল থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের তথ্য নিয়ে আবেদন করছে। ফলে শিক্ষার্থীরা আবেদন করার সময় পড়ছেন বিপাকে।
বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুন অর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিদিন ভুয়া আবেদনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আবেদনের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বোর্ডের দুটি রুমে এ সংক্রান্ত একটি সেল খোলা হয়েছে। সেখানে অভিযোগকারীদের নম্বপত্রের মূল কপি থেকে লিখিত আবেদন নেয়া হচ্ছে। এরপর তা যাচাই-বাছাই শেষে আগের আবেদন বাতিল করে নতুনভাবে সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ভর্তিচ্ছুদের না জানিয়ে আবেদন জালিয়াতি বলে গণ্য হবে। এ বিষয়ে ভর্তি নীতিমালায় শাস্তির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এমন জালিয়াতির জন্য প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিল অথবা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন স্বীকৃতি বাতিল করা হবে। ভর্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ায় পর এসব প্রতিষ্ঠানকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তথ্যমতে, দেশের আট সাধারণ ও মাদরাসা বোর্ডের অধিনে সাত হাজার ৩১৯ কলেজে ২৮ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৯টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডের অধিনে রয়েছে ৯৮৭ কলেজ। সেখানে চার লাখ ৬৬ হাজার ৮৮৭ আসন রয়েছে। মাদরাসা বোর্ডের অধিনে ৩২ হাজার ৩৬৪টি কলেজে ৪২ হাজার ৭৪৪টি আসন রয়েছে। তাই এবার আসন সংকট হবে না।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে থেকে একাদশে অনলাইন ও এসএমএস-এর মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যা শেষ হবে ২৪ মে। তবে পুনঃনিরীক্ষণে যাদের ফল পরিবর্তন হবে, তাদের আবেদন আগামী ৫ ও ৬ জুন পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে। ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরু হবে।
এমএইচএম/এএইচ/জেআইএম
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এমন চাকরি ছাড়া কিছুই ভাবতে দিচ্ছে না
- ২ পাঠ্যবইয়ে ত্রুটি, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রীর ছোট ভাইকে শোকজ
- ৩ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ৪ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৫ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা