ভিডিও EN
  1. Home/
  2. শিক্ষা

৫১ আবিষ্কার নিয়ে ৩০০ ক্ষুদে বিজ্ঞানী

প্রকাশিত: ০৫:৫৫ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির আবিষ্কারে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা। এখন ক্ষুদে বিজ্ঞানীরাও নিজেদের মেধা ও মননে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে বিশ্ববাসীকে। মেধা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। একদিকে তারা দক্ষ মানবশক্তি রূপে গড়ে ওঠছে, অন্যদিকে প্রযুক্তি ব্যবহার দ্বারা অভিনব উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সমস্যার সহজতর ও সম্ভাবনা তৈরি করেছেন।

শনিবার আইডিইবি মিলনায়তনে স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (স্টেপ) আয়োজিত ‘জাতীয় স্কিলস কম্পিটিশন- ২০১৬ এর পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের ৫১টি অভিনব আবিষ্কার নিয়ে প্রায় ৩০০ মেধাবী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।

এর মধ্যে তিনটি আবিষ্কারের প্রকল্পকে পুরস্কৃত করা হয়।

‘লাইফ সিকিউরিটি রোবট’ আবিষ্কার প্রকল্পের জন্য প্রথম স্থান লাভ করে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তিন প্রতিযোগী মো. কৌশিক পাটওয়ারী, মো. ফয়সাল উদ্দিন ও সুজন মজুমদার।  

জঙ্গি হামলা ঠেকাতে তৈরি করেছেন তারা এই রোবট। এটি মাটির নিচে বা উপরে যেকোনো স্থানে রেখে তথ্য সংগ্রহ, লাইভ ভিডিও,   বিপদজনক স্থানগুলোকে চিহ্নিতসহ নানাভাবে জঙ্গি হামলারোধে সহায়তা করবে।

‘ওয়াটার বেইজড গ্যাস পাওয়ার প্ল্যান্ট’ প্রকল্পের জন্য ২য় স্থান লাভ করে ন্যাশন্যাল সাইন্স রিসার্চ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রাজশাহীর তিনজন প্রতিযোগী রাজিবুল আউয়াল, মো. নাজমুল হুদা ও মো. রায়হান আলী।

প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছেন মডেল ইনস্টিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, গাজীপুরের মো. নাদিম। তার প্রকল্পের নাম ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি সিস্টেম’।

projukti

অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে মৃত্যু বন্ধে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েছেন তিন মেধাবী। যশোর ম্যানগ্রোভ ইনস্টিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী তারা। তারা হলেন ইলেকট্রনিক্স বিভাগের মেধাবী ছাত্র নাজমুল হাসান শিকদার, সৈয়দ মো. আজিজুর রহমান, ও সাব্বির মোল্লা।

গত ছয়মাসের প্রচেষ্ঠায় তারা ডিজিটাল ভেহিকেল কন্ট্রোল সিন্টেম আবিষ্কার করেছেন। এটি নিয়ে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন।

তারা জানান, ডিজিটাল ভেহিকেল দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ, সতর্কতা প্রদান, জারিমানা আদায়, দুর্ঘনা সৃষ্টিকারীকে চিহ্নিত করার কাজ করবে এটি।
 
এটি রাস্তায় যানজটও কমাতে সহায়তা করবে উল্লেখ করে ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা বলেন, গাড়ি চালুর আগে গাড়ি চালকের ড্রাইভিং সাইসেন্স ও স্ব ব্যক্তি চেহারা মিললেই তবেই গাড়িটি চালু হবে। পাশাপাশি গাড়িটি চালু হলেই চালকের সব তথ্য পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট দফতরে। ফলে সবাই বাধ্য হয়েই সর্তকতা অবলম্বন করবেন বলে তারা মনে  করেন।

 
বগুড়া পলিটেকনিক্যালের তিন শিক্ষার্থী তৈরি করেছেন অটো পার্কিং ও গাড়ি নিরাপত্তা নিশ্চিতের যন্ত্র। এর মাধ্যমে একটি নির্ধারিত স্থান থেকে অতি অল্প সময়ে অল্প জায়গাতেই পার্কিং করা সম্ভব হবে।

ঢাকা পলিটেকনিক্যালের কম্পিউটার বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্বল্প মূল্যে কম্পিউটার তৈরি করেছেন। মাত্র ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে তৈরি এ কম্পিউটার আধুনিক সব সুবিধা সম্বলিত। শুধু তাই নয় এটি সহজে নষ্ট হবে না বা ভাইরাস আক্রমণ করতে পারবে না। এছাড়াও এটির মাধ্যমে মোবাইলকেও মনিটর হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

পিছিয়ে নেই মেয়েরাও। রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের মেয়েরা মাইক্রোকন্ট্রোলারভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ব্লুটুথভিত্তিক লোড কন্ট্রোল ব্যবস্থা। এটি দ্বারা ফোনের মাধ্যমে বাসার সব লোড এবং সব ধরনের সিকিউরিটি কন্ট্রোল করা যাবে। এছাড়াও বাসস্থানের মালামালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এটি।

উল্লেখ্য, দেশে তৃতীয়বারের মতো স্কিলস কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত হয়। গত বছর অক্টোবর মাসে দেশের ১৬২টি সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে উঠে এসেছিল নতুন ৮০০ প্রকল্প। ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা। সেখান থেকে জাতীয় পর্যায়ে আসে ৫১টি প্রকল্প। গতকাল শনিবার নির্বাচিত হয় টপ তিন প্রকল্প।  

এমএইচএম/জেডএ/এমএস

আরও পড়ুন