জাতীয়করণ আন্দোলনকে গুরুত্ব দিচ্ছে না সরকার
বেসরকারি শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবিতে সারা দেশে দ্বিতীয় দিনেও তালা ঝুলছে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায়। এ আন্দোলনকে আমলে নিচ্ছেন না সরকার। এ কারণে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রীর সঙ্গে দু-দফার বৈঠক হয়। বৈঠকে শুধু আশ্বাসে কর্মস্থলে যোগদানের আহ্বান করা হয়। কিন্তু এতে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা সন্তুষ্ট নয়। তাদের দাবি প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট আশ্বাস ছাড়া আন্দোলন ছেড়ে কর্মস্থলে যাবে না।
বুধবারও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১০তম দিনের মতো আমরণ অনশন পালন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
গতকাল মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা দেশের সব এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় ধর্মঘট ডাকেন শিক্ষকরা। আজ দ্বিতীয় দিনের মতো সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পালিত হয় ধর্মঘট।
এদিকে শিক্ষকদের দাবি দাওয়া নিয়ে বুধবার কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষক প্রতিনিধিরা। সভায় উপস্থিত শিক্ষক প্রতিনিধিরা জানান, প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর সঙ্গে শিক্ষক প্রতিনিধিরা দ্বিতীয় দিনের মতো বৈঠক করেন। সেখানে আমাদের আন্দোলনের যৌক্তিক বিষয় তুলে ধরা হয়।
বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনাদের আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বেগে রয়েছি। দ্রুত দাবি-দাওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হবে।
গতকাল মঙ্গলবারও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর সঙ্গে শিক্ষক নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষকদের আন্দোলন বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হবে। আন্দোলন ছেড়ে শিক্ষকদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। জবাবে শিক্ষকরা শিক্ষামন্ত্রীর আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন।
শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জাগো নিউজকে বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা সম্ভব নয়। যদি আমাদের এমন সুযোগ আসে তবে তা বিবেচনা করা হবে।
পৃথিবীর কোন দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হয়েছে এমন প্রশ্ন তুলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। রাতারাতি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
‘বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের’ যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করতে বেসরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিন দিনের ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট আশ্বাস ছাড়া আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আশা করি বৃহস্পতিবারের (২৫ জানুয়ারি) মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে ঘোষণা আসবে। দাবি মেনে নেয়া হলে আমরা নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে যাবো। নতুবা আবার নতুন করে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হবে।
মতিউর রহমান বলেন, এমপিওভুক্তি শিক্ষকদের জাতীয়করণ করতে সরকারের নতুন করে অর্থের প্রয়োজন নেই। প্রতি মাসের এ বাবাদ সরকারের দেয়া এক হাজার কোটি টাকা দিয়েই সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করা সম্ভব। আমাদের আন্দোলন সরকারকে বিপদে ফেলা বা নির্বাচনী বছরকে কেন্দ্র করে না। শিক্ষকরা ন্যায্য দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছেন।
টানা আন্দোলনে এ পর্যন্ত মোট ১২৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা দাবি করেন। কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি। কেউ আবার সুস্থ হয়ে আন্দোলন যোগ দিচ্ছেন, কেউবা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
জাতীয়করণের দাবিতে ১৫ জানুয়ারি থেকে তারা প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন পালন করে যাচ্ছেন। এসব শিক্ষকদের ছয়টি সংগঠন জোট ‘বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের’ ব্যানারে এ আন্দোলনের পরিচালিত হচ্ছে।
এমএইচএম/জেএইচ/আইআই
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ২ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৩ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা করার নির্দেশ
- ৫ পিএইচডি-এমফিলধারী ২০৬ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিলো জমিয়াতুল মোদার্রেছীন