জালিয়াতির অভিযোগে ইউজিসি কর্মকর্তা ওএসডি
জালিয়াতির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একজন পরিচালককে ওএসডি করা হয়েছে। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নয় শিক্ষক-কর্মকর্তাকে নিয়োগ সুপারিশের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নেয়া নিয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র ।
জানা গেছে, স্বপ্রণোদিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষাধীন থিউরিটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগে নিয়োগের জন্য ৯ জন শিক্ষক, কর্মকর্তার নাম প্রস্তাব করা হয়। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বিতর্কের মধ্যে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ইউজিসি।
সূত্র জানায়, ইউজিসি’র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অতিরিক্ত পরিচালক ফেরদৌস জামানের সাক্ষরিত একটি সুপারিশ ঢাবিতে পাঠানো হয়। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ওএসডি করে তাকে প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পুরো ঘটনা তদন্তে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, অধ্যাপক আখতার হোসেন, শাহনেওয়াজ আলী এবং ইউজিসির অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) ফখরুল ইসলাম। তদন্ত কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে বিগত ২০১৪ সালে কুমিল্লার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে অবৈধ সুবিধা নেয়ার দায়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ফেরদৌস জামান একই জায়গায় ১২ বছর ধরে কর্মরত ছিলেন। তাই তাকে সরানোর প্রয়োজন মনে হয়েছে বলে সরিয়েছি। এ সময় তিনি ফেরদৌস জামানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ব্যাপারে সরাসারি কিছু না বলে তিনি বলেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকটিক্যাল ক্যামেস্ট্রি নামে নতুন বিভাগ খোলার জন্য আবেদন করে ওই বিভাগ। বর্তমানে তিনজন শিক্ষক এই বিভাগ চালাবেন এবং নতুন করে কোন জনবল চাওয়া হবে না এমন শর্তে আবেদন করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক আখতার হোসেন, শাহনেওয়াজ আলী ও অতিরিক্ত পরিচালক ফেরদৌস জামান ওই বিভাগ সরজমিন পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দেন। রিপোর্টে কোথাও অতিরিক্ত জনবল নেয়ার বিষয়টি ছিল না এবং তা দেখেই সাক্ষর করেন দুই সদস্য। পরবর্তীতে চেয়ারম্যানের অনুমোদনের আগে নিচের এই বিভাগের জন্য ৫ জন শিক্ষক ৪ জন কর্মকর্তাসহ মোট ৯ জন জনবল নিয়োগের বিষয়টি নোট দিয়ে যোগ করেন তিনি। সেভাবেই চেয়ারম্যানের অনুমোদন করান। অতিরিক্ত নোট সংযুক্ত করার পর কমিটির অন্য দুইজন সদস্যের সাক্ষর নেয়া হয়নি।
পরবর্তীতে ওই বিভাগ থেকে ইউজিসির কাছে অভিযোগ করা হয়, তারা চাহিদা না দেয়ার পরও ইউজিসি জনবল দেয়ার বিষয়টি কেন আনলো? চিঠি পেয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট ফাইল চেয়ে পাঠান। ফাইল দেখেই চমকে উঠেন তিনি। অর্থাৎ তিনিই নিজেই যে ফাইলে সাক্ষর করেছেন, সেখানে কমিটির অন্যান্য সদস্যের সাক্ষর নেই। পুরো বিষয়টি ছিল জালিয়াতি। এ ঘটনায় ইউজিসি চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিক ওই কর্মকর্তাকে ডেকে এনে স্ট্যান্ড রিলিজ দেন। এছাড়া বিষয়টি তদন্ত করতে উচ্চ পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফেরদৌস জামান বলেন, ইউজিসি’র নিয়মানুযায়ি আমাকে বদলি করা হয়েছে। কোন অভিযোগ বা জালিয়াতির কারণে নয়। তিনি বলেন, যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ইউজিসি’র গঠিত কমিটির সুপারিশ। অথচ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আমাকে হেয় করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এমএইচএম/এমএমজেড/পিআর
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - শিক্ষা
- ১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধে হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব
- ২ সরকারিতে আসনের চারগুণ আবেদন, সাড়া নেই বেসরকারিতে
- ৩ সাত কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্মরণসভা করার নির্দেশ
- ৫ পিএইচডি-এমফিলধারী ২০৬ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিলো জমিয়াতুল মোদার্রেছীন