পাঁচ বছরে প্রাথমিকে দেড় লাখ শিক্ষক নিয়োগ
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট দূরীকরণে পর্যায়ক্রমে আসছে বিশাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণে প্রায় ছয় হাজার প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে এক হাজার ৩২০ জনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনে (বিপিএসসি)। এছাড়া প্রথমবারের মতো প্রাথমিক স্কুলে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে ১০ হাজার বিশেষ শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী পাঁচ বছরে প্রায় দেড় লাখ শিক্ষক নিয়োগ দেবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। সশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় রাজস্ব খাতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, অতিরিক্ত ক্লাসরুম তৈরি, প্রাথমিক পর্যায়ের স্কুলগুলো অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করা হবে। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক শূন্য পদ, প্রয়োজন অনুযায়ী সৃষ্ট পদ, প্রাক-প্রাথমিক স্তরে এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. রমজান আলী জাগো নিউজকে বলেন, মামলা জটিলতার কারণে এতদিন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যাচ্ছিল না। পুল ও প্যানেলভুক্ত প্রায় ৪৫ হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় বর্তমানে ২০১৪ সালের স্থগিত নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চলতি বছরের মার্চ বা এপ্রিলে এ নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। তবে রাজস্ব খাতে নতুন করে আরো সাত হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিনই অসংখ্য শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন। নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে সাত-আট মাস লেগে যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে শূন্য পদের সংখ্যা আরও বাড়ছে।
অধিদফতর সূত্র জানায়, সারা দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৪ হাজার ৮২০টি। এর মধ্যে প্রায় ২০ হাজার স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষকের ১৭ হাজার পদ শূন্য। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী মোট শূন্য পদের ৩৫ শতাংশ সরাসরি এবং ৬৫ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। ৬৫ শতাংশ হিসেবে পদোন্নতিযোগ্য পদ ১৭ হাজার এবং সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদ চার হাজার। ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষকদের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণি হওয়ায় এ পদে পিএসসি নিয়োগ দেয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ‘বিদ্যালয়হীন গ্রামে ১৫শ স্কুল নির্মাণ প্রকল্পের প্রতিটি স্কুলে চারজন করে ছয় হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। এর বাইরে রাজস্ব খাতে ১৮ হাজার সহকারী শিক্ষক জুনের আগেই নিয়োগ দেয়া হবে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি শেষ হলে শিক্ষক সংকট থাকবে না বলে কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, পিইডিপি-৪ সংক্রান্ত বিষয়ে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এ প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে এক হজার ৯০০ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুনের আগেই একনেকে পাস করানোর চেষ্টা রয়েছে। জুলাই থেকে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। প্রথমে সব স্কুলে না হলেও অন্তত দুই-তিনটি ক্লাস্টার মিলিয়ে দুজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। যাতে করে শিক্ষকরা ক্লাস্টারভুক্ত স্কুলগুলোতে রোটেশনে ক্লাস নিতে পারেন।
এমএমইএম/এআরএস/জেডএ/জেআইএম/এমএস
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ২ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৩ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা করার নির্দেশ
- ৫ পিএইচডি-এমফিলধারী ২০৬ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিলো জমিয়াতুল মোদার্রেছীন