এবারও ইংরেজি ও গণিতে ধস যে দুই বোর্ডে
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষাতে এবারও ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে ধ্স নেমেছে। এ কারণে সিলেট ও দিনাজপুর বোর্ড ফলাফলে পিছিয়ে। তবে পাসের হার কমে যাওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
ফলাফল মূল্যায়ন করে দেখা গেছে, ইংরেজি ও গণিত পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় সিলেট বোর্ড পিছিয়ে গেছে। এবার সিলেট বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার ৯০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। গণিত এ বোর্ডের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৬১ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯১ দশমিক ১৯ শতাংশ। সিলেট বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৮৯ হাজার ২৮। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ১৯১ শিক্ষার্থী। এ বোর্ডে পাসের হার ৭০.৪২ শতাংশ।
অন্যদিকে, গত বছর ৪র্থ অবস্থান থেকে ৮ম অবস্থানে দিনাজপুর বোর্ড। পিছিয়ে পড়ার কারণ গণিত ও ইংরেজি বিষয়ের ফলাফল বিপর্যয়। এবার এ বোর্ডে গণিতে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯১ দশমিক ২০ শতাংশ। ইংরেজিতে পাসের হার ৯১ দশমিক ০৫ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। দিনাজপুর বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪৪। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ হাজার ৭৫৫ শিক্ষার্থী। এ বোর্ডে পাসের হার ৭৭.৬২ শতাংশ।
আরও পড়ুন >>কোন বোর্ডে পাসের হার কত
এছাড়াও গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে অন্যান্য বোর্ডের ফলাফলে দেখা গেছে, ঢাকা বোর্ডে ইংরেজিতে পাসের হার ৯১ দশমিক ১৮ শতাংশ, গত বছর ছিল ৯৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ, গণিতে পাসের হার ৮৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ, গতবছর ছিল ৯০ দশমিক ৪০ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ইংরেজিতে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৩০, গত বছর ছিল ৯৯ দশমিক ১, গণিতে ৯১ দশমিক ৫৮, গত বছর ছিল ৯৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
গত বছর কুমিল্লা বোর্ড অষ্টম অবস্থানে থাকলেও এবার ফলে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ বোর্ডে এবার ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার ৯১ দশমিক ৫৭, গত বছর ছিল ৮৬ শতাংশ। গণিতে পাসের হার ৯০ দশমিক ১৬, গত বছর যা ছিল ৮১ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ইংরেজিতে ৯০ দশমিক ৩৭, গতবছর ছিল ৯৬ দশমিক ০৪, গণিতে ৮৫ দশমিক ৮০, গত বছর ছিল ৮৯ দশমিক ৯৯, চট্টগ্রাম বোর্ডে ইংরেজিতে ৯২ দশমিক ২৯, গত বছর ছিল ৯৪ দশমিক ৬১, গণিতে ৮৫ দশমিক ৬৪, গত বছর ছিল ৮২ দশমিক ৭৩, বরিশাল বোর্ডে ইংরেজিতে ৯২ দশমিক ১৫, গত বছর ছিল ৯৫ দশমিক ৯৯, গণিতে এ বোর্ডের পাসের হার ৮৫ দশমিক ১১, যা গত বছর ছিল ৮২ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন>>পাসে মেয়েরা, জিপিএ-৫-এ ছেলেরা
অন্যদিকে, মাদরাসা বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯৫ দশমিক ১৯, গণিতে পাসের হার ৮০ দশমিক ২৯, গত বছর তা ছিল ৯১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এছাড়াও কারিগরি বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার ৯৪ দশমিক ৯৩, গত বছর ছিল ৯৬ দশমিক ১৬ এবং গণিতে ৮৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৯৩ দশমিক ১৬ শতাংশ।
তবে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ার বিষয়কে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ পরীক্ষার ফলাফলের সার্বিক দিক তুলে ধরে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার ২৩ বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যার ফলে আগের চাইতে বিজ্ঞান বিষয়ে ফল অনেক উন্নতি হয়েছে। গত দুই বছর কুমিল্লা বোর্ডের ফল খারাপ হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তার কারণ শনাক্ত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ কারণে কুমিল্লা বোর্ডের ফল ভালো হয়েছে। কোন বোর্ডের ফলে অবমূল্যায়ন বা অতিমূল্যায়ন না করে সমভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন>>পাসের হার কমেছে জিপিএ-৫ বেড়েছে
ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে ফল খারাপ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব জেলায় ভালো মানের শিক্ষক পাওয়া যায় না। তার প্রভাব পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্টে পড়ে। আমরা সে বিষয়ে কাজ করছি। এ সংক্রান্ত নতুন প্রকল্প তৈরির করারও চিন্তা-ভাবনা চলছে।
এমএইচএম/জেএইচ/আরআইপি