আমরণ অনশনে ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকরা
টানা ৯ দিন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পরও সরকারের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস না আসায় আমরণ অনশনে বসেছেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকরা আমরণ অনশন শুরু করেন।
আজ সকাল থেকেই মাদুর পেতে শিক্ষকরা শুয়ে-বসে আমরণ অনশন পালন করছেন। বেতন দেন নাইলে বিষ দেন, মা জননী শেখ হাসিনা ক্ষুধার জালায় বাঁচি না, আর কতদিন কাঁদবো বেতনের জন্য, প্রাইমারি জাতীয়করণ আমরা কেন হব না, শিক্ষামন্ত্রী আর কতদিন, একদফা একদাবি জাতীয়করণ চাই- এমন নানা স্লোগানে তৈরি ফেস্টুন ও মাথায় ব্যাচ পরে বিভিন্ন জেলা থকে আগত প্রায় সহস্রাধিক স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ক্বারী রুহুল আমিন চৌধুরী বলেন, মাদরাসা শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে মানবেতন জীবন-যাপন করছেন। তাই বাধ্য হয়ে ঘর-সংসার ছেড়ে টানা ৯ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়ালেও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন-ভাতাদি না বাড়িয়ে বঞ্চিত করেছে। অথচ আমরা প্রাথমিকের মতোই বিশাল জনগোষ্ঠীর সন্তানদের পাঠদান দিয়ে চলছি। আট দিন ধরে আমাদের অবস্থান ধর্মঘট চলার পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য অমরণ অনশনের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি। আশা করি সরকার আমাদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে একটি সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেবেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, লেখাপড়া শিখে শিক্ষকতার মহান পেশায় এসেছি। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবারের ভরণপোষণের খরচ চালতে পারছি না। মানবেতর জীবন-যাপন করছি। রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ করতে হবে।
শিক্ষকরা বলেন, তীব্র শীতের মধ্যে রাস্তায় বসে আন্দোলন করলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস মেলেনি। অথচ আমাদের পাশেই আন্দোলন করছিলেন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। শিক্ষামন্ত্রী এসে তাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন। আমরা একই দেশের নাগরিক। তাদের মতোই শিক্ষক। কিন্তু আমাদের দিকে কারো কোনো দৃষ্টি নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি যোগাযোগও করেননি। এ কারণে বাধ্য হয়ে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। দাবি আদায় ছাড়া রাজপথ থেকে যাবেন না।
এমএইচএম/এআরএস/জেআইএম