চাকরির আবেদন ফি কমলো
সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) পরিচালিত বিসিএস ছাড়া নন-ক্যাডার পদ এবং সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধ-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত, সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন করপোরেশনের বিভিন্ন গ্রেডভুক্ত পদের নিয়োগ পরীক্ষা ফি কমিয়েছে সরকার।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ-বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে সই করেছেন সিনিয়র সহকারী সচিব আছিয়া খাতুন।
পরিপত্র অনুযায়ী, টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন ও পরীক্ষার ফি নেওয়া হবে। পরীক্ষার ফি বাবদ সংগ্রহ করা অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে টেলিকম বাংলাদেশকে দিতে হবে এবং কমিশন হিসাবে পাওয়া অর্থের ১৫ শতাংশ ভ্যাট হিসাবে আদায় করা হবে।
এখন থেকে নবম গ্রেড বা তার ওপরের গ্রেডে (নন-ক্যাডার) চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি হবে ২০০ টাকা, যা আগে ছিল ৬০০ টাকা। এ আবেদন ফি’র সঙ্গে আগের মতো টেলিকম বাংলাদেশের সার্ভিস চার্জ ১০ শতাংশ বা ২০ টাকা দিতে হবে। আর ২০ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ বা ৩ টাকা ভ্যাট দিতে হবে। অর্থাৎ নবম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন করতে মোট ২২৩ টাকা দিতে হবে। এতদিন ৬৭৫ টাকা দিতে হতো।
আরও পড়ুন
- ২০০ অফিসার নিয়োগ দেবে প্রমি এগ্রো ফুডস, অভিজ্ঞতা ছাড়াও আবেদন
- নতুন করে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন, বাদ পড়লেন ১৬৮ জন
- অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন ১২ কর্মকর্তা
একইভাবে দশম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে ২০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ৩ টাকা ভ্যাট দিতে হবে। অর্থাৎ দশম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন করতে মোট ২২৩ টাকা দিতে হবে। আগের এই গ্রেডে আবেদন করতে ৫৫৭ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হতো।
১১ ও ১২তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৩০০ টাকা। এর সঙ্গে ১৫ টাকা সার্ভিস চার্জ ও ২ টাকা ২৫ পয়সা ভ্যাট দিয়ে আবেদনকারীকে মোট ১৬৭ টাকা ২৫ পয়সা দিয়ে আবেদন করতে হবে। আগে এ ক্ষেত্রে খরচ হতো ৩৩৪ টাকা ৫০ পয়সা।
১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা, যা আগের ছিল ২০০ টাকা। এর সঙ্গে সার্ভিস চার্জ ১০ টাকা এবং ভ্যাট ১ টাকা ৫০ পয়সা যোগ করে আবেদনকারীকে মোট ১১১ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে। আগের দিতে হতো ২২৩ টাকা।
আর ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডের চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ১০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে ৫ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ১ টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট যোগ করে আবেদনকারীকে ১১১ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে।
এছাড়া অনগ্রসর নাগরিকদের সব গ্রেডে পরীক্ষার আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। এর সঙ্গে ৫ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং এক টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট যোগ করে আবেদনকারীকে ১১১ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে। আগের এ ধরনের কোনো বিধান ছিল না।
পরিপত্রে কয়েকটি শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-
>> টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন ও পরীক্ষা ফি দেওয়া যাবে এবং পরীক্ষা ফি বাবদ সংগৃহীত অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে টেলিটককে দেওয়া যাবে এবং কমিশন হিসাবে পাওয়া অর্থের ১৫ শতাংশ ভ্যাট হিসেবে আদায় করা যাবে।
>> টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃক পরীক্ষা ফি বাবদ অর্থ গ্রহণের পরবর্তী ৩ কার্যদিবসের দিবসের মধ্যে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে জমা দেওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠান অবিলম্বে চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা করবে, তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ওই অর্থ নিজস্ব ব্যাংক হিসেবে জমা করতে পারবে।
আরও পড়ুন
- নিয়োগ দেবে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, থাকতে হবে স্নাতক পাস
- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে চাকরির সুযোগ
>> অনলাইন আবেদন গ্রহণ না করা হলে পরীক্ষা ফি বাবদ অর্থ চালানের মাধ্যমে নিতে হবে। তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ব্যাংক ড্রাফট/পে অর্ডারে এ অর্থ নিতে পারবে।
>> পরীক্ষা ফি বাবদ আদায় করা অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১৩ ডিজিট প্রাতিষ্ঠানিক কোড এবং ৭ ডিজিট নতুন অর্থনৈতিক কোড ১৪২২৩২৬ এ অটোমেটেড চালানে সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে।
>> কোনো প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়াল চালানে (টিআর ফরম) পরীক্ষা ফি জমা করতে চাইলে ১- প্রাতিষ্ঠানিক কোড (চার অঙ্ক বিশিষ্ট) পরিচালনা কোড (চার অঙ্ক বিশিষ্ট)- অর্থনৈতিক কোডে (২০৩১) জমা করতে হবে।
এ পরিপত্রের মাধ্যমে ২০২৩ সালের ১৭ আগস্টে এ বিষয়ে জারি করা পরিপত্র বাতিল করা হয়েছে। গত বছরের ১৭ আগস্ট জারি করা পরিপত্রে নবম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর সঙ্গে টেলিকম বাংলাদেশের সার্ভিস চার্জ ১০ শতাংশ বা ৬০ টাকা এবং ৬০ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ বা ৯ টাকা ভ্যাট রাখা হয়।
একইভাবে দশম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর সঙ্গে ৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ৭ টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট রাখা হয়। ১১ ও ১২তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ধরা হয় ৩০০ টাকা। এর সঙ্গে ৩০ টাকা সার্ভিস চার্জ ও ৪ টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট রাখা হয়।
১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয় ২০০ টাকা। এর সঙ্গে সার্ভিস চার্জ ২০ টাকা এবং ভ্যাট ৩ টাকা রাখা হয়। আর ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডের চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর সঙ্গে ১০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ১ টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট রাখা হয়।
এমএএস/এমএএইচ/