প্রাথমিক-ইবতেদায়ি সমাপনীর বৃত্তি ও পুনর্নিরীক্ষার ফল মার্চে
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং মাদরাসার ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে সাড়ে ৮২ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হবে। মার্চের মাঝামাঝি সময়ে এ বৃত্তির ফলাফল প্রকাশ করা হবে। একই সময়ে প্রকাশ করা হবে এ দুই পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষার আবেদনের ফলাফল। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এ দুই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর। এ ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তির ফল তৈরি করছে ডিপিই। এবার প্রাথমিকে ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ২১৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয় ২৫ লাখ ৬৬ হাজার ২৭১ জন। অপরদিকে ইবতেদায়িতে দুই লাখ ৫৪ হাজার ৩৯৯ জন অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয় দুই লাখ ৩৬ হাজার ৪৪৪ জন। ফলাফল প্রকাশের পর এ দুই পরীক্ষায় প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থী ফল পুনর্নিরীক্ষার জন্য আবেদন জমা দেয়। এবার প্রথমবারের মতো মোবাইল ফোনে টেলিকট সিমের মাধ্যমে সমাপনী ও ইবতেদায়ি ফলাফলের পুনর্নিরীক্ষার আবেদন গ্রহণ কার্যক্রম চালু হয়।
ডিপিইর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ বছর দুই সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে সাড়ে ৮২ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হবে। এর মধ্যে মেধাকোটায় (ট্যালেন্টপুল) বৃত্তি পাবে ৩৩ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থী। সাড়ে ৪৯ হাজার শিক্ষার্থী সাধারণ কোটায় বৃত্তি পাবে। মেধা কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্তরা ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্তরা ২২৫ টাকা করে বৃত্তির অর্থ পাবে।
সাধারণ কোটায় ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ছয়জনকে বৃত্তি দেয়া হবে। এর মধ্যে তিনজন ছাত্রী ও তিনজন ছাত্র বৃত্তি পাবে। ওয়ার্ড পর্যায়ে বৃত্তি প্রদানের পর অবশিষ্ট বৃত্তি হতে প্রতিটি উপজেলায় বা থানায় দুজন ছাত্র এবং দুজন ছাত্রীকে বৃত্তি দেয়া হবে।
আর প্রতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিটি বিভাগ হতে তিনটি করে ২৪টি সাধারণ বৃত্তি প্রদানের পর চারটি সাধারণ বৃত্তি সংরক্ষণ করা হবে।
ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয় ২০০৯ সাল থেকে। পরের বছর থেকে ইবতেদায়ির শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেয়া শুরু হয়। উভয় সমাপনী পরীক্ষা চালুর পর আলাদা বৃত্তি পরীক্ষার পরিবর্তে সমাপনীতে অংশগ্রহণকারীদের মেধাতালিকা করে বৃত্তির জন্য নির্বাচিত করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিপিইর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. রমজান আলী জাগো নিউজকে বলেন, ঝরে পড়া রোধ, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং সুষম মেধা বিকাশের লক্ষে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপজেলাভিত্তিক বৃত্তি দেয়া হয়ে থাকে। এতে করে সব শিক্ষার্থী বৃত্তি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে এবং শিক্ষার মান বৃদ্ধি পায়।
তিনি জানান, আগে বিদ্যালয় থেকে প্রথমসারির কিছুসংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিত। বাকিরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেত না। তখন এ সুবিধা থেকে অনেক শিক্ষার্থী বঞ্চিত হত।
উল্লেখ্য, এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ইবতেদায়ি সমাপনীতে পাসের হার ৯২ দশমিক ৯৪ শতাংশ ছিল। গত বছরের তুলনায় প্রাথমিকে পাসের হার কমে ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ইবতেদায়িতে কমে ২ দশমিক ৯১ শতাংশ। গত বছর প্রাথমিকে পাসের হার ছিল ৯৮ দশমিক ৫১ এবং ইবতেদায়িতে ৯৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ। দুটি পরীক্ষায় গত বছরের তুলনায় এবার ২০ হাজার ২১৪ জন জিপিএ-৫ কম পায়।
এমএইচএম/জেডএ/এমএস